Posts

চিন্তা

ক্ষমা ও পুনর্মিলনের বয়ান!

November 14, 2024

ফারদিন ফেরদৌস

বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়েছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

গতকাল সন্ধ্যায় শেখ মুজিবের ছবি পেছনে রেখে মুজিববাদী রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের হাতে দেশ ও সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছিলেন মিস্টার আলম।

ছবি সরানোর স্মারক হিসেবে আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের তোলা একটি ছবি ছাপিয়ে নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, 'The photo of Sheikh Mujibur Rahman- Post '71 Fascist, is Removed from Darbar Hall. It is a shame for us that we Couldn't remove his pictures from Bangabhaban after the 5th of August. Apologies.  But, he Won't be seen anywhere till people's July spirit lives on.  

BAL must acknowledge and apologise for what Sheikh Mujib and his Daughter have done to the people of Bangladesh, starting from Non- democratic '72 constitution to famine, laundering of Billions and extrajudicial killings of thousands of dissidents and opponents (72-75, 2009-2024). Then, we can talk about Pre '71 Sheikh Mujib. Without apologies and Trials of fascists, there Won't be any kind of reconciliation.'

প্রথম আলো জনাব মাহফুজ আলমের নতুন বয়ানের অনুবাদ ছেপেছে। তারা জানাচ্ছে, মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘’৭১-পরবর্তী ফ্যাসিস্ট নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দরবার হল থেকে সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তাঁর ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু মানুষের মধ্যে জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাঁকে কোথাও দেখা যাবে না।

শেখ মুজিব ও তাঁর মেয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যা করেছেন, তার জন্য আওয়ামী লীগকে অবশ্যই দায়স্বীকার করতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে—অগণতান্ত্রিক ’৭২-এর সংবিধান থেকে শুরু করে দুর্ভিক্ষ, হাজার হাজার কোটি অর্থ পাচার, হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা (১৯৭২-’৭৫, ২০০৯-’২৪)।

তাহলেই আমরা ’৭১-এর আগের শেখ মুজিবের কথা বলতে পারি। ক্ষমা প্রার্থনা ও ফ্যাসিস্টদের বিচার ছাড়া কোনো ধরনের পুনর্মিলন হবে না।

এই প্রেক্ষিতে Wahid Uz Zaman নামে এক অনুসারী লিখেছেন, 'ভাই এইটা কি ছেলেভুলানো কাজ হলো না? যদি মুজিববাদীরা উপদেষ্টার গদিতেই থাকে তাহলে মুজিবের ছবি সরিয়ে কী লাভ?
উত্তরে মাহফুজ আলম লিখেছেন, 'আমি কাউকে ভুলাচ্ছি না। আমি আমার গিল্ট থেকে মুক্ত হলাম।'

Guilt মানে অপরাধবোধ। 
আমরা সবাই চাই অপরাধবোধ থেকে মুক্ত হতে। কিন্তু কোনটা অপরাধ আর কোনটা তা নয়, এটি খুবই আপেক্ষিকতা দোষে দুষ্ট হয়ে যায়, যেখানে আসল সত্যটা স্বীকার করে নেয়া হয় না।

Apologies and reconciliation বিষয়ে নতুন প্রজন্মের বয়ান নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবতে বসতে পারে। ১৯৭২-’৭৫ এবং ২০০৯-’২৪ কী কী হয়েছে মাহফুজ আলমদের চেয়ে বেশি জানে আওয়ামী লীগ। ভুল স্বীকার থেকে যদি পুনর্মিলন হয়, ক্ষতি কী? কিন্তু কোনটা ভুল আর কোনটা শুদ্ধ সেই বিচার কে করবে? যারা এখন কথা বলছে তারাই যে নিরঙ্কুশ শুদ্ধ মানুষ সেটাই বা কিভাবে প্রমাণিত হবে?

লেখক: সাংবাদিক 

১২ নভেম্বর ২০২৪

Comments

    Please login to post comment. Login