একবার বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার তৎকালীন জমিদার দেওয়ান সাহেব হাতি নিয়ে কলকাতা যাচ্ছিলেন পথে এক ইংরেজ সাহেবের কাছে একটি সুন্দর কুকুর দেখতে পান। তিনি কুকুরটি কেনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি একটি হাতির বিনিময়ে ইংরেজ সাহেবের কাছ থেকে ওই মাদি-স্ত্রী জাতের কুকুরটিকে নিয়ে আসেন। দেওয়ান একদিন হাতির পিঠে চড়ে বনে শিকারে বের হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে মাদি কুকুরটি বনে হারিয়ে যায়। বেশ কিছুদিন পর গর্ভবতী হয়ে কুকুরটি ফিরে আসে। কয়দিন পরই দেওয়ানের বাড়িতে কুকুরটি কয়েকটি বাচ্চা দেয়। দেখা গেলোও, এসব বাচ্চা সাধারণ কুকুরের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাচ্চাগুলোর সঙ্গে বাঘের বেশ মিল আছে। ধারণা করা হয়, নেকড়ের সঙ্গে দেওয়ানের কুকুরের মিলন থেকে ওই বাচ্চাগুলোর জন্ম হয়েছে। ক্রস ব্রিডিং এ জাতের কুকুরের নাম গ্রে- হাউন্ড কুকুর।
শুধুই শারীরিক গঠন নয়। আচরণের দিক থেকেও সম্পূর্ণ আলাদা। হাঁটা চলা বা দৌড় দেওয়ার ভঙ্গিতেও আছে ভিন্নতা। ঘুম ও অভ্যাসের মধ্যেও আছে অনেক ভিন্নতা। শুধু ঘ্রাণ শক্তিই নয়, দৃষ্টি ও শ্রবণ শক্তির মাধ্যমে শিকার ধরা এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গ্রে হাউন্ড কুকুর জায়গা পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ডগ স্কোয়াডেও। প্রভু ভক্ত শান্ত কুকুরটি শত্রুর জন্য খুবই হিংস্র ও ভয়ংকর। দিনে-রাতে মালিকের বাড়ি নিরাপত্তা প্রদানে এই প্রজাতি কুকুরের জুড়ি মেলা ভার। চোর, ডাকাত এ কুকুরের নাম শুনলে আঁতকে ওঠে। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় সত্তর কিলোমিটার গতি সম্পন্ন কুকুরটির খাদ্যতালিকায় আছে দুধ-ভাত ও মাংস। এদের জীবনকাল প্রায় এক যুগ হয়ে থাকে। যদিও এরা আজ বিলুপ্তির পথে।