পোস্টস

কবিতা

নার্সিসিজম

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সর্দার ইমাম


কুকুরের মত করে মরছে মানুষ।
ভাই খোয়ানোর ক্ষোভে আমরা সেদিন;
প্রতিবাদ মুখে তুলে নিয়েছিলাম।
মিছিলে মিছিলে কাঁপিয়ে দিয়েছি পুরো শহর।
চার দেয়ালের ছা-পোষারা এমনতর তাকিয়ে ছিল,
যেন গত কদিনে তেমন কিছুই হয়নি শহরে।
.
আর কতকাল ঘুমােবে ওরা?
সজাগ হবে কবে?
আর কত রক্ত দিব?
কত দিতে হবে?
গণ মিছিলে শামিল হবার মত।
খামাকা সময় ওদের ছিলোনা।
ওদের কেবল ঘরে ফেরার তাড়া।
.
সেদিন প্রতিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখেছি আমি।
জন সমুদ্রের পাঁশ এঁড়িয়ে,হেঁটে যাওয়া—
ক্ষিপ্ত এক তরুণ দীপ্ত কন্ঠে বলে ওঠেছিল।
যখন আমার বোন ধর্ষিত হয়েছিল,
তোমরা তখন কোথায় ছিলে?
আজ ভাই মরেছে বলে,গোটা শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছো?
সত্যিই তো তখন আমি কোথায় ছিলেম?
উত্তর জ্ঞাত ছিল না।
স্লোগানের ব্যাস্ততা দেখিয়ে,
মিছিলে মুখ লুকিয়ে চলে এসেছি।
.
পরের দিন মোমবাতির প্রজ্জ্বলনে কবিতা খুঁজেছি।
পায়ে পায়ে পা মিলিয়ে পাড়ি দিয়েছি ক্রীন ব্রীজ।
সেদিন ও ব্রীজের গোঁড়ায় মুখ তুবড়ে পড়ে ছিল,
উসকো-খুসকো চুলের ক্ষুধার্ত এক মানব।
মিছিলের তাড়া ছিলো,ফিরে ও তাকাইনি।
.
আলোর পিতা ঘরে ফিরে গেছেন।
লোকেদের ক্ষুধা বাড়াচ্ছে রাতের আঁধার।
ক্রীন ব্রীজে খুব বেশিই ভীড় ছিল সেদিন।
ইচ্ছে করছিলো—

কোন একজনের পথ আটকে বলি,
হে পথিক দাঁড়াও।
ভাই আমার মরলো কেন,জবাব দিয়ে যাও।
মিছিলের লাইন ছেদিয়ে চলে গেছে কতজন।
ওদের কেবল খাঁচায় ফেরার তাড়া।
ওসবে আমার ও কোন খেয়াল ছিল না।
আমার দু'চোখে তখন রাজ্যের ঘুম।
.
যাবতীয় আঁধার তাড়াতে আলো জ্বালিয়েছি,
দৈহিক ছায়া তবু এড়াতে পারি নাই।
শেষে মিছিলের লাইন ছেড়ে পালিয়েছি।
আমার ও খুব তাড়া ছিল।
আমার দু'চোখে তখন রাজ্যের ঘুম।
এত এত প্রতিবাদ করে কি হবে?
আমি তো বেঁচে আছি।এই বেশ।