চারগাছ গ্রাম। এটি মূলগ্রাম ইউনিয়নের গ্রাম সমূহের মধ্যে একটি অতি পরিচিত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ গ্রাম। এখানে রয়েছে একটি অনার্স কলেজ, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। একটি পোস্ট অফিস, ১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,একটি সরকারি কমিটি ক্লিনিক এবং বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও বেসরকারি হাসপাতাল। যা গ্রামটিকে সমৃদ্ধ করেছে। মজার কথা হচ্ছে এই গ্রামে যখন বলার মত কোনো প্রতিষ্ঠান ছিলনা তখনও একটি সমৃদ্ধ বাজার ছিল।এখানে নিয়ম করে সোমবার ও শুক্রবারে বসতো হাট। সকালে বসতো মাছ ও দুধের বাজার। ভৌগোলিক কারণে আশপাশের ১০/১২ টি গ্রামের লোকজন এ বাজার থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতো। বাঁশ বেতের তৈরি গৃহস্থালির উপকরণ ও মাটির তৈরি নানাবিধ তৈজসপত্রের জন্য বাজারটি একসময় বিখ্যাত ছিলো। চারগাছ বাজার সৃষ্টির ইতিহাস জানতে হলে আগে চারগাছ গ্রামের নামকরণের ইতিহাস জানা জরুরি। কবি ও গবেষক ড. এস এম শাহনূর প্রণীত কসবা উপজেলার ইতিবৃত্ত থেকে জানা যায়, এ এলাকাটি মূলত তৎকালীন নূরনগর পরগনাভুক্ত একটি প্রাচীন জনপদ। ঐতিহাসিক পোড়ারাজার জাঙ্গাল ও অদের খাল ঘেষা গ্রামের নাম চারগাছ। আজকের শিক্ষা-সংস্কৃতির আলোয় আলোকিত চারগাছ এলাকায় যখন কোন জনবসতি ছিলনা, যখন কোন বসতবাড়ি ছিলনা। তখনও এখানে কাছাকাছি বড় আকৃতির চারটি বট গাছ ছিল। বটবৃক্ষের ছায়ায় বসে ক্লান্ত পথচারী আর আশপাশের নিচু জমিতে কৃষিকাজ করে খেটে খাওয়া মানুষেরা বিশ্রাম নিতো। দূর থেকে গাছ চারটিকে খুবই কাছাকাছি মনে হতো। দূরের গাঁয়ের লোকজন কিংবা পথচারী চারটি গাছকে নিশানা করে পৌঁছে যেত তাদের গন্তব্যস্থলে। সময়ের প্রয়োজনে এখানে মানব বসতি গড়ে উঠে। ধীরেধীরে হয়ে উঠে ঘনবসতি। আর এভাবেই চারটি বট গাছ থেকে জনবসতি বা গ্রামের নাম হয় চারগাছ।
প্রবীণদের অনেকেই বলেছেন, তাদের জীবদ্দশায়ও বটগাছগুলোর অস্তিত্ব ছিল। বটগাছ চারটির মধ্যে বর্তমান চারগাছ বাজারে ছিল দুটি, তৃতীয়টি ছিল হাইস্কুলের উত্তর পার্শ্বে এবং চতুর্থটি ছিল ঈদগাহের পার্শ্বে।
বর্তমানে চারগাছ বাজার দেশী বিদেশী সকল প্রকার পণ্য সম্ভারে সজ্জিত এক বাজার। বেড়েছে বাজারের আয়তন, এখনও আগের মত সপ্তাহে দুই দিন বসে হাট।
প্রতিদিনই হাজার হাজার ক্রেতা বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত থাকে চারগাছ বাজার।