বিশ শতকের শেষভাগের কয়েকজন তরুণী আমার পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেল৷ ছোট্ট নদীটির দিকে। নদী নাম আমার জানা নেই, ওরা জানে। মেয়েগুলি নদীতে
গোসল করতে আসেনি। এখন গোসলের সময় না৷ দুপুর গড়িয়েছে অনেক্ক্ষণ আগেই। ওরা নদীর ধারে একটু কম ধুলাবালির জায়গায় বসে পড়ল। ওরা আমায় দেখছে না, আমাকে দেখা ওদের ইখতিয়ারের বাইরে। কিন্তু আমি দেখছি। খুব মনোযোগ দিয়েই দেখছি। আমার তো আর কেনো কাজ নেই তেমন। সময়ের অলিতে-গলিতে ঘুরে বেড়ানো ছাড়া।
কী অদ্ভুত মেয়েগুলি গান গাচ্ছে! ওরা কি সময় করে গান গাওয়ার জন্যই তন্বী নদীটির ধারে এসে জুড়েছে?
কালো পাড়ের নীল শাড়ি পড়েছে সবাই। কেন যেন মনে হচ্ছে ওরা চার বোন। বয়সের তারতম্য আছে।
আহা! কি সুরেলা গলা।
“প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে
আমারই এ দুয়ার প্রান্তে
সে তো হায়, মৃদু পায়.....”
প্রথমে ভেবেছিলাম সবাই মিলেই গাইবে। পরে খেয়াল করে দেখলাম একজনই গাইছে। অন্য মেয়েরা বিভিন্ন উপায়ে সুর সৃষ্টিতে চেষ্টা-চরিত্র করছে। গান শুনে আমার একটু ঘুম-ঘুম লাগছে। ঘুমানো যায় অবশ্য। অনেক্ক্ষণ ঘুমাইনি। কিন্তু আমি চোখ খোলা রাখলাম। মেয়েটিকে ভালো করে দেখছি। বয়স কুড়ি এর বেশি হবে না। শ্যাম বর্ণ, ভালো চুল আছে সামনে একটা মেয়ে বসে থাকায় চোখ দুটো দেখা সম্ভব হচ্ছে না৷ তবে গান শুনেই তার গলার ওঠানামা টের পাচ্ছি ।
আমার খুব মন খারাপ লাগছে। আহারে মেয়েটির সাথে একটু কথা বলা হবে না। এটা আবার আমার ইখতিয়ারের বাইরে। সময় আমাকে শুধু দৃষ্টিটাই দিয়েছে, শব্দগুলো কেড়ে নিয়েছে। এখানে আর থাকতে ইচ্ছে করছে না৷ এখন বিদেয় হই। আমার আর চোখদুটি দেখা হল না।