সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের স্মৃতিকথা 'মেলানিয়া' সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এটি তার প্রথম স্মৃতিকথা। সদ্য প্রকাশিত এই বইয়ে তিনি নারীদের গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে তার জোরালো সমর্থন, নিউ ইয়র্ক সিটির একটি নাইট ক্লাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম দেখা এবং তার ছেলের অটিজম সম্পর্কে যে 'নিষ্ঠুর' গুজব রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।
২৫৬ পৃষ্ঠার এই বইটির বেশিরভাগ অংশ জুড়েই রয়েছে সাবেক স্লোভেনিয়ান এ মডেলের জীবনের ব্যক্তিগত ঘটনার বিবরণ। তার স্মৃতিকথার মূল বিষয়গুলো নীচে দেওয়া হলো।
১. এই বইয়ে ট্রাম্পের ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্বের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। বইয়ের প্রথম অংশেই মডেল হিসাবে তার কাজ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই পেশা তাকে স্লোভেনিয়া থেকে নিউইয়র্কে নিয়ে আসে এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি দেখা হওয়ার পথ প্রশস্ত করে। তিনি লিখেছেন, '১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরের এক শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির কিট ক্যাট ক্লাবে ট্রাম্পের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। আমাদের কথোপকথন শুরু হওয়ার মুহূর্ত থেকে আমি তার মোহনীয় এবং সহজ-সরল প্রকৃতির দ্বারা মুগ্ধ হয়েছিলাম। ট্রাম্প আমার ফোন নম্বর চাইলেন। কিন্তু আমি তা প্রত্যাখ্যান করে তার নম্বর চাইলাম।'
২. মেলানিয়া তার স্মৃতিকথায় জানিয়েছেন, তার একমাত্র ছেলে ব্যারন ট্রাম্পের অটিস্টিক হওয়ার গুজব তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। বইয়ের একটি চ্যাপ্টারে তিনি এই গুজব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'কমেডিয়ান রোজি ও'ডোনেল সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টে ১০ বছর বয়সী ব্যারনকে অটিস্টিক বলে উল্লেখ করেছিলেন। আমি এই ধরনের নিষ্ঠুরতায় খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। এটা আমার কাছে স্পষ্ট ছিল যে তিনি অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আগ্রহী নন। আমি বুঝতে পেরেছি, তিনি আমার স্বামীকে পছন্দ করেন না বলেই আমার ছেলেকে আক্রমণ করেছেন।'
৩. ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক এই মার্কিন ফার্স্ট লেডি। তার স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্পও সে সময় এই নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে পরাজিত করে জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে। যদিও মেলনিয়া এভাবে সরাসরি অভিযোগ করেননি। কিন্তু তিনি ভোটের ফলাফল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এটি একটি বিশৃঙ্খলা ছিল। আমি একমাত্র ব্যক্তি নই যে এই ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।’
৪. ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার বিষয়েও কথা বলেছেন মেলানিয়া। বইয়ের শেষের দিকে তিনি এই বিষয়ে পাঠকদের সঙ্গে নিজের অনুভূতি শেয়ার করেছেন। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে দ্বিতীয়বারের মত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় তার ওপর দুইবার হামলা হয়েছে। আর টেলিভিশনের সামনে বসে তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন মেলানিয়া। এই অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ডোনাল্ডের রক্তাক্ত মুখ দেখে আমি আতংক বোধ করেছি।’
ট্রাম্পের বেঁচে থাকাকে 'অলৌকিক ঘটনা থেকে কম কিছু নয়' বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
৫. সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সময়ই নারীদের গর্ভপাতের অধিকারের বিপক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। তবে সাবেক ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প তার স্মৃতিকথায় নারীদের গর্ভপাতের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি এটিকে নারীদের একটি মৌলিক অধিকার বলে উল্লেখ করেছেন।
সূত্র: বিবিসি