গল্পের প্রথম পৃষ্ঠা
মারুফ ছিল গ্রামের একটি সাধারণ ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তার একটাই স্বপ্ন ছিল—সে একদিন এমন কিছু করবে, যা তার পরিবার, গ্রাম, এবং দেশের সবার জন্য গর্বের কারণ হবে। কিন্তু তার জীবনে প্রতিনিয়ত বাধা এসেছে, অভাব-অনটনের জীবন, গ্রামের মানুষের নিরুৎসাহিত কথা এবং নিজের সীমিত সামর্থ্য। তবুও মারুফের মনোবল হারায়নি। স্কুলে ভালো ফলাফল করলেও, অর্থের অভাবে শহরে গিয়ে পড়াশোনা চালানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। তা সত্ত্বেও, নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সে প্রতিদিন কিছু না কিছু নতুন শিখতে থাকল, গ্রামে বসেই।
গল্পের দ্বিতীয় পৃষ্ঠা
মারুফের জীবনে একটা বড় পরিবর্তন এলো, যখন গ্রামের স্কুলে এক শিক্ষক এলেন, যার নাম ছিল রাশেদ স্যার। রাশেদ স্যার ছিলেন একেবারে ভিন্ন মনের মানুষ; তিনি সবসময় ছাত্রদের স্বপ্ন দেখতে আর সাহস দিতে উৎসাহিত করতেন। একদিন তিনি মারুফকে বললেন, “তুমি কেন নিজের স্বপ্নকে হার মানতে দেবে? যদি মন থেকে চাও, তাহলে নিজেকে প্রতিদিন আরও শক্তিশালী করতে হবে।” এই কথাগুলো মারুফের মনের গভীরে প্রভাব ফেলল। এরপর থেকে সে প্রতিদিন আরও বেশি পড়াশোনা করা শুরু করল এবং আরও বড় স্বপ্ন দেখা শুরু করল।
গল্পের তৃতীয় পৃষ্ঠা
মারুফ জানল, তার নিজের গ্রামের সমস্যাগুলি সমাধানে যদি কিছু করতে পারে, তাহলে তার পড়াশোনার আসল মূল্য অর্জিত হবে। সে গ্রামের মানুষদের নিয়ে কাজ শুরু করল। গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য ছোট্ট একটি লাইব্রেরি তৈরি করল, যেখানে গ্রামের অন্য শিশুরাও এসে পড়াশোনা করতে পারবে। প্রথমে গ্রামের অনেকেই তাকে উৎসাহ দেয়নি, কিন্তু ধীরে ধীরে তার কাজের গুরুত্ব সবাই বুঝতে পারল। রাশেদ স্যারের সহায়তায় সে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে শুরু করল এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায় করতে থাকল।
গল্পের চতুর্থ পৃষ্ঠা
সময়ের সাথে সাথে মারুফের কাজের পরিধি বেড়ে গেল। গ্রামের মানুষের কাছে তার অবস্থান বেড়ে উঠল। একদিন, সরকার থেকে ঘোষণা এলো যে, গ্রামের অবদানের জন্য তাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হবে। সেই মুহূর্তে, মারুফ অনুভব করল যে তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তার অর্জন দেখে গ্রামের সবাই গর্বিত হলো। শুধু গ্রাম নয়, পুরো দেশ তার নাম জানতে পারল। এই সফলতার পথে সে শিখল যে, যদি মন থেকে কিছু করার ইচ্ছে থাকে এবং কঠোর পরিশ্রম করা যায়, তাহলে সফলতা আসবেই।
"অন্ধকারের শেষে আলো" নামক এই গল্পটি আমাদের শেখায় যে, জীবন যতই কঠিন হোক না কেন, সত্যিকারের ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সমস্ত বাঁধা অতিক্রম করা সম্ভব।