পোস্টস

কবিতা

আমিও ঘুমোতে চাই

১২ অক্টোবর ২০২৪

Salsabil Khushi

মূল লেখক Salsabil Khushi

নিস্তব্ধ নিশিথের নিশাতের ন্যায়—
বুকে ক্যান্সারসম যন্ত্রণা ঘুরে বেড়ায়।
ধমনীর সংকোচনে চিনচিন করে আওয়াজ তোলে 
আফসোসের দল।
আহ্! কি তীব্র আর্তনাদের প্রচেষ্টা। 
অবসরের নকশী ফোঁড়ে গেঁথে রাখার চেষ্টা করি 
মনের অব্যাক্ত সব কথা।
প্রতি সুইয়ের ফোঁড়ে কত যে প্রশ্ন জাগে মনে!
এই যেমন— 
ধরো যদি অশ্রু দিয়েও বুনন সম্ভব হতো  
তবে কি শুধু জীবন গাঁথাই লেখা হতো?!
জানিনা, তবে বিশ্বাস করুন, আমার যেটুকু যন্ত্রণা 
তা নেহাতই নগন্য —
আমি লজ্জায় কাউকে বলিনা।
মফস্বল থেকে শহর, শহর থেকে গ্রাম
সবাই ই বেদনার পোষক।
ওই যে দেখুন, 
খোলা বারান্দার আলোকিত রাতের আকাশ
সেই আকাশ যার দিগন্ত মিশে যাওয়া প্রান্তে 
অমাবশ্যায় ও আলো পাওয়া যায় —
সে আকাশের অধীকর্তার সাথে আমার কথোপকথন হয়
সমস্ত আক্ষেপ, অভিযোগ, অনুযোগ, আর ক্লান্তির কথা।
কথার ফাঁকে
উত্তরীয় পবন সিক্ত করে দিয়ে যায় আমার নেত্রালয়। 
শহরের সকল নিস্তব্ধতা 
ঢেউ হয়ে বুকে সজোরে আছড়ে পড়ার ভয়ে 
পালিয়ে আসি সেখান থেকে।
উঁকি মারি চার পাটে জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে।
কি শান্ত মেঘমালা, কি সন্তপর্নে তার ভেসে বেড়ানো।
যেন তার উড়ে যাওয়ার শব্দেও 
কারো নিশিঘুমে ব্যাঘাত না ঘটে। 
আমি রাতভর আকাশ দেখি 
দেখতে দেখতে আমি আমায় দেখি।
কত কথা মনে পড়ে, 
কত স্মৃতি গর্জন করে মস্তিস্কে।

এক পর্যায় আমি চিৎকার দিয়ে উঠি।
আমার অস্ফুট আর্তচিৎকারে 

কেঁপে ওঠে বুকের পাঁজর
পর্শুকায় বাড়ি খেয়ে তৈরি হয় প্রতিধ্বনি। 
মস্তিষ্কে শব্দের প্রবেশ মাত্র তৈরি হয় যুক্তি
যুক্তির দেয়াল আমার কন্ঠ রুখে দেয়,কান্না থামায়।
যদি এ আওয়াজ শুনতে পাওয়া যেত
ঘুমন্ত নগরীও আতঙ্কিত হয়ে পড়ত।
 

তবে এমন হোক আমি তা চাইনা
আমিও ঘুমোতে চাই–
মস্তিস্কের ভাবুক নার্ভকে ছুটি দিয়ে
অবেগ অনুভূতির সকল সংবেদনশীলতাকে না বলে 
কিছুক্ষণের জন্য নফসের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করতে চাই।
 

কেউ এ অদ্ভূত আকাশের আলো নিভিয়ে দাও-
আমিও ঘুমাতে চাই।