পোস্টস

গল্প

অন্ধকারের ডেরায়

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

showrov mia

অনুবাদক অজানা ভয়

                                                                                 "অন্ধকারের ডেরায়"

 

 প্রথম অধ্যায়: অজানা ভয়

একদিন রাতে, গ্রামের প্রান্তে পুরনো একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে রহস্যময় কিছু ঘটনা ঘটে চলছিল। বাড়িটি একদা ছিল সুশীল ধনীদের আবাস, কিন্তু এক অজ্ঞাত কারণে প্রায় পঁইত্রিশ বছর আগে পুরোপুরি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। সেই বাড়ি নিয়ে গ্রামে প্রচলিত ছিল এক ভয়ঙ্কর গল্প—যে বাড়ির ভেতর সন্ধ্যার পর পা রাখবে, সে আর ফিরে আসবে না।

এক সন্ধ্যায়, গ্রামের তরুণ যুবক, রাহুল, এই গল্পকে মিথ্যে প্রমাণিত করার জন্য সাহসিকতার পরীক্ষা দিতে চাইল। তার বন্ধুদের পরামর্শে, রাহুল বাড়িটির দিকে রওনা হলেন। বাড়ির ভেতর প্রবেশ করতেই তার মনে হল, যেন সময় থেমে গেছে। ধূলিময় ঘরগুলির মধ্যে পুরনো আসবাবপত্রের অস্বস্তিকর গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল।

 

দ্বিতীয় অধ্যায়: অন্ধকারের সঙ্গী

রাহুল বাড়ির একে একে সব ঘর দেখতে লাগল। আচমকা, একটি ঘরের ভেতর থেকে আসা হালকা চিৎকার শুনে তার কৌতূহল আরো বেড়ে গেল। ঘরের ভেতরে ঢুকতেই সে দেখল, পুরনো এক আয়না রয়েছে, যার আয়নার মধ্যে এক অদ্ভুত সাদা চেহারা প্রতিফলিত হচ্ছিল। রাহুলের হৃদপিণ্ড দৌড়াতে শুরু করল, এবং সে পেছনে ফিরে দেখল কিছু নেই। তবে আয়নার অন্ধকার গহ্বর যেন তাকে আকর্ষণ করছিল।

অযথা ভয় না পেয়ে, রাহুল আয়নার কাছে গিয়ে তার কাঁপানো হাত দিয়ে আয়নার উপর স্পর্শ করল। সাথে সাথে, তাকে এক অদ্ভুত অনুভূতি হল—যেন কেউ তার কাঁধে হাত রেখেছে। ঘন অন্ধকারে, সে দেখতে পেল এক ভুতুড়ে চেহারা, যার চোখ দুটি লাল আগুনের মতো জ্বলছিল। রাহুল তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আসতে গিয়ে দেখল ঘরটি যেন অপরিবর্তিত, কিন্তু তার পেছনে গম্ভীর কণ্ঠে বলছিল, “তুমি এখান থেকে বেরোতে পারবে না।”

 

তৃতীয় অধ্যায়: অন্ধকারের রহস্য

ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সামলে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে করতে, রাহুল দেখতে পেল বাড়ির সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরের ভেতর থেকে গাঢ় অন্ধকার ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছিল। তিনি বুঝতে পারলেন যে, বাড়ির মধ্যে কোন এক অভিশপ্ত আত্মা তার পেছনে লেগেছে।

যতই রাহুল পালানোর চেষ্টা করছিল, অন্ধকারের শক্তি যেন তার পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছিল। অবশেষে, এক ঝলক আলো দেখা দিল—একটি পুরনো ছবি, যা রাহুলের হাতে পেয়ে গেল। ছবিটি ছিল এক পরিবারের, যারা একসময় এখানে বাস করত। ছবির এক মহিলা মুখে হতাশা ও আতঙ্কের ছাপ ছিল।

রাহুল ছবির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল যে, এই পরিবারের কোন এক সদস্য—যিনি এই বাড়ির ভেতর চিরকাল আটকে রয়েছেন—তার হাত থেকে মুক্তি পেতে হবে। রাতের শেষ প্রহরে, রাহুল বাড়ির মূল দরজা খুলে দেওয়ার জন্য চেষ্টায় ছিল। অবশেষে, দরজা খুলতেই রাতের অন্ধকার কেটে গেল এবং বাড়ির অশান্ত আত্মা শান্ত হয়ে গেল।

রাহুল বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে বুঝতে পারল যে, এই পুরনো বাড়ির রহস্যের অবসান ঘটাতে হলে সাহস ও সত্যিকার বোঝাপড়ার প্রয়োজন। গ্রামে ফিরে আসার পর, তার অভিজ্ঞতা সবাইকে জানিয়েছিল যে, ভূতের কাহিনী সব সময় ভিত্তিহীন নয়, বরং মাঝে মাঝে সত্যিই তাদের মধ্যকার রহস্য বোঝার প্রয়োজন হয়।

এভাবেই, রহস্যময় বাড়িটির অন্ধকার অধ্যায় শেষ হয়, কিন্তু এর অভিশাপের ছায়া হয়তো চিরকাল রাহুলের মনে রয়ে যাবে।