পোস্টস

সমালোচনা

মুসলিমবিশ্ব কেন গনতন্ত্রকে গ্রহন করতে চাই না!

৫ অক্টোবর ২০২৪

শাহেদ মামুন শাহিন

 

ইসলামি শাসন ব্যবস্থা হলে পশ্চিমা আমাদের নিষেধাজ্ঞা দিবে,আর গনতন্ত্র চালু হলে পশ্চিমা আমাদের সাপোর্ট দিবে। মূলত গনতন্ত্র সিস্টেম হচ্ছে পশ্চিমাদের দাস হয়ে থাকা এবং তাদের গোলামি করা। তাই পশ্চিমারা চাই সকল দেশে গনতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা চালু হয়ে পশ্চিমার দাস হয়ে থাকুক। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে গনতন্ত্রের নামে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, মারামারি এবং হানাহানি থেকে শুরু করে সবকিছু হয়েছে,গনতন্ত্রের জনক আমেরিকার কাছে আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানও ক্ষমতার জন্য বিচার দেই বলে যে আমাদের দেশে গনতন্ত্র নাই আপনারা এসে হস্তক্ষেপ করুন। আমেরিকা এবং পশ্চিমাও শর্ত দেই আমাদের কথামত চললে তোমাকে বা তোমাদের দলকে ক্ষমতায় বসাবো আর না হলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ক্ষমতাচূত্য করবো।

 

পাকিস্তানের গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে শুধু মাত্র আমেরিকার আর পশ্চিমায় কথার বাইরে যাওয়ার কারণে । পশ্চিমা যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা বসায় আর আর যাকে ইচ্ছা  ক্ষমতাচূত্য করাই। এখন গনতন্ত্রের সিস্টেমের কারণে আমেরিকা এবং পশ্চিমারা পুরো বিশ্বকে শাসন করতে পারছে আর লুটপাট করার সুযোগ পাইছে। পেশিশক্তির দ্বারা গনতন্ত্র চাপিয়ে দেওয়া এবং তাদের পছন্দের মতো লোক ক্ষমতায় বসিয়ে লাভবান হয়,যার কারণে পশ্চিমার পছন্দ করা লোকগুলো ক্ষমতায় এসে লুটপাট করে এবং দেশের সম্পদগুলো আমেরিকায় পাচার করে,ফলে আমেরিকাও লাভবান হয় আর তাদের অর্থনীতিও ফুলে উঠে।

 

আফগানিস্তানে তালেবান পতনের পর গনতন্ত্র চাপিয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ইরাক,সিরিয়া এবং লিবিয়াতে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার নামে অর্থনীতি দিক থেকে শক্তিশালী দেশগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে ফকির বানানো হয়েছে। আমেরিকা এবং পশ্চিমারা কখনও চাইবে না কোন দেশে ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা বা খেলাফত শাসন ব্যবস্থা চালু হোক,কারন চালু হলে পশ্চিমারা সুবিধা এবং শোষন করতে পারবে না। তাই তারা তাদের তৈরীকৃত মানবাধিকারকে প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। মানবাধিকার হিসেবে তারা নারী-পুরুষের সমান অধিকার নারীর অধিকার,নারীদের অবাধ স্বাধীনতার অধিকার,এলজিবিটি অধিকার এবং নারীর পোশাকের স্বাধীনতার মতো অদ্ভুত বিষয়গুলোকে প্রথম পর্যায়ে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে,কাজ না হলে তারপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কব্জায় রাখার চেষ্টা করে,তারপরও কাজ না হলে তারা  চুড়ান্ত পদক্ষেপ হিসবে সামরিক অভিযান চালিয়ে দেশগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

 

গনতন্ত্র থিওরী আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই আমেরিকা এবং পশ্চিমা ছাড়া কেউ লাভবান হয়নি। গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার কারণে মুসলিমদেশগুলো ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে গেছে,গনতন্ত্র শাসন ব্যবস্থার সাথে ইসলামের শাসন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার কার্ডগুলো সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে মুসলিম দেশগুলো সহজে গ্রহন করতে পারে না। ফলে আমেরিকা বিভিন্ন ধরনের শক্তিপ্রয়োগ করে গনতন্ত্র শাসন ব্যবস্থাকে মুসলিম বিশ্বে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। শক্তিপ্রয়োগ করে চালু করা গেলেও মুসলিমদেশগুলো গনতন্ত্রকে পুরোপুরিভাবে হজম করতে পারে না। আমেরিকা এবং পশ্চিমা কতৃক রচিত মানবাধিকার প্রেসক্রিপশনগুলো ইসলামের সাথে প্রচন্ড রকম সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে মসলিম দেশগুলো মেনে নিতে পারে না। মুসলিমদেশগুলো মানবাধিকার প্রেসক্রিপশনগুলো পারে না গ্রহন করতে আবার পারে না ত্যাগ করতে।

 

আফগানিস্তানের দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে আমেরিকা এবং পশ্চিমারা আফগান নারীর স্বাধীনতার বিষয়ে যতটা উদ্বিগ্ন,সেই উদ্বিগ্ন ফিলিস্তিন নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না,অথচ এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ৪২ হাজার নারী-পুরুষদের মধ্যে নারী-শিশুদেরকে হত্যা করা হয়েছে ৩৫ হাজারের চেয়ে বেশী।এখানে কিন্তু ফিলিস্তিনের নারীদের ক্ষেত্রে আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের কতৃক রচিত গনতন্ত্রের মোড়কে মানবাধিকার প্রেসক্রিপশন কাজ করে না। তাই মানবাধিকারকে কার্ড হিসেবে তারা নিজেদের সুবিধামতো ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করে। যার কারণে মুসলিমদেশগুলো আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের দাবার ঘুটির মতো ব্যবহৃত হয়ে আসছে।