সালমান রুশদি এবার ফিকশন লেখায় মনোনিবেশ করেছেন। সম্প্রতি তিনি ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সাহিত্য উৎসব লভিভ বুক ফোরামে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেছেন। সে সময় তিনি দর্শকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-আমেরিকান এই লেখক জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি ৩টি নভেলা লিখছেন। প্রতিটি প্রায় ৭০ পৃষ্ঠার মত হবে।
৭৭ বছর বয়সী বুকারজয়ী এই লেখক বলেছেন, 'এই নভেলাগুলো আমার জীবনের তিনটি স্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোতে ভারত, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমার বসবাসের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা হবে।'
সাহিত্য উৎসবে রুশদি তার সর্বশেষ বই 'নাইফ' নিয়েও আলোচনা করেন। এই স্মৃতিকথাটি চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে ২০২২ সালের আগস্টে নিউইয়র্কে তার ওপর যে ছুরি হামলা হয়েছিল, সেই ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
২০২২ সালে নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হাদি মাতার নামে লেবানিজ বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিক রুশদির ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করে। এই হামলার ফলে তার এক চোখ অন্ধ হয়ে যায়। তার লিভারের ক্ষতি হয় এবং তার বাহুর স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে একটি হাত অকার্যকর হয়ে যায়। এছাড়া ভয়াবহ এই ঘটনায় তিনি যে মানসিক আঘাত পেয়েছেন তা থেকে মুক্তি পেতে একজন থেরাপিস্টেরও সাহায্য নিয়েছেন।
রুশদি ইউক্রেনের অন্যতম বিশিষ্ট লেখক ওলেক্সান্দার মাইখেদের সঙ্গেও আলোচনা করেন। তিনি ইউক্রেনীয় শ্রোতাদের বলেছেন, 'যখন আপনারা আমার মত বয়সে পৌঁছে যাবেন, তখন স্বভাবতই ভাববেন যে আর কত দিন বাকী আছে। স্পষ্টতই আমার পক্ষে আরও ২২ টি বই লেখা সম্ভব হবে না। আমি ভাগ্যবান হলে খুব বেশি হলে এক বা দুটি সম্ভব হবে।'
এই নভেলাগুলো তার ওপর ছুরি হামলার পর লেখা প্রথম ফিকশন হবে। রুশদি ইউক্রেনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতের পর তার মানসিক অবস্থা এখনকার ইউক্রেনীয়দের মতই ছিল।
উল্লেখ্য, লভিভ বুক ফোরাম সাহিত্য উৎসবটি টানা ৩১ বছর ধরে চলছে। এমনকি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পরেও এটি বন্ধ হয়নি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান