ক)
উদ্বোধন
ওদিকটার প্রবাসী শামুক
ভেসে আসছে এদিকের কসম খেয়ে,
এদিকের ঝিনুক গুলো ফুঁলে ফেপে
গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করছে;
ভাসছে ক্রমাগত উন্নয়নের জোয়ার;
আমি আর আমার মতোই বহুলোক
ঝাঁপিয়ে পড়ছি তার চিম্বুক ললাটে;
খাচ্ছি গড়াগড়ি তার বিস্তর প্রচ্ছদে!
তার রঙ কেমন অস্ফুট প্রতাপ ফেলছে
আমাদের অলীক দেহ প্রান্তরে;
বনঝাঁড়ে খুঁজে ফিরি তার স্বচ্ছ কোলাহল;
নিবিড় মনস্তাপে খুঁজে ফিরি বাস্তবের সমারোহে,
বিশাল চত্ত্বরে; নির্ঘুমতায় ঘোর হয় দুচোখের কোণ!
নিমীলিতলোচনে খুঁজে ফিরি তার বিমুগ্ধ চেতনা;
অবশেষে খুঁজে পাই তাকে তার দেহের ভেতরে!
উদ্বোধন করি সবুজের বালুচরে, সাহারা মরুভূমির পেটে!
রচনাকালঃ
০১-০৫-২০২১ ইং।
খ)
শাড়ীওয়ালী
সন্দেহের কালচে ঠোঁটের তাপে
নির্গলিত মোম- জমাট রক্তের মতো আবির্ভূত হয়,
তৈরী করে চিত্রকল্প বাংলাদেশের!
উদ্বেলিত জনতা শহর আশঙ্কা করে আসন্ন বিপদের;
তবু আসক্তির কালোহাত উদ্দাম শহরে করে বসবাস।
সন্দেহের প্রভাব ঘোচাতে নির্মাণ করে নব ইতিহাস!
পথে-প্রান্তরে করেছে বপন চারাবীজ,
শুশ্রূষা সংস্কার যত্ন খাতির করে তার জীবনের আসন্ন পদক্ষেপঃ
অবহেলা অস্বীকার নিগৃহীতের মতো জীবনের নব প্রত্যয়।
আমাদের হারানোর দিন- হারিয়ে গেছে,
এসেছে ফিরে পূণরায় শহরের বুকে নব নব উদ্দাম হাসি;
এসেছে পাখির দল ফুলের পাঁপড়ি ঝরা সবুজের মাঠ,
এসেছে তোমার প্রিয় কাঙ্খে কলস নেয়া পুকুরঘাটের শাড়ীওয়ালী!
রচনাকালঃ
০৬-০৪-২০২২ ইং।
গ)
নৈরাজ্যের শহর
বিবৃতি দানে অসুখের সুখ
পেশায় পাখির ডানা, হলদে পাখির ঠোঁট;
রেণু ফুটে যায় চোখেমুখে যেনো অবিশ্বাস্য প্রেমের মহাজোট!
কল্পিত দেহে নরকের ঝোঁক
দূরপাল্লার বাসে, চিম্বুক নগরীর;
চিত্রায়িত অবয়ব যেনো জীর্ণশীর্ণ ক্ষুধাতুর প্রহরীর!
কুঁড়েঘর কাঁদে বৃষ্টির ফাঁদে
হস্তান্তর আশাবাদী তার পাঁজরায়;
ঝরে যায় দেহ ক্ষয়ে যায় সুখ লাজুকতা হবে তার আজ রায়!
স্মরণকালের শরবত রসে
তৃষ্ণার্ত কালের পাখি পেয়ালা হয়ে যায়;
অবগাহনের দিনেও অতীত হানা দিয়ে আসমানি সুখ পায়!
কুচকাওয়াজের চত্বর ঘেঁষে
খোশ আমদেদ অতিথিবৃন্দ বিনয়ের:
সীমান্তে জড়তা ফুরিয়ে গভীরের রেখা আমাদের প্রণয়ের;
সুখ অন্বেষী কবি নৈর্ব্যক্তিক
নৈরাজ্যের শহর জানে খুনের প্রক্রিয়া;
অব্যক্ত কাল কবিতার ভাঁজে নিবেদন রেখে বলে- শুকরিয়া।
রচনাকালঃ
২৪-০৬-২০২১ ইং।
ঘ)
বিপরীত পৃথিবী
আমার পৃথিবী জানে তোমার আকাশ কতোদূর
কোন গ্রহে আছো তুমি-
তোমার নিরেট সুখে, শোনা যায় সুর সুমধুর;
তোমার পৃথিবী আজ আনন্দে উল্লাসে-
মাতোয়ারা যতোটা অধিক,
জেনে রেখো আজ শুধু এই-
আমার খবর শুনে তোমার আকাশ কাঁদবেই!
দুখের দরিয়া জানে- আমার পৃথিবী তার
কাটাচ্ছে দুর্দিন নিভৃতে নিশাচর হয়ে;
মুখ তার কবিতার মতো করে বলে যায়-
তুমি আর আমি আজ ততোটাই বিপরীতে ঠিক,
তোমার পৃথিবী আজ আনন্দে উল্লাসে-
মাতোয়ারা যতোটা অধিক।
রচনাকালঃ
২২-০১-২০২৩ খ্রিঃ।
ঙ)
আমজনতার দুঃখবিলাস
কার কী ক্ষতি, আমার পাশে থাকলে তুমি
উর্বরতার ঢেউ খেলে যায়; প্রেমের ভূমি
আবাদ করে উন্নয়নে শরীক হতে আপত্তি নেই;
দেশ জনতার আসল শোভন প্রেমের অভাব
প্রতিহিংসা ঘিরেই থাকে, দোষ বিরাগে দুঃখ দেয়ার স্বভাব
বলেই লেগে থাকে সংকট বারোমাস;
সমাধানের পথ খোঁজে না, আমজনতার মন বোঝে না
দেশ-চালিকার আসল পুরুষ- আসল হতে আর পারে না;
চোখ দেখে না চোখের ভেতর, জমছে কেবল পাপের কেঁতর
মুছতে কেউ আর আসে না, দেখছে সবাই, বলতে মানা;
তাই হয়তো আর আসে না, কেউ আসে না, দেখতে এসব কালোছায়া
বুকের ভেতর জমছে কেবল আমজনতার দুখের মায়া;
দূরীভূত করার দায়ে আসতে গিয়ে আর আসে না
আমজনতার সঙ্গী হতে আর পারে না;
দুঃখ সকল জমেই থাকছে, থাক
তোমার আমার প্রেমের ভূমি আবাদ হলে
আমরা দু'জন ঐকতানে শেকল ভাঙার আবাহনে গাইবো বলে
আমজনতা স্বস্তি পাচ্ছে, পাক
উন্নয়নের অগ্রযাত্রা এভাবেই অব্যাহত থাক।
রচনাকালঃ
০৬-০২-২০২৩ খ্রিঃ।
শাহাদাত সুফল
কবি ও সংবিধান গবেষক