কোনো এক শরতের সকালে ট্রেন জার্নি করছিলাম। স্বচ্ছ নীল আকাশ আর কাশফুল যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে দিগন্তে হারিয়ে যাচ্ছিলো। মুগ্ধ হয়ে ডুবে ছিলাম প্রকৃতির এই অসম্ভব সুন্দর লীলাখেলার মাঝে। হঠাৎ করেই ট্রেন স্টেশনে ঢুকে পড়ে। আমার সামনের মুখোমুখি সিটের ২ জন যাত্রী নেমে গেলো। আরও ২ জন যাত্রী এলো এবং বসলো। আমি ভ্রুক্ষেপ করলাম না। সাথে থাকা জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতায় ডুবে গেলাম। কবিতার নাম "দু‘জন" প্রথম লাইন ছিলো, আমাকে তুমি খুঁজোনা বহুদিন, কতদিন আমিও তোমাকে খুঁজি নাকো। এত এত ভালো লাগে আমার যে, দুই লাইন পড়ি আর ২ মিনিট ভাবি। কবিতটি পড়া শেষ করে সামনের সিটে চোখ যেতেই সামনে বসা মহিলাটির দিকে তাকিয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় অবাক করার মুহূর্ত এলো। আমার "মাধবীলতা " আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে। সেই চাহনিতে আছে কিছু জিজ্ঞাসা, কিছু বিস্ময়। যে মেয়েটির ব্যক্তিত্বকে ভয় পেয়ে যে আমি প্রতিদিন হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতাম সেই মেয়েটির চোখে মুখে আজ তার ছিটেফোঁটাও নেই। তাঁর মুখ লাবণ্যহীন, চেহারায় দুঃখী দুঃখী ভাব। একদিন ফাগুনের উদাসী হাওয়ায় তাঁর যে মিষ্টি হাসি আমি আমার হৃদয়ে সারাজীবনের জন্য গেঁথে নিয়েছিলাম সে হাসি তাঁর আজ নেই। শুকনো একটা হাসিতে জিজ্ঞেস করলো, " কেমন আছেন " ঠিক যেমন করে বনলতা দিশা হারানো .