খন্ড: ১
১৮১৮ সাল। শীতের মাস। ঘরের ভেতর থেকে আওয়াজ আসলো, মা আমি যাইতাছি। মালা কাকি এহনি আইবো, তারে নিয়া চইলা যাইবা।
মালতির মেয়ে মোহিনী। বাবা নেই মোহিনীর। খুব ছোট বেলায় মোহিনীর বাবা মারা গেছে । মোহিনীর মা
জমিদার বাড়িতে রান্নার কাজ করে। মোহিনী জমিদার বাড়ির আয়োজন অনুষ্ঠানে নাচ করে। বলা যায় বাইজি।
আজ সোমবার। দুপুরের পরে উত্তরের জমিদার বাড়িতে নাচ গানের আয়োজন হয়েছে। সেই আসোরের বাইজি মোহিনী।
খুব চঞ্চল মেয়ে মোহিনী। খলিল টাপুর মোহিনীর প্রধান সঙ্গি। একসাথেই নাচ গানের আসর মাতায়।
মা মোহিনী, আছোনি বাড়িতে? বলল মালা। মালতি বলল, এতক্ষণ ছিল এই মাত্রই বের হইয়া গেল।
মালা: ও আচ্ছা, তাড়াতাড়ি আয় তুই, দেরি হয়ে যাবে তো। আইতাছি রে, এই বলে মালতি বেরিয়ে আসলো। দুজনে একসাথে জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
মালা ও মালতি দুজনেই জমিদার বাড়িতে রাধুনীর কাজ করে। মালা নিঃসন্তান তার কোন সন্তান ছিল না তাই সে মোহিনীকে নিজের মেয়ের মত দেখত।
গল্পে আড্ডায় মেতে উঠেছে গরুর গাড়ি। টাপুর এর গানের গলা খুব ভালো। সুমধুর তার কন্ঠ। জঙ্গলের পাশের ছোট চিকোন রাস্তা ধরে যাচ্ছে তিন জন। ধোয়া কুয়াশার মধ্যে সামনে কি হচ্ছে দেখা যাচ্ছে না। যতই এগোচ্ছি যেন ততই রাস্তা বাড়ছে। গাছে গাছে পাখিদের কলরব, তার সাথে টাপুরের মিষ্টি কন্ঠে যেন মেতে উঠছে গাছ-গাছালি, পাখ- পাখালি। শেষ পর্যন্ত তিন ঘন্টা পর গন্তব্যে পৌঁছলো মোহিনী।