**“নীল নরকের মন্দির”**
গ্রামটির নাম ছিল নীলপুর। এই গ্রামের সন্নিকটে ছিল এক পুরনো মন্দির, যা বহু বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে ছিল। মন্দিরটির নাম ছিল "নীল নরকের মন্দির", আর এর চারপাশে ছিল অন্ধকার, ভুতুড়ে পরিবেশ। গ্রামের লোকেরা এই মন্দিরের কথা শুনে শিরদাঁড়া দিয়ে উঠত। কাহিনী ছিল, মন্দিরটি এক ভীতিকর শাপপাশ ধারণ করে আছে, যেখানে এক সময় একজন নিষ্ঠুর পুরোহিত মানুষের আত্মা বন্দী হয়ে আছে।
একদিন, শহরের এক সাহসী যুবক নামের অভিজিৎ, যিনি ভূতের কাহিনী নিয়ে গবেষণা করতেন, মন্দিরটির অন্ধকারে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি শুনেছিলেন যে মন্দিরের ভেতরে কিছু অমূল্য পুরাকীর্তি রয়েছে। অভিজিৎ মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে এসে, জানালা দিয়ে ভিতরে একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন। ভেতরে অন্ধকার এবং ধুলোর স্তূপ। এমনকি মন্দিরের দেওয়ালে কিছু রহস্যময় চিত্রও আঁকা ছিল, যা দেখে অভিজিৎ আরও উৎসুক হয়ে উঠলেন।
মন্দিরে ঢুকতেই তিনি অনুভব করলেন একটি ঠান্ডা বাতাস। বাতাসে একটা অদ্ভুত গন্ধ ছিল, যেন কঙ্কাল আর পুরনো কাগজের মিশ্রণ। মন্দিরের ভেতর ঘুরে ঘুরে অভিজিৎ হঠাৎ করে একটি পুরনো পাথরের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে পড়লেন। মূর্তিটি ছিল একটি ভয়ংকর অশুভ দেবতার—যার চোখ দুটি ছিল যেন অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসছে।
তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন মূর্তির পেছনের দিকে একটু খোঁজ করবেন। এমন সময় হঠাৎ করে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। অভিজিৎ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। ঘরটা পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে গেল, আর তিনি অনুভব করলেন যেন কিছু একটা তার চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। এক অদৃশ্য শক্তি তাকে বেঁধে রেখেছে।
একদিকে কঙ্কালের মতো ভয়ানক হাসির আওয়াজ, অন্যদিকে সাসপেনসের মত হঠাৎ করে একটি রহস্যময় আলো ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে শুরু করল। সেই আলো এক ভয়ংকর কেশবিহীন পুরোহিতের মুখ বের করল। অভিজিৎ বুঝতে পারলেন, সেই পুরোহিতের আত্মা এই মন্দিরের মধ্যে বন্দী এবং এখন তার উপর রাগান্বিত।
পুরোহিতের আত্মা ক্রমশ অভিজিৎকে ঘিরে ধরতে শুরু করল। অভিজিৎ আতঙ্কিত হয়ে চেষ্টা করলেন বের হওয়ার। হঠাৎ করেই, এক জোরালো ঠান্ডা বাতাস তাকে মন্দিরের বাইরে ছুড়ে ফেলে দিল। অভিজিৎ চিৎকার করে উঠে মন্দির থেকে পালালেন।
গ্রামে ফিরে আসার পর অভিজিৎ জানালেন, যে মন্দিরের অন্ধকারে যে পুরোহিতের আত্মা বন্দী আছে, সে তার মুক্তি পাওয়ার জন্য শুধু তার আতঙ্কিত আত্মাকে চায়। অভিজিৎও জানালেন, সেই রাত থেকে গ্রামের লোকেরা কখনোই সেই মন্দিরে পা দেয়নি।
কিন্তু অনেকের মতে, এখনও রাত্রি বেলায় মন্দিরের ভেতর থেকে রহস্যময় হাসির আওয়াজ ভেসে আসে, আর কেউ যদি সেই মন্দিরের সামনে দাঁড়ায়, তার মুখে দেখা যায় ভয়ানক পুরোহিতের চেহারা।
---
এই কাহিনী আপনাকে কীভাবে লাগল? আরও কিছু জানতে চান?