ইসলামে একদিকে যেমন যিনা-ব্যভিচারের কঠিন শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে, অন্যদিকে কারো প্রতি ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদেরও কঠিন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,
যারা সচ্চরিত্রা নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে না আসে, তাদেরকে তোমরা ৮০টি বেত্রাঘাত করো এবং তোমরা কখনও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না; এরাই তো ফাসেক।"(সুরা নূর, আয়াত: ৪)
চরিত্রবান নারী কিংবা নিরপরাধ পুরুষের প্রতি যারা ব্যভিচারের অভিযোগ আরোপ করে এবং এর সপক্ষে চারজন নির্ভরযোগ্য সাক্ষী উপস্থিত করতে সক্ষম হয় না তাদেরকে ৮০ টি বেত্রাঘাতের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ দেয়ার শাস্তি কোরআনে তিনটি ধাপে নির্ধারিত হয়েছে:
৮০টি বেত্রাঘাত প্রদান করা
যে ব্যক্তি এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনে, তাকে ৮০ বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়া হবে। এটি ইসলামি শাস্ত্র অনুযায়ী একটি গুরুতর শাস্তি, যা ব্যক্তিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে কষ্টদায়ক করে তোলে এবং সমাজের জন্য সতর্কবার্তা দেয়।
সাক্ষ্যগ্রহণে অযোগ্যতা
মিথ্যা অপবাদদাতা ভবিষ্যতে কোনো মামলায় বা সামাজিক ক্ষেত্রে সাক্ষ্য দিতে পারবে না। তার সাক্ষ্য আর কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না, যা তার সমাজিক অবস্থানকে অনেক নিচে নামিয়ে দেয়।
পাপী হিসেবে বিবেচিত
মিথ্যা অপবাদ দেয়ার ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফাসিক বা পাপী হিসেবে বিবেচনা করা হবে, যা তার ধর্মীয় ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। নবীজি (সা:) নিরাপদ নারীদের সম্মান রক্ষার বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন এবং মিথ্যা অপবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
একটি হাদিসে নবীজি (সা:) বলেন,
'যে ব্যক্তি কারও প্রতি মিথ্যা অভিযোগ আনে, অথচ প্রমাণ করতে পারে না, মহান আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের শাস্তি নির্ধারণ করেছেন। (মুসলিম)"
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, মিথ্যা অপবাদের শাস্তি শুধু দুনিয়াতেই নয়, আখিরাতেও কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
ইসলামি বিচারব্যবস্থায় এটি মানুষের মর্যাদা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।