বাংলাদেশের অবৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ইউনুস একটি ভাষণ দিয়েছেন জাতির উদ্দেশ্যে।টেলিপ্রম্পটারে দেখে দেখে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তিনি বলে যান একটানা ৩৪ মিনিট।
☞প্রথমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের লাখো লাখো শহীদকে আধাবাক্যে স্মরণ করেন;তার খুব কষ্ট হয় মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যাটা উল্লেখ করতে।চরম নারী বিদ্বেষী নারী নির্যাতক হিসেবে এগিয়ে থাকা ইউনুসের পরিবারের ইউনুসের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ৪ লাখ মা বোনের কথা ভাষণে উল্লেখা হবে না তা মেনেই নিয়েছি।
☞এরপর শুরু হয় তার জুলাই এনার্কি নিয়ে বন্দনা।এবার তাদের নিজেদের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ১৫০০ তে গিয়ে ঠেকেছে।আল্লাহর রহমতে এ সংখ্যা এখনো ৩১ লাখ হয়নি।আহত হয়ে গিয়েছে ১৯০০০,শীঘ্রই তা ৫০০০০ হয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
☞উনি দেয়ালে দেয়ালে দৃকের শহীদুলের ট্রেনিং এ দেবাশীষ ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে ছেলেমেয়েরা যেসব আঁকাআঁকি করেছে তাকে অল্পের জন্য পিকাসোর গুয়ের্নিকা বলে ফেলেননি ভাষণ,এবার কাঁদেননি বলে ধন্যবাদ।
☞তাদের এনার্কিতে যেসব এনার্কিস্ট আহত হয়েছে তাদের জন্যে নেপাল থেকে কর্নিয়া আনবেন বলে জানিয়েছেন।ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় তাদের চিকিৎসা চালাবেন বলেননি এটাই অনেক।এই চিকিৎসায়ও না কি বিদেশী সাহায্য লাগবে।গুলি করে আহত করার সময় যে বিদেশীদের সাহায্য নিয়েছেন তাদের কাছে আবার ফান্ড চাওয়া খুব স্বাভাবিক।
☞উনি ৮মিনিট ২৩ সেকেন্ডের সময় বলেছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর যে আক্রমণ তা না কি রাজনৈতিক-যেহেতু সকল সংখ্যালঘু আওয়ামী লীগ করে তাই তাদের উপর সংঘটিত আক্রমণ,খুন,ধর্ষণ,লুটপাট,অগ্নিসংযোগ,ধর্মান্তর সব জায়েজ এমন ই ইউনুসের বক্তব্য থেকে প্রতিভাত হয়।
☞৯ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে বললেন তারা না কি সব ঘটনার তদন্ত করছে-এদিকে ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ঘটা সব ফৌজদারী অপরাধেরও দায়মুক্তি দিয়ে রেখেছেন।পুলিশ হত্যার,লীগের নেতা কর্মী হত্যার,পাহাড়ী হত্যার,সংখ্যালঘু হত্যার কোন বিচার হবে না।
☞নিত্যপণ্যের দাম নাগালের মধ্যে রাখতে সাড়ে ৯ কোটি ডিম আমদানী করেছেন ১০০ দিনে।দিনে ৬লাখ ডিম উৎপাদন এমন পোল্ট্রি যে বন্ধ করে দিয়েছেন শুধু দলীয় বিবেচনায় তা আর ভেঙে বলতে পারেননি।
☞১২ মিনিট ২৯ সেকেন্ডে এসেছেন নির্বাচন নিয়ে আলাপে-ঐক্যমতের মাধ্যমে না কি তা হবে;ঐক্যমত শুধু জামায়াত শিবির বিএনপি ও হিজবুতের এবং অন্যান্য জ'ঙ্গী সংগঠনের সাথে আর্মির হলেই হবে তা মুখ ফুটে বলতে পারেননি।
☞বৈদেশিক মুদ্রার রিভার্জ না কি বিগত সরকার তছনছ করে গিয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য-
(গত ২৯ আগস্ট নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা ২০ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৫৬ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা ২৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।)
তাহলে আগস্টে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার।
আর অক্টোবরে কত ছিল দেখেন
ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ) এখনও ১৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
আমাদের প্রতিমাসে আমদানী ও অন্যান্য ব্যয় মেটাতে হয় প্রায় ৫ বিলিয়নের মতো,তাই এ মুহূর্তে রিজার্ভ আদতে ১১ বিলিয়ন ডলার।
☞উনি বলেছেন তার সরকার না কি একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছে-
আসুন দেখি পূর্বের তিন প্রান্তিকে জিডিপির হার এই চতুর্থ প্রান্তিকের সাথে তুলনা করে
২০২৩-২৪ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা অর্থবছরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কোয়ার্টারে ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ, ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।
অর্থনীতিকে কে ভঙ্গুর করেছে তা তার দেয়া বক্তব্যেই বলা আছে-তারা দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প কারখানা বন্ধ করাতে এ অবস্থা ঘটেছে-২১ মিনিট ১০ সেকেন্ডে নিজেদের প্রশংসার ফাঁকে বলে ফেলেছেন এ কথা
☞তারা এ ক লক্ষ টাকা হজ্ব ব্যয় কমিয়েছেন যাত্রীদের ঘাড়ে খাওয়ার খরচ চাপিয়ে দিয়ে,তাদেরকে মূল হজ্বের জায়গা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে রাখার মাধ্যমে আপনারা সবাই জানেন।
☞তাদের বিরাট সাফল্য সরকারী দফতরে প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার বন্ধ করা।বাজারে পলিথিনের বিকল্প না এনে তা বন্ধে নাটকের আলাপটা ব্র্যাকেটে জানান নাই।
বলেন নাই মুল্যস্ফীতির কি দশা,আমি বলছি
✔অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি নয় দশমিক ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল নয় দশমিক ৫ শতাংশ।
২৪ জুলাই ডলারের রেট ছিল
মার্কিন ১ ডলার ১১৯ টাকা ৩৫ পয়সা ● (ব্যাংক) (বিকাশ)
২১ অক্টোবর ডলারের রেট
মার্কিন ১ ডলার ১২৫ টাকা ৮১ পয়সা ● (ব্যাংক) (বিকাশ/)
➤এবার আসা যাক পুলিশ হত্যা নিয়ে তার ভাষণে কি আছে সে বিষয়ে-
'দেশ সরকার-শূন্য হয় সাময়িকভাবে। পুলিশ প্রশাসন ও এ সময় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে উদ্বেগজনক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছে। বাধ্য হয়ে তাদের অনেকেই গণহত্যায় অংশ নিয়েছেন। খুবই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা জনরোষের শিকার হয়েছেন। এতে তাদের মনোবল অনেক কমে যায়। আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে এনে তাদের আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে অনেক দৃশ্যমান উন্নতিও হয়েছে। আইন- শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও কিছু নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতিতে সহায়তা করেছে।'
◑পুলিশ আইন শৃংখলা রক্ষা করতে গিয়েই এনার্কিস্টদের রোষানলে পড়েছে।যেহেতু এনার্কিকে পুলিশ ঠেকাতে চেষ্টা করেছে তাই প্রধান উপদেষ্টার বিবেচনায় পুলিশের উপর জ'ঙ্গী জামাত শিবির বিএনপির একাংশের (মাহমুদুর রহমান সমর্থিত আইএসের অংশ) আক্রমণ,হত্যা,পোড়ানো,কো'পানো,জ'বাই সব জনরোষ বলে জায়েজ করে দিচ্ছেন।
আপনার পৈশাচিক কাজের তুলনা শুধুই আপনি ইউনুস সাহেব।
যারা আগ্রহ বোধ করেন তারা তার ৩৪ মিনিটের ভাষণটি শুনতে পারেন।প্রতি লাইনের যৌক্তিক উত্তর দেয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে।খুব দীর্ঘ হয়ে যাবে বলে এখানেই শেষ করছি।