আজকের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার লিড নিউজে চোখ বুলালে নিজেকে স্থির রাখা যায় না। মনটা বিষন্ন হয়ে যায়। ভয়ানক মন খারাপেরা ঘিরে ধরে। কারো হাত নেই, পা নেই, দৃষ্টিশক্তি চিরতরে হারিয়েছেন। এরমধ্যে আমাদের সহকর্মী সৈয়দ হাসিবও আছেন। বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে জীবন পার করছেন। অনেকের ভাগ্যে ছিটেফোঁটাও সহায়তা জোটেনি। সরকার সাহায্য করেনি, পেশাজীবীদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান ফিরেও তাকায়নি। পরিবারের ভরণপোষণ দূরে থাক চিকিৎসার জন্য সামান্য অর্থও অনেকেই জোগাড় করতে পারছেন না। ঋণের দায়ে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। এমনসব ট্রমাটাইজড মানুষকেও কিনা দাবি আদায়ে রাস্তায় নামতে হয়! গণ-আন্দোলনে অংশ নিয়ে ছাত্র-জনতা কী অপরাধ করেছিলেন?
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কে?
কী তাঁর বিত্তান্ত! পঙ্গু হয়ে যাওয়া বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য তাঁর দিলে এতটুকু রহম নাই? নাকি আইলাম গেলাম খাইলাম এইসবই সার?
শত কোটি টাকার জাদুঘরের চেয়ে সহৃদয়বান হয়ে একজন বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোও অধিক পুণ্যের কাজ। নাম্বার ওয়ান রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপূর্ণ কাজ। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে আপনারা স্বপ্নের মসনদ পেয়ে গেলেন, সেই রক্তের বন্দনা করবেন না, তাই কি হয় নাকি?
আমরা বিশ্বশান্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টার ভাষায় 'থ্রি জিরো'র কথা বলব। কার্বন, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূর করা খুবই দরকার। কিন্তু দেশের একটা 'জিরো'ই আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে। সকল 'অশান্তি' দূর করা। ওটাই আমাদের আরাধ্য।
লাস্ট রেজিম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পড়ে ছিল। দিনরাত একই জল্পনা-কল্পনা-স্বপ্ন জপত।
আপনারাও ঘুরেফিরে ওই এক জায়গাতেই আটকে আছেন। গণ-আন্দোলনে কোনো ত্যাগ স্বীকার যারা করেনি, কিছুই যারা হারায়নি; সেই তাঁরা ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে গিয়ে গলা চড়াচ্ছেন, শেখ মুজিব মাফ না চাইলে নাকি তাঁর একাত্তরের আগের ভূমিকা তামাদি হয়ে যাবে! হাউ রিডিকুলাস! সমালোচনার উর্ধ্বে কেউ নয়, তাই বলে কারো সুকর্মও এককথায় বাতিল হয়ে যায় না। দুটোই রাখতে হবে। ভুলের উর্ধ্বে পৃথিবীর কেউ আছে নাকি?
আসলে আপনাদের GOAL কী?
সংস্কার কতদূর? নির্বাচনের কী হালহকিকত? আপনাদের টার্গেট পয়েন্ট কোনটা? আমরা সমস্বরে জানতে চাই!
লেখক: সাংবাদিক
১৪ নভেম্বর ২০২৪