সবার আগে আমি মানুষ
হঠাৎ একদিন বিকেল বেলা
যখন সাদা মেঘ গুলো হাওয়ায় ভাসতে ছিল
নীল আকাশ উকি দিচ্ছিল তার গভীরতা নিয়ে
সেদিন আমি ইচ্ছে করেই পাখি হয়েছিলাম
দূর থেকে ফসলের সবুজ চোখে মাখবো বলে
বাতাসে কাশবনের দোলায় দুলছিল
চতুর্দশী বালিকা
আমি পাখির চোখে দেখেছিলাম তারে
হারিয়েছিলাম তার কাশবনের সাথে পাল্লা দিয়ে ওড়া দীঘল কালো চুলের ভাজে
সবার আগে আমি মানুষ
আমি একদিন ইচ্ছে করেই বট বৃক্ষ হয়েছিলাম
বুকে লালন করেছিলাম হাজার বছরের দু:খের আগুন
কত শত ঘটনার সাক্ষ্য
তবুও দিয়েছিলাম চৈত্রের দাবদাহে দুদন্ড
ছায়ার তৃপ্তি
পথিকের ক্লান্তির অবসান করেছিলাম
দিয়েছিলাম শ্রান্তির অবকাশ
আমার বড় প্রাপ্তি
পথিকের মুখে শোনা তৃপ্তির শব্দ আহ!
সবার আগে আমি মানুষ
তারপরে সময় যখন এমন
আমার পূর্ণ যৌবন
আমি সেজেছিলাম শিশু
খালি পায়ে, দুর্বা ঘাস মাড়িয়ে আমি
নিশ্চিন্তে শীতের সবুজ শাক জড়িয়ে ধরে
হারিয়ে কল্পনায় বিভরে
বিকেলে এসে মায়ের কাছে দিতাম নিরুপায়ের হাসি,
পরের দিনে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে ছুট পালিয়ে
রক্ষে নেই পন্ডিত মশাইয়ের বেতের ঘা
তবুও কি শান্তি
সবার আগে আমি মানুষ
একদিন কি করে যেন
মস্ত বড় অভিনেতা বনে গেলাম
মঞ্চ দাপিয়ে মঞ্চ কাপিয়ে
প্রেমিকার সামনে দাড়ালাম
সেকি রোমান্টিক দৃশ্য
কেউ কখনো করেনি
নিজের দর্শক নিজেই যখন
মনে মনে
দিয়েছিলাম অজস্র হাত তালি।
আমি বিমোহীত আমি পারি
সবার আগে আমি মানুষ
তারপরেও সবার আগে আমি মানুষ হবো।