Posts

নন ফিকশন

বাংলাদেশের এস্কলার আর মুনশিরা

May 12, 2024

রক মনু

Original Author রক মনু

বাংলাদেশের এস্কলার বা মুনশিরা  বেশিরভাগই ফেছবুকে একটিভ থাকেন না, আজকেও এক মুনশির ফেছবুক ছাড়ার নোটিশ দেখলাম। আমার খেয়ালে বুঝি, আমেরিকা-ইউরোপ-ইনডিয়ায়ও মুন্সিরা ফেছবুকে লেখেন না, মানে ফেছবুক তাদের কাছে লেখালেখি/চিন্তা-বয়ান হাজির করার পেলাটফর্ম না আদৌ, হয়তো পেজ বানাইয়া লিংক শেয়ার করেন, বাট ঐ কামে টুইটারই বরং বেশি ভালো।
কিন্তু বাংলাদেশের তফাতটা এই জে, বিদেশের ওনারা ফেছবুকে চিন্তা-বয়ান ডেলিভারি শুরুই করেন না আর বাংলাদেশের মুনশিরা শুরু কইরা কিছুদিন বেশ ভালোই চালাইতে থাকেন, একটা পশারও হয় ওনাদের, তারপর অমন নোটিশ দিয়া বা না দিয়া ছাড়েন ফেছবুক!

তফাতের কারনটা লইয়া ভাবলাম আমি। তাতে মনে হইলো, আমাদের তো আর কোন পেলাটফর্মই নাই, বহু বিদ্দার বহু মুন্সি থাকে, বিদেশে তাই বহু জার্নালও থাকে--ইতিহাশ থিকা দর্শন বা ইকোনমিক্স, মুনশিরা ঐশব পেলাটফর্মে বাহাছের একটা ছিলছিলার ভিতর থাকে, বড়ো হয়, নয়া ছিলছিলা বানায়; এক বিদ্দা আরেক বিদ্দারে টক্কর দেয়, চ্যালেন্জ করে। কিন্তু আমাদের কেবল কিছু লিটারালি ওয়েব জার্নাল আছে, ঐগুলাও জেহেতু পপুলার ডেইলির কলামিস্টরা কখনোই রেফার করে না, ছাইটেশনের কোন কালচারই জেহেতু নাই আমাদের, তাই ওগুলা মংগল গোরোহ থিকা বেরাউজ করা জাবার মতো পাবলিক/একছেছিবল, আখেরে কিন্তু  রিডার শাড়ে ৩ জন! এর বাইরে আর তো কিছু নাই!

তাই আমাদের মুন্সিদের ফেছবুক ছাড়া তো ভরশা নাই, তাদের লিখবার একমাত্র পেলাটফর্মই তো ফেছবুক! কিন্তু ফেছবুকে তো কেবল মুন্সিদের আনাগোনা না, আমজনতার মস্ত ভার্চুয়াল কেরাউড, এই কেরাউডকে মোকাবেলা করা তো শোজা কথা না, টাইম তো লাগেই, তারচে বেশি হয় ইরিটেশন! গালাগালি থিকা ফাও কথা, টিটকারি এমনকি হুমকি-ধামকি থাকে! অমন একটা মবের ভিতর পইড়া মেজাজ ঠিক রাখা কঠিন বটে! তারপর হয়তো দরকারি কামটাই করার টাইম বা মেজাজ থাকলো না তখন হয়তো তারা ফেছবুক ছাড়ার ডিছিশন লন।

কিন্তু এর ভিতরেই কিছু একটা হাছিল করেন ওনারা; নিজের চিন্তার/বয়ানের তেজ/মহিমা নজরে পড়ে, কনফিডেন্ট হন, ইন্টারনেশনাল জার্নালের দিকে হাটার হিম্মত গজায় তাদের। তার অর্থ, শুরুতেই হয় কি, ওনারা কেবল ইংরাজিতে লেখা শুরু করেন। তারা গ্লোবাল মুন্সি কওমের ছিটিজেন হইয়া ওঠেন।

তখন বিদেশি মুনশিদের লগে একটা নয়া তফাত পয়দা হয়। বিদেশি মুনশিরা  ফেছবুকে ঠিক না থাইকাও তার তার দেশের/কমুনিটির নেটিভ, কিন্তু আমাদের মুনশিরা  নেটিভ কওমের ছিটিজেনই থাকেন না আর!

তো, এইটা কি ভালো হইলো আদৌ? মনে হয় না আমার! আমার মনে হয়,  পপুলার কালচারের লোকেরা জেমনে ফেছবুক ইউজ করে, এই মুন্সিরাও তেমনে করতে পারেন। একজন মুভি আইকন/তারা'র ফেছবুক পোস্টে হাজার হাজার কমেন্ট পড়ে, গালাগালি থিকা টোরোলিং/হুমকি কত কি করে ভার্চুয়াল মব! কয়দিন হয়তো খুবই ইরিটেশনের ভিতর থাকেন, তারপর ওগুলা দ্যাখেনই না, দুনিয়ার শকল জামানায় হরেক কিছিমের মানুশ থাকে--পারভার্ট, খুনি, রেপিস্ট, বাটপার, ছ্যাডিস্ট, কত কি--এইটা তারা মাইনা নিতে শেখেন, নর্মাল হিশাবে ভাবতে শেখেন। কেননা, পপুলার কালচারের একজন তারা ফেছবুকের মতো বিলিয়ন পোটেশিয়াল ফ্যানের লগে কানেকশন ছাড়া কামিয়াব হইতে পারবেন না পেরায়, একটা নেচারাল ভালো লোভও হয় তাদের!

আমাদের মুনশিরাও অমন একটা ভংগিতে মোকাবেলা করতে পারতেন ব্যাপারটা; বড়ো বড়ো কমেন্টগুলা একটু বেরাউজ করলেন, জবাব দেবার মতো পয়েন্ট থাকলে পরের কোন লেখায় জবাব দিলেন, ঐ কমেন্টেই রিপ্লাই না দিয়া... এইভাবে টাইম এবং এনার্জি ছেভ করলেন আর কি!

কিন্তু নেটিভ মানুশের লগে কানেকশনের দরকার আছে, নিজের চিন্তায় নিজের দস্তখত রাখতেও লোকাল/নেটিভ হওয়া খুব কাজে দেয়! নাইলে কেবল ৫/৭ জনের একটা অফলাইন বন্ধু ছার্কেল, আর কয়েকশো ইস্টুডেন্টের চিপায় পইড়া জাইতে পারেন ঐ মুন্সি! তার চিন্তা এবং হিউমার তার ঐ আশপাশের মাপে আটকাইয়া জাইতে পারে, একটা তিরিপ্তি পাইয়া বশতে পারে! তার কোন একটা চুটকিতে হয়তো তার ইস্টুডেন্টরা হাশলো, তার মনে হইলো, 'খুবই উইটি তো আমি!'! কিন্তু বিরাট শমাজে ঐটা হয়তো পুরানা বেশ, ডাল, কখনো বা আনএক্সেপ্টেবল এমনকি! এই ব্যাপারটা বুঝবেনই কানেকশনের অভাবে! এগুলার আল্টিমেট ফল হইলো, উনি আখেরে কোন ইন্টারনেশনাল জার্নালেও ঢুকতে পারবেন না বা ঢুকলেও রেগুলার পোডাকশন থাকবে না, বাজা হইয়া জাইবেন! চিন্তায় জিন্দা থাকতে জেই ছোশিও-পলিটিকেল টেনশনের ভিতর রাখতে হয় জিন্দেগি, তা আর পারবেন না, তাই জিন্দাই থাকবেন না আর...! 

তবে নিজের ইস্টুডেন্টদের ভিতর থাইকা একটা তিরিপ্তির জিন্দেগিরও দাম আছে আলবত, এমনকি ইস্টুডেন্টদের কিছু ঠকাবার বিনিময়ে হইলেও! মানে, জামানার হালচালই জদি ইস্টুডেন্টদের বুঝতে মদদ দিতে না পারেন, ঐটা তো তাদের ঠকানোই! শেই মদদ দেবেন কেমনে, আপনে তো জামানার হালচালের লগে কালেকটেডই না...!

//১২মে২০২২

Comments

    Please login to post comment. Login