তখনকার বাগদাদ বনাম এখন।
৭৬২ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর মনসুর মদিনাতুস- সালাম (শান্তির শহর) হিসাবে এর ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
এই নামটিই পরবর্তীতে শহরের সমস্ত সরকারী রেফারেন্স, মুদ্রার উপর শিলালিপি থেকে শুরু করে রাজকীয় কারখানায় বোনা বস্ত্রেও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এসবের বাইরে বাগদাদ নামটিই অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
বাগদাদ মধ্যযুগের সর্ববৃহত্তম নগরীতে পরিণত হয়। শহরটি অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে তৎকালীন সময়ের রোলমডেল হিসেবে পরিগণিত হতো। শহরটির বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়াদি পরিচালনার জন্য শহরের পাবলিক লাইব্রেরিগুলো থেকে উপকৃত হওয়া একটি বিশাল শিক্ষিত সমাজ ছিলো। এবং এই শহরটি তখনকার জ্ঞানপিপাসুদের জন্য একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
একাদশ শতাব্দীর বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিক খতিব আল-বাগদাদী বাগদাদের চারপাশের বিস্ময়কর অনুভূতিকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন: “সমগ্র বিশ্বে এমন কোন শহর নেই যার আয়তন, জাঁকজমকতা এবং জ্ঞান পিপাসু ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের দিক থেকে বাগদাদের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। এর অসংখ্য রাস্তা, বাজার, গলি, মসজিদ, হাম্মামখানা এবং দোকান বিবেচনায়ও - এই শহরটি অন্য সব শহর থেকে অতুলনীয় ছিলো।"
সেই সময়ে, বাগদাদে হাউস অফ উইজডমসহ ( বায়তুল হিকমা) বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এবং তা 'শিক্ষার কেন্দ্র' হিসাবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিল। শহরটি একটি বহুজাতিক এবং বহুধর্মীয় শহরে রুপ নিয়েছিল।
নতুন রাজধানীর কেন্দ্রস্থল ছিল রাউন্ড সিটি যার মধ্যে প্রাসাদ, প্রধান মসজিদ এবং কিছু প্রশাসনিক ভবন এবং সৈন্যদের প্রশাসনিক কেন্দ্র ও কোয়ার্টার ছিল। প্রাসাদ এবং মসজিদ কেন্দ্রীয় প্রাঙ্গণের মাঝখানে একসাথে ছিল।
সূত্র:
বিশাল কেনেডি
তায়েব আল-হিবরি
আমিরা বেনিসন