জীবনে মানুষ কতকিছু ছেড়ে দেয়, ছেড়ে যায়। স্বপ্ন, প্রিয় জায়গা, বিশ্বস্ত হাত, আরো কত কী। আমি ছেড়েছি মানুষ।
আমি জানি, মানুষ সুন্দর, একইসাথে অসুন্দরও। তবে এসব সুন্দর-অসুন্দরের ঊর্ধ্বে গিয়ে আমি সমস্ত সঙ্গ ছেড়েছি নিজের শান্তির জন্য। যা একসময় আমাকে শান্তি দিতো, তা-ই এখন আমাকে ক্লান্ত করে তোলে। কী অদ্ভুত মানবজীবন।
সবকিছু ছেড়ে এসে যখন একটু জীবন বিছিয়ে দিতে চেয়েছি শীতলপাটিতে, তখন কেউ এসে ঘাসের জমিন বিছিয়ে দিয়েছে সেখানে। আমাদের ভেতর দারুণ বন্ধুত্ব হয়েছে। যদিও এখন মানুষের সঙ্গ আমাকে ক্লান্ত করে তোলে, তবু অনেকদিন বাদে যখন শহর ঘুরতে বের হলাম এক বিকেলে, দেখি সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, আরো কত কত ফুল ফুটেছে চারপাশে। ফুলগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হলো, এসব ফুরফুরে বিকেল আর বাহারি রঙের ফুলের পসরা যদি ওই মানুষটার সাথে দেখতে পারতাম, তাহলে বোধয় আরও ভালোলাগতো। কিন্তু আমাদের তো একসাথে ফুল দেখার কথা ছিলো না। তাহলে কেন অপার সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়িয়ে তার অভাববোধ হলো? তবে কি তাকে ভালোবাসি? না না, ভালোবাসা তো অনেক বড় ব্যপার। হয়তো কিছুটা মায়া জন্মেছে, নির্ভরতাও। আমার তো বিগত প্রেমের ক্ষ ত ই শুকোয়নি এখনও, নতুন করে আবার কীভাবে ভালোবাসা সম্ভব কাউকে। ভালোবাসার অনুভূতিটাই তো ম রে গেছে একেবারে।
অথচ কী অদ্ভুতভাবে অতীত আর বর্তমানে বেঁচে আছি। বর্তমানের ডার্ক সার্কেলে ঘেরা ক্লান্ত জীবন দেখে মনে হয়, তার মুখে হাত বু লি য়ে দেই, হাত ধরে বলি আমি আছি, থাকবো। একইসাথে অতীতের কথা মনে পড়ে রোজ নিয়ম করে, যাকে একদিন প্রশ্ন করেছিলাম- আমাকে যদি কোনো গান উৎসর্গ করতে বলি, কোন গানটা উৎসর্গ করবে? সে বলেছিল- "ধরো যদি হঠাৎ সন্ধ্যে, তোমার দেখা আমার সঙ্গে। বাইরে তখন হাওয়া ঝড়ো, তুমি হয়ত অন্য কারও...."
কী এক হ ত চ্ছা রা জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা আমার। অন্য কারও হওয়া তো দূরের কথা, আমি তো নিজের জন্যও আর এতটুকু অবশিষ্ট নেই। কোথায় যেন হা রি য়ে গেছি। ফেরার পথ খোলা নেই.....
143
View