এক বিকেলে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে ভাবছিলাম, পৃথিবীর অধিকাংশ এপিকগুলো কেন যুদ্ধ-কেন্দ্রিক? এই যেমন ধরেন মহাভারত, রামায়ণ, ইলিয়াড ইত্যাদি। মহাভারতের কেন্দ্রে রয়েছে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ; রামায়নের কেন্দ্রে রয়েছে রাম বনাম রাবণের যুদ্ধ; ইলিয়াডের কাহিনীকে ঘিরে আছে ট্রোজান ওয়ার। আবার প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের এক বই, সান জ্যুর লেখা “দ্যা আর্ট অব ওয়ার”, যা কিনা পুরদস্তুর মিলিটারি আর্টের উপর লেখা একটি বই, কেন এতো জনপ্রিয় আজকের সময়ে?
একটি সাহিত্য তখনই ক্লাসিক হয়ে উঠে যখন সেটা সময়ের বিচারে উতরে যায়। যেমন, এই মহাভারত, রামায়ণ, ইলিয়াড কিংবা আর্ট অব ওয়ার কতো হাজার বছর আগের লেখা। এর মধ্যে পার হয়ে গেছে কতোটা সময়। সমাজ পাল্টেছে, দেশ পাল্টেছে, কতো ধরনের মহামারি এসেছে-গিয়েছে, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি কতভাবে পাল্টেছে, বিজ্ঞান কতটা উন্নতি করেছে, কতো নতুন তত্ত্ব-তথ্য-ধর্ম বাজার গরম করেছে— অথচ এই এপিকগুলো কিন্তু মানুষের মাঝে রয়ে গেছে। হারিয়ে যায়নি। অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে মানুষ এই সাহিত্যগুলোর সাথে কানেক্ট করেতে পেরেছে।
কেন কানেক্ট করতে পেরেছে? এর উত্তর নানানভাবে দেয়া যায়। কিন্তু আমি এতো দিকে যাবো না। শুধু এই প্রশ্নটি করবো, জীবন শব্দের অর্থ কি যুদ্ধ নয়?
এই যেমন “ব্রেকিং ব্যাড” এর কথাই ধরুন। ওয়াল্টার হোয়াইট স্কুলের একজন সামান্য কেমিস্ট্রি শিক্ষক। নানান রকমের অর্থনৈতিক ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এক মাত্র ছেলে সেরেব্রাল পালসিতে আক্রান্ত, আরেক সন্তান মায়ের গর্ভে ভূমিষ্ঠ হবার অপেক্ষায়। বউ সাধারণ গৃহিণী। এগুলোর মধ্যে ওয়াল্টারের ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সারের চিকিৎসা করার পয়সা তাঁর নেই। ছেলে-মেয়ে ও বউয়ের জন্য রেখে যাবার মতো টাকাপয়সাও নেই। এখন কিছু একটা করতেই হয়। ওয়াল্টার হোয়াইট সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি ক্রিসটাল মেথ নামক ড্রাগ উৎপাদন শুরু করবেন। তিনি কেমিস্ট্রির মানুষ, তাঁর জন্য ব্যাপারটা সহজ। শুরু হয়ে যায় কাহিনী। এক অসাধারণ, অসামান্য কাহিনী। বলা হয়ে থাকে ব্রেকিং ব্যাড সর্বকালের সব চাইতে জনপ্রিয় টিভি শো। পাঁচ সিজন ও বাষট্টি পর্বের এই টিভি শো দেখলে বুঝা যায় যুদ্ধ কি জিনিস। বুঝা যায়, জীবনের সমার্থক শব্দ আসলেই যে যুদ্ধ।
হ্যাঁ, আদতে আমাদের জীবন যুদ্ধেরই সমার্থক। নানান রকমের যুদ্ধ দিয়ে আমরা কমবেশি লড়াই করতে করতে যাই। শুধু আমরা কেন, আমাদের আগে হাজার বছর ধরে যে সকল মানুষ বেঁচে ছিল, তারা সকলেই এক অর্থে যুদ্ধ করেই গিয়েছে। ফলে মহাভারত, রামায়ণ কিংবা অন্যান্য এপিকগুলোর সাথে মানুষ কানেক্ট করতে পেরেছে এই যুদ্ধের সুত্র ধরেই।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের একদম শুরুর কথা ধরা যাক। ময়দানের এক পাশে পাণ্ডবেরা, অপরপাশে কৌরবেরা। পঞ্চপাণ্ডবের তৃতীয়জন, অব্যর্থ ধনুর্বিদ অর্জুন রথে দাঁড়িয়ে তাঁর তীর-ধনুক নিয়ে প্রস্তুত। নিজেকে সে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে যাবে, তখন দেখতে পায় অপরপাশে যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের সকলেই হয় তাঁর আত্মীয় কিংবা বন্ধু। সে দেখতে পায় তাঁর গুরু দ্রোণাচার্য কৌরবদের মিলিটারি কমান্ডার হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যার কারণে সে আজ এক অব্যর্থ ধনুর্বিদ। অর্জুনের মন নরম হয়ে পড়ে। সে চরম এক ডিলেমায় পড়ে যায়। তাঁর মনে হয়, এইটা আবার কিরকম যুদ্ধ? নিজের রক্তের মানুষের সাথে, নিজের কাছের মানুষের সাথে আবার লড়াই করা যায় কেমন করে? অর্জুনের এই সংশয়মাখা মুখের দিকে চাইলেন তাঁর রথচালক। রথচালকের নাম কৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ। ঈশ্বরের অবতার, স্বয়ং পরমাত্মা। শ্রীকৃষ্ণ তখন অর্জুনকে একজন ক্ষত্রিয় যোদ্ধার ধর্ম স্মরণ করিয়ে দেন। সেই সাথে বিভিন্ন রকমের যোগশাস্ত্র এবং বৈদান্তিক শাস্ত্র ব্যাখ্যা করেন এবং অর্জুনকে যুদ্ধে অংশগ্রহন করতে উৎসাহিত করেন। অবশেষে অর্জুন যুদ্ধের ময়দানে এগিয়ে চলে। শ্রীকৃষ্ণের সাথে অর্জুনের এই কথোপকথন আমরা আজ “শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা” হিসেবে চিনি।
এখন এই কাহিনীর সাথে যুগ যুগ ধরে মানুষ কানেক্টেড ফিল করেছে। আমাদের জীবন আসলে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ছাড়া আলাদা কিছু নয়। আমরাও আমাদের লড়াই করার সময় ডিলেমায় পড়ি, সংশয়গ্রস্ত হই। তখন শ্রীকৃষ্ণ আমাদের জীবনে আসে। আমাদের উৎসাহ দেয়, আমাদের ধর্ম আমাদের মনে করিয়ে দেয়। ফলে সময়ের স্রোতে কাহিনীটি হারিয়ে যায় না, টিকে যায়। অনেকে অনেকভাবে কাহিনীটি নেয়, নিজের মতো জীবনের সাথে মিলিয়ে নেয়, নিজের মতো ইন্টারপ্রেট করে।
যেমন আমার কাছে লাগে, শ্রীকৃষ্ণ তো ঈশ্বরের অবতার, পরমাত্মা। মথুরায় থাকাকালীন তো তিনি কম অলৌকিক কাণ্ড দেখাননি। তিনি তো চাইলেই এক নিমিষেই মহাভারতের এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি করে দিতে পারতেন। তিনি তাহলে করলেন না কেন? কেন তিনি নিজে লড়াই করলেন না? কারণ ঈশ্বর কখনোই মানুষের হয়ে লড়াই করে না, লড়াইয়ে অংশ নেয় না। যার যার লড়াই তাঁর তাঁর করে নিতে হয়। ঈশ্বর শুধু আমাদের পথ দেখাবেন, আমাদের মোটিভেট করবেন, আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে তো আক্ষরিক অর্থেই স্বয়ং ভগবান অর্জুনের মতো মানুষের রথচালক হয়েছেন। তাঁকে রথে করে যুদ্ধে পথ দেখিয়েছেন। সূরা ফাতিহায় যেমন আছে, “আমাদের সরল-সহজ পথ দেখাও। সে সমস্ত লোকের পথ যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছো। তাদের পথে নয় যাদের প্রতি তোমার শাস্তি নেমে এসেছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।” দেখেন কুরআনেও কিন্তু আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের বলতে বলছেন যেন বান্দারা আল্লাহ্র কাছে সহজ-সরল পথ দেখিয়ে দিতে বলে। পথে কিন্তু বান্দাদেরই চলতে হবে।
“দ্যা আর্ট অব ওয়ার” এর কথা ইতোমধ্যে তুলেছি। আড়াই হাজার বছর আগে পুরোপুরি মিলিটারি আর্টের উপর লেখা একটি বই কেমন করে এই জমানায় এসেও প্রাসঙ্গিক হয়? হয় একটি মাত্র কারণে। কারণ এই জমানায় এসে আমরা ওই অস্ত্র-শস্ত্রের যুদ্ধ না করলেও নিজেদের পার্সোনাল যুদ্ধে লিপ্ত। বইয়ের থেকে একটি মাত্র উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন ব্যাপারটা। সান জ্যু লিখছেন, যে নিজেকে চিনেছে এবং শত্রুকে চিনেছে, সব যুদ্ধে সে জয়ী হবে। যে নিজেকে চিনেছে কিন্তু শত্রুকে চিনে নাই, সে প্রতিটা জয়ের জন্য একবার পরাজিত হবে। আর যে নিজেকে কিংবা শত্রুকে, কাউকেই চিনে নাই, সে সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে। মজার কথা হলো এই কথাটি মাশরুফ ভাই তাঁর “মাশরুফ’স ওয়েবিনার” নামক ফেসবুক পেজের কভার ফটোতে দিয়ে রেখেছিল। লেখাটির হেডলাইন— বিসিএস প্রস্তুতিতে মহামতি সান জু। ফলত দেখতে পাচ্ছি, কীভাবে এতো আগের এই বই এই আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক।
এই সুত্র ধরে একটি ইন্টারেস্টিং আলাপে যাবো। আলাপটি জেমস জয়েসের একটি উপন্যাসকে নিয়ে। উপন্যাসটির নাম “ইউলেসিস”, মানব সভ্যতার সেরা উপন্যাসের একটি। যদিও কতজন আমার মতো উপন্যাসটি বার বার পড়তে গয়ে হোঁচট খেয়েছেন এবং শেষ না করেই রেখে দিয়েছেন, সেটা বড় এক প্রশ্ন। যাইহোক, জেমস জয়েস তাঁর “ইউলেসিস” উপন্যাসে মূল চরিত্র লিওপল্ড ব্লুমকে ইউলেসিসের সাথে তুলনা করছেন। ইউলেসিস হলো হোমারের “অডিসি” এর মূল নায়ক। বলা হয়ে থাকে জেমস জয়েসের “ইউলেসিস” হলো হোমারের “অডিসি” এর মডার্ন ভার্শন। “অডিসি” এর ইউলেসিস একজন হিরো, একজন যোদ্ধা। অথচ উপন্যাসে লিওপল্ড ব্লুমকে আমরা দেখবো বোকাসোকা আর দশজন সাধারণ মানুষ হিসেবে। তাঁর সকল কর্মকাণ্ডও একেবারে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের। কোনো এক্সট্রিম স্টাগলের কথা নেই। লিওপল্ড ব্লুম আর দশজন মানুষের মতো খায়দায়, রাস্তায় হেঁটে বেড়ায়, মেয়েদের দিকে তাকায়, ছোট একটা চাকরী করে, চাকরী হারালে চাকরী খুঁজে বেড়ায়, বউয়ের পরকিয়ায় কষ্ট পায়, নিজের মেয়ে নিয়ে চিন্তিত হয়। খুব যে হিরোয়িক কিছু এমন না কিন্তু। তাহলে কেন জেমস জয়েস উপন্যাসের কেন্দ্রিয় চরিত্রকে একজন মহান যোদ্ধার সাথে তুলনা করেছেন? কারণ জয়েস বলতে চান, আমাদের প্রতিদিনের এই অতি সাধারণ জীবন কিন্তু যুদ্ধের চেয়ে কম কিছু নয়। আর সেই যুদ্ধের যোদ্ধা কিংবা হিরো হলো লিওপল্ড ব্লুম, অর্থাৎ আমরা। জয়েস বলছেন, জীবনের এই জিনিসগুলো আদতে ছোট হলেও যদি আমরা সঠিক লেন্স দিয়ে দেখতে পারি তবে দেখবো এগুলো মোটেও ছোট নয়। আমরা, জয়েসের মতে, একেকজন ইউলেসিস।
এতক্ষণ নানান আলাপের মধ্যে দিয়ে মানুষের জীবনের সাথে যুদ্ধের তুলনা করেছি। অনেক অপ্রাপ্তি থেকে সেই যুদ্ধের সূচনা হয়, টিকে থাকার জন্য, বেঁচে থাকার জন্য। এখন এমন একজন মানুষের কথা ধরেন যার কোনো অপ্রাপ্তি নেই। জীবন সে যেরকম চেয়েছিল সেরকমই পেয়েছে। টিকে থাকার ঝামেলা নেই, বেঁচে থাকার লড়াই নেই। এমন মানুষ কি আসলেও আছে? আমার অতি প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর “আট বছর আগের একদিন” কবিতায় এমনকি একজন মানুষকে হাজির করেন। সেই লোকটির সব কিছুই ছিল, কোনো যুদ্ধের কারবার নেই। কিন্তু তবুও লোকটি আত্মহত্যা করে।
“বধু শুয়ে ছিল পাশে—শিশুটিও ছিল;
প্রেম ছিলো, আশা ছিলো—জ্যোৎস্নায়,—তবুও সে দেখলো—
কোন ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেল তাঁর?
অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল—লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায়ে এবার।”
খুবই অদ্ভুত বিষয়। যুদ্ধ না থাকার পরও তাহলে লোকটি কি এমন পরাজয়ের মুখোমুখি হয়ে আত্মহত্যা করলো? কবিতার মধ্যেই জীবনানন্দ ব্যাপারটা নিয়ে বলেন।
“জানি—তবু জানি
নারীর হৃদয়—প্রেম—শিশু—গৃহ—নয় সবখানি
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয়—
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতর
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে
ক্লান্ত—ক্লান্ত করে;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের ’পরে।”
জীবনানন্দ দাশ বলছেন, জাগতিক কিছু পাওয়া না-পাওয়া, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মাঝেও কিছু একটা আছে, একটা বোধ আছে যা আমাদের ক্ষয় করে, আমাদের ক্লান্ত করে। তিনি সেই বোধের নাম দিয়েছেন “বিপন্ন বিস্ময়”, যা একজনের অন্তর্গত রক্তের ভেতর খেলা করে। মোটা দাগে, অনেকটা গৌতম বুদ্ধের মতো জীবনানন্দ টের পেয়েছেন জীবনের মূলে রয়েছে বেদনা যা আমরা যত যুদ্ধই করি না কেন, কোনোদিনও কাটিয়ে উঠতে পারবো না। তাহলে এই যে আমরা জীবন নামক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলছি, এর কোনো শেষ নাই। এই যুদ্ধ কি মৃত্যু ছাড়া জয় করা যাবে না?
এই প্রশ্ন নানানভাবে ডিল করা যায়। জীবনানন্দ নিজেও কবিতায় একভাবে ডিল করেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে উপনিষদের আলোকে ব্যাপারটা ডিল করতে পছন্দ করি, যদিও জানি এইটাই ডিল করার এক মাত্র উপায় না।
১০৮টি উপনিষদে মানুষের জীবন নিয়ে নানান রকমের দার্শনিক আলাপ রয়েছে। এর একটি হলো সেলফ-রিয়েলাইজেশন বা আত্মউপলব্ধি। আমি মনে করি নিজেকে চিনলে জীবনের যুদ্ধকে, মানে মোদ্দা কথা জীবনকে ডিল করা সহজ হয়ে যায়। মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করে। উপনিষদ অনুযায়ী একজন মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করে দুই উপায়ে, এক হলো বিদ্যার মাধ্যমে, অপরটি হলো অবিদ্যার মাধ্যমে। এইযে বই পড়া, বাইরের জ্ঞান অর্জন করা, বাইরের দুনিয়াকে চেনা, এইসবই হলো অবিদ্যা। আর বিদ্যা হলো নিজেকে জানা, অবিদ্যায় প্রাপ্ত জ্ঞানকে নিজের উপর প্রয়োগ করা। যেমন বিদ্যার এক চমৎকার অনুষঙ্গ হতে পারে ধ্যান করা। এই ধ্যান মানে শুধু গাছের তলে চোখ বন্ধ করে বসে থাকা নয়। এই ধ্যানের অর্থ হলো কনশাসনেস, মনোযোগ। এই কনশাসনেস আবার জেন বুদ্ধিজমের মূলে রয়েছে। থিচ নাথ হানের কোনো একটা বইতে পড়েছিলাম, একটি সামান্য বিস্কুট খাওয়ার মধ্যেও সেই কনশাসনেসের প্রয়োজন। বুঝা দরকার এইযে বিস্কুট আমি খাচ্ছি, এইটা কতো উপায়ে, কতোভাবে প্রোসেসড হয়ে তারপর আমার হাতে আসছে।
আফসোসের বিষয়, এখন অবিদ্যার চর্চা হলেও বিদ্যা চর্চায় মানুষের আগ্রহ নেই বা কমে আসছে, অথবা বিদ্যা জ্ঞানী হবারই যে এক অংশ সেটাই মানুষ জানে না। ফলে সঠিক অর্থে জ্ঞানী কিংবা প্রজ্ঞাবান লোক পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। শুধু বাইরের জ্ঞান বা অবিদ্যা দিয়ে কখনোই মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না।
আর আমি মনে করি, যুদ্ধের এই ময়দানে বিদ্যা-অবিদ্যার সুষম সংযোগ না ঘটলে যুদ্ধ শুরুর আগেই আমি হেরে যাবো। আর আমার মতো আপনিও হেরে যাবেন। নিশ্চিতভাবে হেরে যাবেন।
হারতে কে-ই বা চায়, বলেন?
~
০৮/০৩/২০২৪, শুক্রবার। রাজশাহী।