পোস্টস

কবিতা

অপেক্ষা

১৬ অক্টোবর ২০২৪

জাকারিয়া সিজিয়াম

অজ্ঞাতভাবেই একটা কলম আমার পকেটে ঢুকে পড়েছিল
আমি বাংলা একাডেমির প্রান্তর থেকে সোহরাওয়ার্দী
বারবার ওৎপেতে চলছি রাষ্টীয় পাহারাদারদের ভয়ে।
কলমখানা আমি ইচ্ছে করে আনিনি,
প্রতিবার এ পকেট থেকে ও পকেট করে 
আড়াল করছি বারবার আমার কলম, এত বড় আগ্নেয়াস্ত্র 
এ নিয়ে ঢোকার সাহস আমার হলো কি করে?
অনুভুতির কোপারু সন্দেহে গ্রেফতারী পরোয়ানা যার 
কলম; আমার ভয় তাই রাষ্টীয় কারাচুল্লী।
আমি একা, কলমকে আড়াল করে বাচাঁতে চাইছি।

শ্বাপদসংকুল প্রাঙ্গন থেকে আমি পালাতে গিয়ে
আমার পা পাথরের মত ভারী হয়ে আসে,
আমি পারিনা যায়গাটা পেরুতে; পা-গাছ জন্মে যায়
বামে রাজু ভাস্কর ডানে উদ্যান, আমি তাকাতে চাইনা
তবু সব দেখতে পাই চলছে আগের মত
শুনতে পাই এমনই স্বাভাবিক, কিন্তু কিছুই স্বাভাবিক দেখিনা
পুলিশী সরঞ্জাম, শরবতওয়ালা, গাড়ির হর্ণ, রিক্সার টুংটায়
কোন কিছুই আমার মানুষগত মনে হয়না।
কোন এক দলবাধা শুওরের মধ্যে আমি হাঁপাই
গাছ নয় এবার মনে হয় এই পাগুলো আমার
দুইটা নয় চারটা, আমি শুওরের মত এগুতে চাইছি।

কলম তখনও হাতে ধরা, বুক পকেটে রাখার সাহস পাইনা 
কয়েকটুকরা ফূলের সাথে দুইটা গাঁদার মালা
রাষ্টীয় বেরাকডের ফিতা, কিছুটা ধোয়া ধোয়া পরিষ্কার,
কিন্তু তখনই আমার সন্দেহ স্পষ্ট হয় আমি আসলেই শুওর
একটি মেয়ে দুইটা পুরুষের সাথে চলতে গিয়ে থুথু ছিটায়
আমি দেখি যেমন দেখি ফুল কিংবা গাঁদার মালা।
কোনটাই আমার কাছে ধ্রুবক মনে হয়না
আমি আসলে সব কিছুর আড়ালে চিৎকার শুনি কলমের।

মাইকে মাইকে গর্জন শুনি মৃর্ত্যুতে অমর, মৃর্ত্যুতে অক্ষয়
আরো কত কি, কিন্তু আমার কাছে জীবন খুব বড়
নিশ্বাস চলার স্বাদ নিয়ে যদি বলতেই না পারে 
জীবন সুন্দর- তাতে কি অমর কি অক্ষয় কিবা এসে যায়।
তার নিথর দেহ, কি এসে যায় তাকে নিয়ে কবিতায়
কি এসে যায় তাকে নিয়ে গানে কিংবা পুরোনো ভালোবাসায়,
একদলা থুথু যায়গা মত পড়লো কিংবা না পড়লো 
তাতেই কিবা যায় আসে, তার আমিত্বে।

আমার ভয় মজ্জায় গেথে যাবার আগেই, 
আমি কলমখানা নিয়ে পালাই, কেউ সে আগ্নেয়াস্ত্র দেখেনি
শুধু বিস্ফোরিত হবার আগে, অপেক্ষা।