মায়ের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেছে ছোট্ট ছেলে। একমাত্র মামার বিয়ে।
আজ গায়ে হলুদ। পরশু বিয়ে।
দুপুরে মামার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হলো। বাড়ির ছাদে। ছোট আকারে।
রাতে কনের গায়ে হলুদ। কমিউনিটি সেন্টারে বিশাল আয়োজন। নতুন পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে, নতুন স্যান্ডেল স্যু পায়ে মায়ের সঙ্গে সেই অনুষ্ঠানে গেল ছোট্ট ছেলেটি। তার মায়ের সাজও আজ চোখে পড়ার মতো। মাকে অনেক সুন্দর লাগছে। টিভিতে দেখা অভিনেত্রীদের মতো।
আজ মা তার হাত ধরে হাঁটছে। সেও কোলে ওঠার আবদার করছে না।
ছোট্ট মানুষ, নতুন জুতো, টাল সামলাতে না পেরে পড়ে গেল ছেলেটি। ডান হাতের কনুইয়ে ছিলে গেল খানিকটা। তার কান্না শুনে এগিয়ে এলেন একজন বয়স্ক নারী। ঘটনা শুনে ঝটপট নিয়ে এলেন বাটা হলুদ। লাগিয়ে দিলেন ক্ষতস্থানে। এরপর মিষ্টি করে হেসে তিনি বললেন, কিচ্ছু হয়নি। এতটুকু ছিলে গেলে কিচ্ছু হয় না। হলুদ লাগিয়ে দিয়েছি, ঠিক হয়ে যাবে।
মা পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে দিয়েছিল। সেটি নামিয়ে দিয়ে ছেলেটি বলল, মা, হলুদ লাগালে কী হয়?
হলুদ হলো অ্যান্ট্রিসেপটিক। ব্যথা কমায়। এতে কষ্ট কম হয়। মা বলল।
হবু মামীর গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান খুবই জমজমাট হলো।
রাতে মা ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া সময় ছেলে বলল, বিয়েতে কী মারামারি হয় মা? কনে অনেক ব্যথা পায়?
হঠাৎ একথা বলছো কেন?
না, মামীকে সবাই যেভাবে হলুদ মাখিয়ে দিলো।
মা ছেলেকে আকড়ে ধরে বলল, হ্যাঁ রে বাবা। বিয়ে মানে তো সারাজীবনের লড়াই। মানিয়ে নেওয়ার লড়াই। কনে তার মা-বাবা, পরিবার ছেড়ে আসে। তার ব্যথাও বেশি। কষ্টও বেশি।
তার মানে বিয়েতে অ্যান্ট্রিসেপটিক হলো গায়ে হলুদ। ছোট্ট ছেলেটি ঘুম জড়ানো গলায় বলল।
মা আপনমনে হেসে ছেলের চুলে বিলি কেটে বলল, হয়তো তাই...। আর কথা নয়। তুমি এখন ঘুমিয়ে পড়ো বাবা।