পোস্টস

কবিতা

কংক্রিটের খেয়াল

৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৌকির আজাদ

ইদানীং কংক্রিট বেয়ে ওঠা সহজ

তবে, এই ওঠাটে অপেক্ষা আছে – এমনকি নামতেও!

করিডরে সময় কাটায় একা বেঞ্চ – ওখানে মাঝে মাঝে

কেউ বসেও বটে – লোকের স্বাচ্ছন্দ্য বা অস্বাচ্ছন্দ্য,

দুইই দাঁড়িয়ে থাকাতে – তবু তাই করি আমরা!

 

দেখার মত করে যে দৃশ্য রয়েছে সেটা সিঁড়ি, তবে,

শুধু একশ্রেণীর লোক দেখা যায় ওদিকে, হায়!

আমার বড় জাত!

 

এ সমাজে খেটে খাওয়া মানুষের মর্যাদা যেমন কম, তাঁদের

হাতের সময়টাও খুব বেশি না – অপেক্ষা সময় হলেও -

অপেক্ষায় সময়ের লোকসান বেশি – শরীরের অপচয় কম।

 

এখানে শোনা যায়,

করিডোর থেকে ভেসে আসা পাতাদের কথা,

ছোট্ট চড়ুই কিংবা শালিকের ডাক –

দেখা যায় কংক্রিটের এক কোনে কবুতরের বাস –

ফিরে পাই পাতাদের নির্যাস – আহারে,

টবে রাখা গাছ গুলো বোধহয় বেশি আলো পায় না!

গৃহিণী তবু যত্ন করে রেখেছেন কংক্রিটে বাগান।

 

আলো চাই, বাতাস চাই – চাই পেতে আকাশের দেখা

কংক্রিটের দেয়ালে রংটা রঙিন শুধু ভেতরতা ধাঁধা...

এক টুকরো আকাশের খোঁজে কংক্রিটের ছাদে যাওয়া

তবু পিছু ছাড়ে না শহুরে কোলাহলের হাওয়া

যেদিক তাকাই দেখি সারি সারি বাড়ি

কংক্রিট থেকে কংক্রিটে ছুটছে যত গাড়ি

স্যাটেলাইট বিজ্ঞাপনে স্বপ্ন যাবে বাড়ি...

 

কংক্রিটের ছাদের জীবন - গল্পে ভরা ...

 

ছাদে, এ ফ্ল্যাট ও ফ্ল্যাটের কাপড় জামা মিশে হয় একাকার

পাশের ফ্লাটের প্রতিবেশীর খোঁজ পাই পথে - আসা যাবার

এইতো,

আবারো অপেক্ষার প্রশংসা,

অজুহাত দেখা হবার দরকার...

 

ইদানীং ছাদে ওঠে কী সবাই?

জানে, আকাশে নীল রং দিগন্তের ছাতা ঢেকেছে কংক্রিটের আবদার আর সময় তার দাবিদার!

 

যে ওপরে ওঠা সহজে হয় সেখান থেকে নিচে আর কে চেয় রয়?

 

ভোলেনা সবাই - ওপরে উঠে নীচের খোঁজ রাখতে হয়।

কংক্রিটের ছাদ এসবের সব জানে, তবু...

 

সন্ধ্যা হলে ছাদের গেটে তালা লেগে যাবার ভয়।

উঠতি বয়সী ছেলেছোকড়াদের নাকি নানা উৎপাত হয় !

 

তবুও বিকেলের শেষে খেলার সময় থেকে থাকে...

 

এখনো তরুণ অরুণ ফুল ফোটে ছাদে

আমাদের এ যুগের কংক্রিটের বাগানে।

 

বেড়ে ওঠা গাছগুলোর পাতা ঝড়ে যায়

আবার নতুন পাতা জন্মায়

বেড়ে ওঠা অট্টালিকার মানুষ যুগে যুগে বদলায় –

গাছেরাও বয়সে বদলে যায় -

কেবল বদলায় না প্রকৃতি বদলায় শুধু তার রীতি।।

 

তাই একা এসে বসে ভেবে দেখে সে

এই মেট্রপলিটনের ক্যামেরা বন্দী স্মৃতি ।