"শুভ্র শ্বেত-ফ্রক"
এটাকে "ফ্রক" বলে জানতামনা
তুমি সেদিনই কেবল বললে
শ্বেত শুল্ক তুমি নিজেও-
ফ্রকের শ্বেতকায় তোমার নিজের
শুভ্রাঙ্গায়,-মনে হয়ে ছিলো একটা
পরি দাড়িয়ে আছে আমার পেছনটায়,
ঠিক দশ হাত দুরে, আমার চোখ পরতেই
একটা আলত হাসি দিয়ে, একটা চিরকুট
ধরিয়ে দিয়ে বললে,-আমি এখন যাই,
কাল দেখা হবে...
একটা কৌতুহলে আমার চোখ নড়ছিলো
তখন সন্ধ্যা আজানের অপেক্ষা ছিলো কেবল-
তুমি চলে গেলে,
আমি দাড়িয়েই ছিলাম দক্ষিনা দিগন্তপ্রসারী হয়ে,
আমার হাত-পায়ের তালু গেমে ভিজে গিয়েছিল
একটা কম্পন,- ঝিম হয়ে গেলো সমস্ত দেহ
দখিনের অদ্ভুত একটা বাতাস বৈছিল তখন
আজান হয়ে গেলো
চারপাশের সব কিছু একটা ধূসর-ছাই রঙে
ঢাকতে লাগলো
তারপর বেশ অন্ধকার নামলোই
তখন জৈষ্ঠ শেষ হয়ে আষাঢ় কেবল শুরু
কদম-বৃষ্টির মাস-আষাঢ়
যখনতখন বৃষ্টি-কদম ফুলের বেশ ছড়াছড়ি-
এখানে সেখানে
পাজামার পকেটে চিরকুট মুড়িয়ে বেশ যত্নেই রাখা
ঘরে ফিরে হারিকেন এর আলোতে মেলে ধরলাম
তোমার দেয়া চিরকুট
একটুখানি আর্জি করলে-এই নব গঠিত সম্পর্ক-বন্ধন সংস্রব সুত্রপাত যেন কোন দিন বিলিন না হয়ে যায়
আর গোপনীয়তার বেখ্যায় যেন অমীমাংসিত হয়েই
থাকে প্রকত্রীকরণ আমাদের মধ্যে
তারপর বিশ বছর পর এখন সেই তুমি আমি
এক অসুখের-মহী-ধরিত্রী-মেদেনী
একরকম ভাবেই বেঁচে থাকা আমাদের-পীড়া
আরোগ্য হীন প্রাণ-অনিদ্রায়-নিশিজাপন
গভীর সাগরের অতলো দুরধিগম্য হয়ে থাকো
তুমি এখনো, আমি তেমন প্রগাঢ়গহন
আমাদের মনোনয়ন-রুচি-নির্বাচন একই ভাবে থেকে
গেছে,-আমরা ভালোবাসি-একটা ফুল-
পাখীর একটু কলতান-সবুজ সমারোহ
আমরা ভালোবাসি- রবি ঠাকুরের গান
ক্ষেপা বিদ্রোহী নজরুলের -"বল বীর-
বল উন্নত মম শির"
সাইন্স ফিকশন-ভ্রমন গল্প বই-ইত্যাদি
আমাদের অন্ত মিলে রয়ে গেছে
নিরবতার অসিম সিমানা
বিশ বছর আগে,- তখন জানতে -
"আমি কবিতা লিখি দু'একটা"
তুমি চিরকুটে তা লিখলে-তোমাকে যেন আমার লেখা কিছু কবিতা দেই,তখন তো আর এই প্রযুক্তির যুগ ছিলোনা, তাই কাগজে লিখে দিতে বলছিলে
সে যুগে আর, তখন তোমাকে কবিতা লিখে দেয়া হয়নি আমার,আমি জানি-আমি যা লিখি,- এ কি
আসলে কোনো কবিতা?তাই দেইনি
আমি দুঃখীতও বলতে পারিনি,-সে অন্য
আরেক রকম গল্প
সাদা ফ্রকে সেই তুমি একটা ভাষ্কর্য নিপুণ কারুকার্য
দেবি-ঔশ্বরিক হয়ে দাড়ালে
আজ অব্দি তুমি তেমইনি আছ
তেমনি-নয়নে খেলে যাও অবিরত-
তেমনি দোলে যায় বাতাসে ফ্রকের
কুঁচি দেয়া কার্নিশ গুলো
কি মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেলে সে কালে
কি রকম এক প্রজ্জ্বলিত শ্রী-শোভা-লাবণ্যে
আলো ছড়ালে,নিয়নের আলোর মত জ্বলছেই
বুকের জমিনে আমার
তবুও আমরা এক রকম ভাবেই বেঁচে থাকি-
কোন বৈষম্য চাইনা আমরা-আমরা মানবতার
গান গাই, আমাদের বুকে বাজে বিবর্তিত সুর
আমাদের ভালো লাগে নদী-"নদী" কেবল পার্থক্য
করে গেছে-তোমাকে প্রশান্তি দেয়
আর আমাকে বিষাদ দেয়
এটা তো আমাদের দোষ নয়
তটিনী-সরিৎ আমাদের হয়তো
এভাবেই বুঝেছে....
এছাড়া আমাদের আর কোন বৈষম্য নেই-
কোথাও নেই
তুমি আকাশের নীল ভালোবাসো-রংধনু-আমিও তাই
বৃষ্টি আমার বেশ প্রিয়- তোমার তাই
এভাবে কেটে গেছে বিশ বছর কাশফুল রাংঙে
তোমার ফ্রক স্মৃতি স্মারক মুদ্রা হয়ে