পোস্টস

সমালোচনা

মুরলিকান্ত পেটকার: সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছানো এক ক্রীড়া কিংবদন্তির কাহিনী

১১ আগস্ট ২০২৪

খেরোর খাতা

Chandu Champion

'চান্দু চ্যাম্পিয়ন' একটি হিন্দি ভাষার স্পোর্টস ড্রামা যা মুরলিকান্ত পেটকারের জীবনের অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী নিয়ে নির্মিত। এটি ১৪ জুন ২০২৪ তারিখে সারা বিশ্বে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে।। কবীর খান পরিচালিত এই সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন কার্তিক আরিয়ান।

 

 'চান্দু চ্যাম্পিয়ন'-এ কার্তিক আরিয়ানের অভিনয় অনেক প্রশংসা পেয়েছে। মুরলিকান্ত পেটকারের চরিত্রে তার পারফরম্যান্স অনেকের মতে, তার ক্যারিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স । সিনেমায় পেটকারের সংগ্রাম এবং জয়ের কাহিনী দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে তার অভিনয়ে আন্তরিকতা আর দৃঢ়তা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

 

'চান্দু চ্যাম্পিয়ন' সিনেমাটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করেছে। সিনেমার অনুপ্রেরণামূলক গল্প এবং শক্তিশালী অভিনয়ের প্রশংসা করা হলেও, কিছু সমালোচক মনে করছেন সিনেমার আবেগের গভীরতা কিছুটা কম রয়েছে। স্পোর্টস আন্ডারডগ ফর্মুলা এবং মানসিক দৃঢ়তার বিষয়গুলো প্রশংসিত হলেও, সিনেমাতে তার চরিত্রের যাত্রার তুলনায় ভিক্টরির দিকে বেশি ফোকাস দেয়া হয়েছে। সিনেমার প্রযুক্তির ব্যাবহার এবং পরিচালনার প্রশংসা করা হয়েছে। বাস্তব জীবনের গল্পের সূক্ষ্মতা সিনেমার উপস্থাপনাকে শক্তিশালী করেছে। সিনেমাটি একজন ব্যাক্তির কঠোর পরিশ্রম এবং স্বপ্ন পূরণের সংগ্রাম ও যাত্রাকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।

 

কে এই মুরলিকান্ত পেটকার?

 

মুরলিকান্ত পেটকার একজন প্রতিভাবান ভারতীয় ক্রীড়াবিদ যিনি বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনে 'স্পোর্টস আন্ডারডগ' হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৪ সালের ১ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলার পেঠ ইসলামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলাতেই খেলাধুলার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল এবং স্কুল জীবনেই তিনি কুস্তি, অ্যাথলেটিক্স, ও হকিতে দক্ষতা অর্জন করেন।

তিনি ১৯৬৫ সালের ইন্দো-পাক যুদ্ধের সময় সিয়ালকোট সেক্টরে যুদ্ধে অংশ নেন, যেখানে তিনি গুরুতর গুলিবিদ্ধ হন। তার মেরুদণ্ডে এখনো একটি গুলি রয়েছে। আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর পেটকার সাঁতার এবং অন্যান্য খেলাধুলায় মনোনিবেশ করেন। ১৯৬৮ সালে সামার প্যারালিম্পিকে তিনি টেবিল টেনিসে অংশ নিয়ে চারটি পদক অর্জন করেন এবং ১৯৭২ সালের সামার প্যারালিম্পিকে জার্মানিতে ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতে নতুন বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেন। একই খেলায় তিনি জ্যাভলিন, প্রিসিশন জ্যাভলিন থ্রো এবং স্লালাম ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তিনটি ইভেন্টেই ফাইনালিস্ট ছিলেন।২০১৮ সালে মুরলিকান্ত পেটকার পদ্মশ্রী পুরস্কার পান, যা তার জীবনের অসাধারণ কীর্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।

 

'চান্দু চ্যাম্পিয়ন' একটি সিনেমা যা অনুপ্রেরণামূলক গল্প, শক্তিশালী অভিনয় এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য ভালো প্রশংসা পেয়েছে। সিনেমাতে আবেগের দিকগুলো আরো গভীরভাবে তুলে ধরা উচিত বলে মনে হলেও, কার্তিক আরিয়ানের আন্তরিকতা এবং উদ্যম নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।