বয়স অল্পে খুলিল কপাল শম্ভুর ঘরে গঞ্জের বাজার
হাট বসিল বাড়ির উঠানে, ব্যবসা বসিল গঞ্জে গঞ্জে
নাম ছড়িয়েছে দেশ বিদেশে, ব্যবসা হয়েছে একা সবে
অর্থ এসেছে হাড়ি করে,বাড়ি করেছে ফিরিঙ্গি-ধাঁচে
ছন খসেছে চোখের পলকে, ছাদ উঠেছে আকাশ তলে
অর্থের জ্বরে শম্ভু কাঁপে, থর থর, আকাশ দেখে বলে মিছে
এত নিচে আকাশ এসেছে,আর কয়টি তলা করার আগে,
আকাশ যাবে ফেটে
সবার চোখে শম্ভু হয়ে উঠে, উটের উসমান, মরুর সওদাগর!
পথে-ঘাটে, মাঠে- হাটে শম্ভু চলে উটের পিঠে
দীর্ঘ দৃষ্টি সোজা পথে, শিরটি এবার উঁচুতে ছুটে
লুঙ্গি টানে উপর দিকে দ্বীন দুনিয়া খোলা করে
শম্ভু দেখায় বেটা কেমন বীর পালোয়ান!
শুধু অর্থ অভাবে ছনের গৃহে
দিন কেটেছে বৃথা মিছে
দানে দানে পথে ঘাটে, ফলক পরে সবার চোখে
শম্ভু বেটা মিয়া সাজে
নতুন মিয়া পথে ঘাটে সালিশ করে, হুংকার ছাড়ে
যা বলি তাই বলতে হবে আমার সাথে সাথে
জজ-ব্যারিস্টার, পুলিশ-পালোয়ান সবই তার পকেটে থাকে
ভয় দেখিয়ে, অর্থ ছিটিয়ে লোকসমাজে জায়গা করে; মর্যাদার স্থান!
ঘর হয়েছে, বাহির এসেছে হাতের তালুর মুঠে
অতীত শুধু ভেসে উঠে ক্ষণিকে, চোখের পর্দার পিছে
চোখ বন্ধে, পলক ফেলে অতীত সব মুছে ফেলে
শম্ভু কিছু ক্যাম্প করতে চায়, সভ্য গ্রাম্য জগতে
ছোট ছোট ক্যাম্পে থাকবে বীর পালোয়ান জোয়ান শত
সাথে থাকবে নীল পানির বাঈজী অবিরত
অর্থের জ্বরে তাপ এসেছে শম্ভুর শিরা উপশিরা জুড়ে
জমি দখল, জায়গা দখল, উচ্ছেদ চলে ক্ষুদ্র সকল
লাথি মেরে বের করেছে পৈতিক ভিটা সবে
ভাগ্য দোষে সামনে পরে ক্ষুদ্র প্রাথমিক শিক্ষক
হাতজোড়ে ভিটা চাহে নিরুপায় বাবা, আমি তোমার শিক্ষক!
চোখ বন্ধে ভাবে শম্ভু সমাজ কি বলে?
প্রবেশ পথে বাড়ি পেয়েছে অর্ধমৃত বুড়া,
তারই পিছনে সম্পদের পাহাড় কিভাবে যায়রে ফেরা!
কুড়ি দিব বাড়িয়ে, বাড়ি ছাড়েন মালপত্র গুছিয়ে
সম্মান লাজে কেঁদে বৃদ্ধ নিশ্চুপ হয়ে যায়
দীর্ঘশ্বাসে ক্ষদ্র সবে দূরে সরে যায়
উটের সওদাগর আবাদ করে পাপের নগরী গড়ে
বিপত্তি শুধু অর্থের জ্বর অভ্যাসে ঘিরে ধরে
নীল পানির জগতে খুন করে বসে, বাঈজী পাওয়ার লোভে
হালি হালি খুনে সওদাগর আইনের চিপায় পরে
ধীরে ধীরে নিঃস্ব সওদাগর লক্ষী ছনে ফিরে
ক্ষুদ্র কোণে চোখ বন্ধে বাঈজী হেসে উঠে
তুই যে আমায় নিঃস্ব করিলে নীল জগতে মিশে
দীর্ঘশ্বাস কাল হয়েছে, ইশারায় বাঈজী হাসে।
ডাঃমোঃ তরিকুল ইসলাম
সহকারী রেজিস্ট্রার
তারিখঃ২৬/৯/২৪