পোস্টস

বাংলা সাহিত্য

শুভ্র শ্বেত-ফ্রক"

৩ আগস্ট ২০২৪

মোঃ জসিম উদ্দীন গাজী

"শুভ্র শ্বেত-ফ্রক"
 

এটাকে "ফ্রক" বলে জানতামনা
তুমি সেদিনই কেবল বললে

   শ্বেত শুল্ক তুমি নিজেও-

ফ্রকের শ্বেতকায় তোমার নিজের 
শুভ্রাঙ্গায়,-মনে হয়ে ছিলো একটা 
পরি দাড়িয়ে আছে আমার পেছনটায়,
ঠিক দশ হাত দুরে, আমার চোখ পরতেই
একটা আলত হাসি দিয়ে, একটা চিরকুট
ধরিয়ে দিয়ে বললে,-আমি এখন যাই,
            কাল দেখা হবে...
  একটা কৌতুহলে আমার চোখ নড়ছিলো

তখন সন্ধ্যা আজানের অপেক্ষা ছিলো কেবল-
                    তুমি চলে গেলে,

আমি দাড়িয়েই ছিলাম দক্ষিনা দিগন্তপ্রসারী হয়ে,
আমার হাত-পায়ের তালু গেমে ভিজে গিয়েছিল 
 একটা কম্পন,- ঝিম হয়ে গেলো সমস্ত দেহ

দখিনের অদ্ভুত একটা বাতাস বৈছিল তখন
                আজান হয়ে গেলো
চারপাশের সব কিছু একটা ধূসর-ছাই রঙে
                  ঢাকতে লাগলো
       তারপর বেশ অন্ধকার নামলোই

তখন জৈষ্ঠ শেষ হয়ে আষাঢ় কেবল শুরু
          কদম-বৃষ্টির মাস-আষাঢ়
যখনতখন বৃষ্টি-কদম ফুলের বেশ ছড়াছড়ি-
                    এখানে সেখানে  
পাজামার পকেটে চিরকুট মুড়িয়ে বেশ যত্নেই রাখা
ঘরে ফিরে হারিকেন এর আলোতে মেলে ধরলাম
                    তোমার দেয়া চিরকুট 
একটুখানি আর্জি করলে-এই নব গঠিত সম্পর্ক-বন্ধন সংস্রব  সুত্রপাত যেন কোন দিন বিলিন না হয়ে যায়
আর গোপনীয়তার বেখ্যায় যেন অমীমাংসিত হয়েই   
          থাকে প্রকত্রীকরণ আমাদের মধ্যে

তারপর বিশ বছর পর এখন সেই তুমি আমি
     এক অসুখের-মহী-ধরিত্রী-মেদেনী
 একরকম ভাবেই বেঁচে থাকা আমাদের-পীড়া
    আরোগ্য হীন প্রাণ-অনিদ্রায়-নিশিজাপন
গভীর সাগরের অতলো দুরধিগম্য হয়ে থাকো
     তুমি এখনো, আমি তেমন প্রগাঢ়গহন

আমাদের মনোনয়ন-রুচি-নির্বাচন একই ভাবে থেকে
       গেছে,-আমরা ভালোবাসি-একটা ফুল-
       পাখীর একটু কলতান-সবুজ সমারোহ 
       আমরা ভালোবাসি- রবি ঠাকুরের গান
       ক্ষেপা বিদ্রোহী নজরুলের -"বল বীর-
             বল উন্নত মম শির" 
   সাইন্স ফিকশন-ভ্রমন গল্প বই-ইত্যাদি 
       আমাদের অন্ত মিলে রয়ে গেছে
             নিরবতার অসিম সিমানা

          বিশ বছর আগে,- তখন জানতে -
           "আমি কবিতা লিখি দু'একটা" 
তুমি চিরকুটে তা লিখলে-তোমাকে যেন আমার লেখা   কিছু কবিতা দেই,তখন তো আর এই প্রযুক্তির যুগ   ছিলোনা, তাই কাগজে লিখে দিতে বলছিলে
সে যুগে আর, তখন তোমাকে কবিতা লিখে দেয়া হয়নি আমার,আমি জানি-আমি যা লিখি,- এ কি 
  আসলে কোনো কবিতা?তাই দেইনি 
আমি দুঃখীতও বলতে পারিনি,-সে অন্য
                আরেক রকম গল্প

সাদা ফ্রকে সেই তুমি একটা ভাষ্কর্য নিপুণ কারুকার্য 
                দেবি-ঔশ্বরিক হয়ে দাড়ালে
             আজ অব্দি তুমি তেমইনি আছ
           তেমনি-নয়নে খেলে যাও অবিরত-
          তেমনি দোলে যায় বাতাসে ফ্রকের
                 কুঁচি দেয়া কার্নিশ গুলো
          কি মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেলে সে কালে
 কি রকম এক প্রজ্জ্বলিত শ্রী-শোভা-লাবণ্যে 
আলো   ছড়ালে,নিয়নের আলোর মত জ্বলছেই
                বুকের জমিনে আমার

তবুও আমরা এক রকম ভাবেই বেঁচে থাকি-
কোন বৈষম্য চাইনা আমরা-আমরা মানবতার 
গান গাই, আমাদের বুকে বাজে বিবর্তিত সুর

আমাদের ভালো লাগে নদী-"নদী" কেবল পার্থক্য
         করে গেছে-তোমাকে প্রশান্তি দেয়
             আর আমাকে বিষাদ দেয়
           এটা তো আমাদের দোষ নয় 
        তটিনী-সরিৎ আমাদের হয়তো 
                 এভাবেই বুঝেছে....

এছাড়া আমাদের আর কোন বৈষম্য নেই-
                কোথাও নেই
তুমি আকাশের নীল ভালোবাসো-রংধনু-আমিও তাই
          বৃষ্টি আমার বেশ প্রিয়- তোমার তাই
 এভাবে কেটে গেছে বিশ বছর কাশফুল রাংঙে
          তোমার ফ্রক স্মৃতি স্মারক মুদ্রা হয়ে