পোস্টস

নন ফিকশন

বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য এখন বিএনপির রাজনৈতিক দাইত্ব।

৯ অক্টোবর ২০২৪

Rocky Meraz

মূল লেখক রকি মেরাজ

বাংলাদেশের সাধারন মানুষেরা একক ধর্মভিত্তিক রাজনীতিরে ভয় পায়। আবার সেকুলারদেরও অপছন্দ করে। মনে রাখা জরুরি;  বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান। তবে অন্য ধর্মের মানুষও বসবাস করে এখানে।

 

বাংলাদেশে যে যেমন রাজনীতিই করুক। রাজনীতিতে ধর্মকে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে এই মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সমতা রাখা জরুরি। নইলে একটা ধর্মের মানুষ অন্য আরেকটা ধর্মের মানুষকে আদার করে ফেলবে। আমরা যেমন রাজনীতিতে ধর্মরেও উপস্থিত রাখতে চাই তেমনি ধর্মের জন্য কাওকে আদার কইরা দিতেও পছন্দ করি না। আমরা ধর্মীয় সাম্যাবস্থা চাই। আমরা যারা সহজ মানুষ তারা ধর্মরে ধর্মের জায়গায় রাখতে চাই, তবে রাজনীতিতে ধর্ম চাই না।

 

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিবেচনায় বাংলাদেশের  রাজনীতিতে একক ভাবে ধর্মীয় রাজনীতি প্রাণ পাবে না। তবে এখানকার রাজনীতিতে ধর্মকে উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়।  এখানে রাজনীতি করতে হলে ধর্মরে অদৃশ্যভাবে উপস্থিত রাখতে হবে।  তাই ধর্মরে রাজনীতি না বানাইয়া ; রাজনীতিতে ধর্মরে প্রভাবক রাইখা রাজনীতি করলেই কেবলমাত্র সেটা জনগণের জন্য ফ্রেন্ডলি হবে। জনগণও এমন রাজনীতিই পছন্দ করবে।

 

বিএনপিকে আমি বাংলাদেশের সকল ধর্মের সাধারণ মানুষের জনপ্রিয় রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসবে বিবেচনা করি। কারন বিএনপি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পাশাপাশি  ইসলামি মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয়। এখানে একক কোন ধর্মীয় রাজনীতি নাই তবে তাদের রাজনীতিতে ধর্ম আছে। তবে সেটা রাজনীতি হিসেবে নয় ; প্রভাবক হিসেবে। বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান ডানপন্থীদের বামে ও বামপন্থীদের ডানে। এই রাজনৈতিক অবস্থানও বিএনপির জনপ্রিয়তার আরেকটা কারন। 

 

বাংলাদেশ কোন গোত্রবাদী রাষ্ট্র নয়। এখানকার অধিকাংশ মানুষ মুসলমান। এখানে ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি হিন্দু খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মের মানুষও বসবাস করে। স্বভাবতই কোন একটা ধর্মের মানুষকে বেশি প্রায়োরিটি দিলে সেটা ঠিক হবে না। তবে ইসলাম ধর্মের মানুষ বেশি হওয়ায় ইসলামি মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিতে হবে পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষকেও সমান মূল্যায়ন করতে হবে। বিএনপি ঠিক এটাই করে।

 

এছাড়াও বিএনপি বহুত্ববাদী গণতান্ত্রের চর্চা করে। এদের মধ্যে ফ্যাসিজম নাই। এখানে একজন লিবারেল মানুষ তাঁর আইডিওলজি চর্চা করতে পারে। একজন মধ্যমপন্থী মানুষ নিরাপদ অনুভব করে। ভিন্নমতামত এখানে স্পেস পায়।

 

বিএনপির উদার রাজনীতি ও বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক চর্চা ধর্মীয় রাজনীতির পাশাপাশি আইডিওলজিক্যাল রাজনীতিকেও স্পেস দেয়।

তাই ফ্যাসিবাদী পিরিয়ডেও বিএনপি সকল রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপদ তাঁবু হিসেবে উপস্থিত ছিল। যেখানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল মতামতের মানুষই আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের রাজনীতি টিকিয়ে রাখার জন্য। অর্থাৎ বিএনপি এমন একটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম যেখানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল জনমতই নিরাপদ অনুভব করে।

 

বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী শোষনে বাংলাদেশ গোত্রবাদী রাষ্ট্র হয়ে ওঠেছিল। এখানে ধার্মিক ও ভিন্ন মতামতের মানুষরা নির্যাতিত হতো।

 

ফ্যাসিবাদী শোষনের এই রাজনৈতিক ট্রমাগুলো দূর করে ; ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে বাংলাদেশ যাতে গোত্রবাদী রাষ্ট্র হয়ে না ওঠে সেটা এখন বিএনপিকেই দেখতে হবে। কেননা বিএনপিই ভিন্ন মতামত ও ভিন্ন ধর্মের রাজনীতিতে সাম্যাবস্থা তৈরির সক্ষমতা রাখে। 

 

আমি নতুন বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য বিএনপিকেই সেইফ মনে করি। কেননা আমাদের মত সাধারণ মানুষদের পলিটিক্যাল ফ্রিডম বিএনপির মাঝে বিদ্যমান। 

 

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়  জাতীয় ঐক্যের পথে বিএনপিকে ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করা ইসলামপন্থী দলগুলোকে যেমন সাথে রাখতে হবে তেমনি মধ্যপন্থি ও লিবারেল মানুষকেও সাথে রাখতে হবে। তবেই বাংলাদেশে ধর্মীয় সাম্যাবস্থা রক্ষা হবে ও ভিন্ন মতামতের মানুষ নিরাপদ অনুভব করবে।

আর এটা করতে পারলেই  নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরোদ্ধে বিএনপির রাজনৈতিক বিজয়;  নিশ্চিত হবে বলে আমি মনে করি।