পোস্টস

সমালোচনা

সরকারের ভুলে এত রক্ত ও লাশের মিছিল

৫ আগস্ট ২০২৪

ওসমান এহতেসাম

গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ দেখা গেছে, তা আমাদের মন ও মননে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, সাধারণ মানুষেরও রক্তে ভিজেছে রাজপথ। রোববারেও অন্তত ১০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একটি স্বাধীন দেশে এক দিনে এত প্রাণহানি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ক্ষমতাসীনরা রক্তের স্রোতের ওপর আর কত দিন টিকে থাকবেন? তাঁদের দোষারোপের খেলায় আর কত দিন চলবে? এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য সরকারের ভুলকেই দায়ী করতে হবে। সরকার বারবার ভুল করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে তাদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেওয়া হলো। এখন বলা হচ্ছে, দাবি মেনে নিয়েছি, গণভবন খুলে দিয়েছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যাঁদের হারিয়েছে, তাঁদের ভাই-বোন, বন্ধুরা কিভাবে মানবে এই কথাগুলো? সরকারের বিভক্ত ও শাসনের (ডিভাইড অ্যান্ড রুল) নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। কেউ রাজাকার, কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার, কেউ ভারতপন্থী, কেউ পাকিস্তানপন্থী—এমন নানা বিভক্তির মধ্যে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা পিষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি হয়েছে। গণরুম, হলে কে থাকবে, কে থাকবে না—এমন নানা সিদ্ধান্তের ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যে কোনো বড় আন্দোলনেই রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততা থাকে। বর্তমান আন্দোলনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে তাদের দমন করার নীতি গ্রহণ করায় পরিস্থিতি এই পর্যায়ে এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের রোববার আবার রাস্তায় নামানোর প্রয়োজন ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই মনে হয়। সরকারের উচিত রাষ্ট্রপতির সঙ্গে, নাগরিক সমাজের সঙ্গে কথা বলা। আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে। কীভাবে এই পরিস্থিতির রাজনৈতিক উত্তরণ হবে, সেটা গভীরভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। সরকারের ভুলের কারণে এত রক্ত ও লাশের মিছিল। আমরা আশা করি, সরকার দ্রুততার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নেবে এবং জনগণের জানমাল রক্ষা করবে। দেশকে আবার শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ করে তুলবে। এই রক্তাক্ত অধ্যায় শেষ হোক, শান্তি ফিরে আসুক আমাদের প্রিয় দেশে।

লেখক: শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ইমেইল: osmangonistudent5@gmail.com