Posts

চিন্তা

বিয়ে নাকি টেস্ট ড্রাইভ?

November 22, 2024

মোহাম্মদ সাকিব (সাকু মিয়া)

এই যুগের ছেলেমেয়েদের কাছে বিয়ে অনেকটা গাড়ি কেনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে, গাড়ি কেনার আগে যেমন মানুষ টেস্ট ড্রাইভ নেয়। এরাও সেরকম বিয়ের আগে টেস্ট ড্রাইভের মাধ্যমে চেক করে নেয়, কে তার জন্য সুইটেবল। তাই এদের এভয়েড করুন।

আপনাদের কারোরই উচিত না স্রোতের জলে গা ভাসানো তথাকথিত ছেলেমেয়েদের বিয়ে করা। যারা অতিরিক্ত সিম্প ধরনের। যাদের মানসিকতা বিকৃত ধরনের।

কেন এবং কাদেরকে এভয়েড করবেন চলুন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানি-

বর্তমান যুগের তথাকথিত কিছু মেয়েদের সমস্যা- 
১ - এরা যে একের অধিক প্রেম করে। এটা কোনো অপরাধ না, তবে অপরাধটা হচ্ছে অন্য জায়গায়। এরা যদি ১০ টা প্রেম করে ১০ জনকেই নিজেদের স্বামী ভেবে নিবে। এবং ১০ জনই মনে প্রানে তাদের ১০ সময়ের স্বামী! জ্বি হ্যা স্বামী, এখনকার মেয়ে শারিরীক এবং মানসিক ভাবে অবিবাহিত থাকে না। মনে প্রানে তারা একাধিক লোকের সংসার করে এরপর তারা সিঙ্গেল হয়। এই ১০ স্বামীর ১০ জনের সঙ্গের চ্যাট গুলো দেখলে বুঝবেন তাদের গভীরতা কেমন। সংখ্যা অবশ্য কম বা বেশি হতে পারে, তবে গভীরতা থাকবেই, প্রেম চলাকালীন সময়ে শারিরীক মেলামেশা কিংবা এ জাতীয় কথা বলে মনের সতিত্ব অলরেডি নেই।

২ - এদের মন প্রেম বিয়ে এসব বিষয়ে অভ্যস্ত, আপনি যখন ভদ্র মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করতে চাইবেন। এখানেই আপনাকে বেগ পেতে হবে। যদি আপনার গার্লফ্রেন্ড কিংবা বউ তথাকথিতদের তালিকায় পরে। যেহেতু তার মস্তিষ্ক প্রেম জাতীয় কিছুতে অভ্যাস্ত সেহেতু তার মস্তিষ্ক নতুনত্ব পাবেনা।
অর্থাৎ আপনার সঙ্গে কথা বললে তার প্রথম প্রেমের মতো আনন্দ হবেনা। কিংবা আপনার নাম শুনলে তার হৃদ স্পন্দন পরিবর্তিত হবে না। আপনার জন্য তার মনে পর্যাপ্ত অনুভূতি থাকবেনা। রাতের গভীরতায় সে তার প্রাক্তনকে ভাববে।  এবং আপনি কটুকথা বললে সে তার প্রাক্তনের সঙ্গে আপনায় তুলনা করবে।

৩- এই যুগের মেয়েরা ছ্যকা খেয়ে অলরেডি মন পুরিয়ে ফেলেছে। বর্তমানে মেয়েরা 5-6 থেকেই প্রেমে ছ্যাকা খাওয়া শুরু করে। অর্থাৎ তাদের মনের মাঝে যে আপনি চলে যাওয়া নিয়ে ভয় থাকার কথা কিংবা আপনায় হারানোর ভয় আসার কথা তা কম আসবে। কারণ এর মস্তিষ্ককে এবিষয়েও অভ্যস্ত করে ফেলেছে।

৪- এরা বয়ফ্রেন্ড পরায়ন হয়ে গেছে। অর্থাৎ প্রেম করার ফলে এ যুগেএ মেয়েদের মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে গেছে। এরা মনে করে প্রেম রোমান্টিক চ্যাট করা, কিংবা কথা বলা। এবং ঘুড়তে যাওয়া। যখনই আপনি ক্যারিয়ারে ফোকাস দিতে যাবেন অথবা বিয়ে করে ফেলবেন তাকে দেখবেন সে আপনায় স্বার্থপর ভাবছে। সে ভাববে আপনি তাকে ভালোবাসেন না। তাকে সময় দিতে চান না। ফলে শুরু হতে পারে পরকীয়া।

৫- এদের অনেক বেস্টফ্রেন্ড থাকবে, যাদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক হবে বেরিগেড ছাড়া। অর্থাৎ এখানে কোনো বাউন্ডারি নেই। এদের কথা থাকে বন্ধুত্বের মধ্যে সব নরমাল। এই নিয়ে আশিশ চাঞ্চলনির ভিডিও ছিলো। যেখানে সে দেখায় জাস্ট ফ্রেন্ডদের মাঝে ফ্রেন্ডলি বাচ্চা হওয়াও স্বাভাবিক। বাস্তবতাও অনেকটা সেরকম।

এবার আসি মুদ্রার অপর পিঠে, এর চেয়ে বেশি সমস্যা আছে ছেলেদের মাঝে। তাদের সমস্যা আমি আরও কাছ থেকে জানি। এই যুগের ছেলেদের চরিত্র বিকৃতির কিছু ব্যখ্যা -

১-  মেয়েদের মতো এরাও ১০ টার অধিক প্রেম করবে। সবাইকেই নিজের স্ত্রী ভাববে। (নাও ভাবতে পারে তবে মনে মনে কুমন্ত্রণা অবশ্যই আসবে কুচিন্তা তো আছেই),  আর একটা ছেলে ১০ টা প্রেম করেছে মানে সে আর মানুষ নাই। সে পশুর কাতারে পরে গেছে। কারণটা এবার বলি- ১০ টা মেয়ে নষ্ট হওয়ার মুল কারিগর ছেলে। এরা মেয়েদেরকে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করবে। এরপর শারিরীক সম্পর্কের জন্য ফোর্স করবে। এদের চোখে তখন স্পষ্ট ভেসে থাকবে এ কি চায়। তবে মেয়ে বুঝবে না। মেয়ে রাজি হয়ে যাবে, এরপর যা হবার তাই হবে। এরা মেয়েদেরকে বিভিন্ন ভাবে ইনফ্লুয়েন্স করে। এবং রীতিমতো বাধ্য করে এসব করতে। অনেকে তো আবার দেখা করতে দেখে এরপর বিভিন্ন ঔষধ খাইয়ে দেই। সুতরাং 'এই যুগের তথাকথিত ছেলে' = 'পশু'।

২- এরা অপরিচিত মেয়েদেরকে এসএমএস দিয়ে বলবে আসো বন্ধু হই। এছাড়া স্কুল কলেজের ফ্রেন্ড তো আছেই। এবার বন্ধু বানিয়ে এসব মেয়েদেরকে নিজের জীবন নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা গল্প বলবে। এরপর ক্লোজ হওয়ার পর অশ্লীল ধরনের কথাবার্তা বলবে। এক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতা বারবে। এরপর এদের মাঝও অনেক কিছু হয়ে যাবে।

৩- কারণ বলা লাগবে না শুধু ঘটনা বলি- প্রতি মাসেই 'লিংক' কথাটি শোনা যাচ্ছে। এর মূল কারিগর কারা?

আর এদের উভয়ের মূল সমস্যা এরা বিয়েকে গাড়ি কেনা মনে করে। এরা চায় টেস্ট ড্রাইভ নিয়ে আগে দেখতে। কোন গাড়ি ভালো, চালিয়ে চেক করে ভালো লাগলে এরপর কিনবে, আর নাহলে আরেকটা গাড়ি দেখবে। নিজে ভালো থাকতে চাইলে এবং সমাজকে ভালো রাখতে চাইলে টেস্ট ড্রাইভ থেকে বিরত থাকুন।
© মোহাম্মদ সাকিব
 

Comments

    Please login to post comment. Login