একদিন এ মানব সভ্যতার মুখে লাথি মেরে আমি চলে যাব,
চলে যাব কোন এক আদিম জনপদে।
সেখানে নেই আধুনিক অস্ত্রের নগ্ন মহড়া,
নেই ভয়ানক বিধ্বংসী মারণাস্ত্রের মুহুর্মুহু উল্লাস,
গগন বিদারী, বায়ুভেদী সে বাণ কেড়ে নেয়না কারো বুকের ধন-
আমি এ মানব সভ্যতার মুখে ছিটিয়ে দেব একদলা ঘৃণাভরা থুথু।
সেপিয়েন্স- তুমি সভ্যতার বড়াই করছ?
তুমিই এক সময় মেরে, কেটে শেষ করেছ নিরীহ ম্যামোথ,
তুমিই ভোলগার তীরে স্নান করেছ নিজ গোত্র প্রধাণের শোণিত ধারায়-
সেপিয়েন্স -
এই তুমি, তুমিই শেষ করেছ তোমার মতই সভ্য প্রজাতি নিয়ান্দারঠাল।
তুমি শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করছ সেপিয়েন্স?
সৃষ্টির আদিকাল থেকে তুমি খুনের পর খুন করে চলেছ
নিজের প্রতিষ্ঠা, নিজের জেদ, নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায়ের জন্যে।
তুমিই কলোসিয়ামের সেই নিষ্ঠুর দর্শক, তুমিই যীশুর হত্যাকারী,
তুমিই হত্যা করেছ হাসান হোসেনকে, তুমিই কারবালার জনক,
হে মানব তুমিই এজিদ, তুমি সীমারের উত্তরসুরী।
তুমিই জঙ্গল কেটে সাফ করে, পাহাড় ধ্বসিয়ে, নদী বিষিয়ে
গড়ে তুলেছ মারণাস্ত্রের অভয়াশ্রম-
যে অস্ত্র কেড়ে নেয় অবোধ চাউনির, ফোকলা হাসির
নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ - ধিক তোমায়, শত সহস্র ধিক্কার।
আমি এ সভ্যতাকে পায়ে দলে, হাতে উপড়ে ছুঁড়ে ফেলে দেব বিষাক্ত আগাছার মত
এখানে শুধুই অবোধ শিশুর অসহায় ক্রন্দন,
নরম নধর শরীরের শীতল লাশ হয়ে যাওয়া।
পৃথিবীর এ প্রান্তে
আজ আমার সন্তান পরম যত্নে আমার বুকে ঘুমিয়েছে যখন,
এ নীল গ্রহের অপর এক প্রান্তে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এক জনপদে
আমারই মত কারো সন্তানের ঘুম ভেঙে গেছে মুহুর্মুহু বোমার শব্দে।
আতঙ্কে দিশেহারা সে শিশুর ভয়ার্ত চোখ ঠিকড়ে বেরিয়ে আসবে যেন,
সে কাঁদতে ভুলে গেছে, সে হাসতে ভুলে গেছে-
তার সে চাউনি আমায় দগ্ধ করছে,
তার সে কাঁপন আমায় বিদ্ধস্ত করে তুলছে,
তাদের রক্তাক্ত দেহ আমায় ক্ষতবিক্ষত করছে
লক্ষ্য বেয়নেটের আঘাতে।
আমি ওই অবোধ শিশুদের মৃতদেহের কসম কেটে বলছি,
এ মানব সভ্যতাকে লাথি মেরে আমি চলে যাব এক নিঃশেষ দিগন্তের পানে-
পাশাপাশি চিরতরে ঘুমিয়ে থাকা দুই নধর দেহের কসম কেটে বলছি
সভ্যতা তুমি ধ্বংস হবে, ধ্বংস হবে, ধ্বংস হবে।