পোস্টস

কবিতা

তালুক সুলতান (রম্য রচনা)

১৬ অক্টোবর ২০২৪

ডাঃমোঃ তরিকুল ইসলাম

মূল লেখক ডাঃমোঃ তরিকুল ইসলাম

তালুক সুলতান পিতার বাস বাঙাল মুলুক পৈতিক নিবাস
জন্ম দিয়েছে হাজার - শতক,  বিদ্যা  গিলিয়েছে কুড়ির মত
জন্মের সংখ্যা বাড়ার সাথে পিতা হাসে  মুচকি বেশে
তালুক রক্ষা নিশ্চিত হবে, শত্রু এখন লেজগুটাবে

কুড়ি কয়েক বিদ্যান সন্তান সাথে আছে বীর পালোয়ান 
বাহু দেখাবে, আঘাত করবে পৃষ্ঠ দেশে লাথি ফুটাবে
কে আসবে আয় বঙ্গ দেশে?

আমি আছি জীবিত সুলতান,  তালুক আমার পিতার সম্মান
সাথে আমার পুত্র সন্তান, বিদ্বান বলিয়ান!

হাজার-অযুত চাটুকার  ছিল, পিতার কথায় জ্বলে গেল
এত সুধায়, পা চেটে খায়, তবু পিতার মূল্য নাহি পায়
আমাদের কথা বলল না সভায়, কেন তথ্য জগত কি, 
আছে কম জানা?

চাটুরা সবাই গোষ্ঠী করে, চাটার গোষ্ঠী ফলক করে
বিচার সালিশ দাবি উঠে , পিতা কেন অবহেলা করে?
পোশাক পরে বাহু দেখিয়ে, পালোয়ান সব লাঠি নিয়ে
দ্রুত পদে সামনে ছুটে

আজকে তবে চাটু তোদের, চ্যাপ্টা করব পিতার নির্দেশে
আমরা কেমন পালোয়ান দেখবে জগত সমাজে

বিসমিল্লাহ বলে চালাল লাঠি চাটুর মাথাতে
রক্ত ঝরে চাটুর রক্ত, পিতার তালুকে
পালোয়ান দেখায় বীরের বীরত্ব আঘাতের শব্দে
গুটিকয়েক মারা গেল, নিথর পথে পরে রইল

কিছু চাটুর কব্জাতে - কোমরে রশ্মি পরিল বাঁধা
জন পঞ্চাশ পলায়ন করিল ,  পালোয়ানের পকেটে  কুড়িগুছিল
উৎসুক বীরেরা বন্দী আনিল পিতার দরবারে

বিদ্বান সকলে আসন পাতিল আরাম কেদারা বেছে
চাষারা সব মাটিতে বসিল খড়কুটো ঘেষে
বন্দীরা সবে শক্ত বাঁধনে খুঁটির পিছে পিছে
তালুক সুলতান মাঝ জগতে রেশমী পোশাকে সেজে
ডজন খানেক বিবি ও এসেছে  পরিচয়হীন সর্বজনে

কানাকানি শুরু, প্রশ্ন সকল মনে পিতা কি তবে 
নারী পেয়েছে বিবাহ ছাড়াই এই বনে!
হঠাৎ সুলতান চিৎকার, ফুৎকার,  শুরু কর এবার 
দোষীর বিচার

বিশেষ জাতীয় বিদ্বান আসিল "আব্বা, আব্বা" বলে
আরেক জাত  উঠাল হাত কথা বলবে বলে
বিশেষ বলে সুযোগ আসিল পিতার সুদৃষ্টির ছলে
শত যুক্তি, বুদ্ধিদীপ্তি কথা শুনিয়ে চাটুরা দোষী, প্রমাণ করিল পিতার আদালতে

নীরব সুলতান সুযোগ খুঁজিল, আরও বিদ্বান দেখে
অন্ধ ঘরে গোপনে গেল, শাস্তি কি হবে বুঝিতে!

সাজা শেষে সবাই কাজে ফিরে উল্লাসে 
চাষারা এসে অভিযোগ করে, অন্ন লুটপাটের!

কে করিল কে করিল?  পিতার হুংকারে, ভীত সকলে চুপ রহিল প্রশ্ন মনে মনে

একটু পরে বিদ্বান আসিল হিসাবের পর্দ হাতে
গুণে গুণে বুঝিয়ে দিল অন্ন ঠিক আছে

চাষাদের পিঠে চাবুক পরিল পিতার নির্দেশে
অশ্রু চোখে তালুক বুকে, বিচার ফিরিল নিজের পিঠে,
পেটে লাথি বিদ্বান সাথী
সহোদর হয়েও উদরের ক্ষতি কেমনে করিল?
আসমানে বিচার ছেড়ে চাষার কাজে যেতে হয়

বিশেষ গোষ্ঠী বিচারের যত্নে , মাতৃরত্ন বিদ্বান-পালোয়ানের 
বিচার চাহিল
গোপনে তারা তালুক গড়িল,  আকাশ সমান গৃহ করিল,
পিতার অজান্তে!

এত অর্থ কিভাবে আসিল বিদ্বান পালোয়ানে?
পালোয়ান এবার চটে বসিল বিশেষ সমাজে
গোপন তথ্য ফাঁস করিল পিতার দরবারে

সকল কথা শুনে পিতা অগ্নি মূর্তি হল
চোরে চোরে মাসতুত ভাই, তোরা  চোরেরা  সবে আপন ভাই,
কেমনে একাজ করিলে? 
কষ্টের  তালুক গুটিকয়েক মিলে গ্রাস করিলে তবে!

কষ্টে আমার মরণ হলো, চাষারা সব নীরবে গেল,
অন্নহীন রয়ে
তোরাই সব ক্ষতির মূল তালুক সুলতানে!

বিদ্বান এক , মুখ লুকিয়ে বলল, পিতা নারীর বনে, 
আপনিও ছিলেন শিকারী মনে!
স্বাক্ষী আমি বলিনি জনে, এবার একটু মুখ খুলিব 
অনুমতি পেলে!

চমকে পিতা ভুলের দেখা চোখের সম্মুখে 
বিদ্বান হলো পথের কাঁটা তালুক মুলুকে
চুরির মুখে বৈধ সাফা গোপন কৌশলে
ব্যর্থ পিতার মনে ব্যাথা, কুটকৌশলে!
শোষণের চাবুক চালু হইল তালুক সালতানাতে।


ডাঃমোঃ তরিকুল ইসলাম 
সহকারী রেজিস্ট্রার 
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল 
তারিখঃ  ২০/০৯/২০২৪