পোস্টস

গল্প

স্বার্থপর পৃথিবীর স্বার্থপরতার একটি বাস্তব ঘটনা

২৩ নভেম্বর ২০২৪

রহস্যময়ী অচেনা কবি

বর্তমান সময়ে এরকম গল্প প্রতিনিয়ত অনেকে জীবনেই ঘটছে । এটি গল্প বললে ভুল এটি এটি একটি সত্য এটি একটি বাস্তব ঘটনা। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। 

আজকের গল্পটি দুজন প্রেমিক প্রেমিকাদের নিয়ে মেয়েটার নাম জুঁই ছেলেটার নাম জয়।

 

গল্প শুরু করার আগেই বলছি যদি গল্পে লেখায় কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে। তাহলে ক্ষমা করবেন, আমি একজন ক্ষুদ্র গল্প লেখিকা তাই ভুল ত্রুটি হতে পারে।

 

নিষ্ঠুর পৃথিবীর নিষ্ঠুর ভালোবাসা 

 

আচ্ছা আমাদের জীবনে অজান্তে কিছু মানুষ   চলে আসে না চাইতেই কেন আসে আবার কেনই বা চলে যায় কেউ কি বলতে পারেন। হ্যাঁ ঠিক এই ভাবেই জয়ের জীবনে জয় এসেছিল জুই না চাইতেও জয় ওর জীবনের সাথে জুড়ে গিয়েছিল। জয়ের সাথে জয়ের রিলেশন ক্লাস নাইন থেকে এখন জুই ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে, জয় ও জুই এর সাথে পড়েন কিন্তু তারা দুজন দুই কলেজের। বেশ কিছুদিন ধরে জুই দেখছে জয়ের পরিবর্তন, জয় কেমন হয়ে গেছে জানি আগের মতন কথা বলে না জুঁইকে সময় দেয় না জুঁইয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। সেদিন আবার জয়ী দেখেছে জয় অন্য একটি মেয়ের সাথে তখন জুয়ের বান্ধবী রিয়া বলেছিল দেখ জয় অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন করছে কিন্তু যদি বলেছিল হয়তো তার বান্ধবী হবে। কিন্তু আজকাল জুঁইয়ের মনে হচ্ছে জয় অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন করছে, জয় তাকে ঠকাচ্ছে। তাই সে ভাবল জয় কে সে জিজ্ঞেস করবে যে সে কি তাকে ভালোবাসে না। নয়তো সে এমন করছে কেন। এই মনে করে জুই জয়কে একটা কল করল কিন্তু জয়ের ফোনটা। এক আকাশ ভরা শূন্যতা নিয়ে জুই ফোনটা রেখে   দিলো। এখন জুয়ের মনে হাজারটা প্রশ্ন জয় এমন কেন করছে যদি তো আগে জয়কে ভালবাসতো না জয় শুধু জুঁইকে ডিস্টার্ব করত। জুয়ের পিছনে পড়ে থাকত এইভাবে করতে করতে একদিন জুঁই জয়কে ভালোবেসে ফেলল, তাদের সম্পর্কটা তো অনেক দিনের সেই ক্লাস নাইনে থাকতে তাহলে আজ এরকম হয়ে গেল কেন জয়। জুই কখনো ভাবতেই পারিনি সে জয় তার সাথে এইভাবে প্রতারণা করবে জয় তাকে ঠকাবে। আরো বিভিন্ন চিন্তা করতে করতে জুয়ের চোখ থেকে পনি  গড়িয়ে পড়ল। আজ জুয়ের মনটা ভীষণ খারাপ মন চাচ্ছে মরে যাই কিন্তু সে পারবে না মরতে। কেননা সে বাবা-মার একমাত্র মেয়ে সে যদি মারা যায় তার বাবা-মার কি হবে। সে একজন স্বার্থপর প্রতারক নিষ্ঠুর একজন ব্যক্তির জন্য মরতে পারবে না। তাকে বেঁচে থাকতে হবে তার বাবা মায়ের জন্য সে কেন তার জীবন নষ্ট করবে একজন স্বার্থপর প্রতারক ব্যক্তির জন্য এরকম চিন্তা করতে করতে জুঁই তার চোখের পানি গুলো মুছে ফেলল। কিন্তু তার মন মানছে না তাই ভাবল কাল একবার জয়ের কলেজে যাবে। পরের দিন জয়ী তার কলেজের কথা বলে বের হয়েছিল বাসা থেকে এসে গিয়েছিল তার বয়ফ্রেন্ডের কলেজে। কলেজে যাওয়ার পরে সারা কলেজ খোঁজাখুঁজি করে জয়কে কোথাও পায়না। এক আকাশ ভরা কষ্ট নিয়ে জয়কে একবার কল করে। কিন্তু ওপাশ থেকে শোনা যায়, জয় কারো সাথে কথা বলতে ব্যস্ত আছে। জুয়ের চোখে পানি ছল ছল করছে তার পা চলছে না তার কেমন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে এমন সময় জয়ের এক ফ্রেন্ডের জুঁই এর সামনে আসলো। তার নাম দীপ, দ্বীপ বলল আরে জয়ী তুমি এখানে কি ব্যাপার এখানে এসেছ কাউকে খুঁজছো নাকি। জুই মরিয়া হয়ে দীপকে জিজ্ঞেস করল দ্বীপ জয় কোথায় জুঁইয়ের এই প্রশ্ন শুনে দ্বীপ জুঁইয়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বলল জয়-এর তো বিয়ে জয় কোথায় থাকবে নিশ্চয়ই বিয়েতে আছে। এই কথা শুনে জুঁই পুরোই পাগল হয়ে গিয়েছে সে ওখানেই তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফিরে এবং সেই দেখে সে একটি হাসপাতালে দ্বীপ জুঁইকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে এবং দ্বীপের কিছু ফ্রেন্ড আছে তার সাথে। জুঁই বলল জয় এর বিয়ে কোথায় হচ্ছে আমাকে সেই জায়গাটা ঠিকানা বলো। আমি শুধু  জয়কে দেখতে চাই। এটা বলেই প্রচুর কান্না শুরু করে দিল এক পর্যায়ে না পেরে দ্বীপ তাকে জয়ের যেখানে বিয়ে হচ্ছে সেখানে ঠিকানাটা দিয়ে দিল। জঁই  এদিকে ওদিকে না তাকিয়ে কোন কিছু না ভেবে সেখানে চলে গেল যেয়ে দেখে আরেক কান্ড জুয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড আরোহীর সাথে জয়ের বিয়ে হচ্ছে এটা দেখে তুই একদম স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো আশেপাশের লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলো বর-কনে রিলেশন করে। এটা শুনে এবার সত্যিই জুঁইয়ের মনটা  ভেঙে গেল এবং এবার বেঁচে থাকার কোন ইচ্ছেই নেই তাকে শুধু তার ভালোবাসার মানুষটি ঠকাইনি তাকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ও ঠকিয়েছে দুজন একসাথে মিলে ঠকিয়েছে। জুঁই তো আরোহী কে নিজের বোন ভাবতো বন্ধু নয় যেখানে যেত যা করত কিছু হলেই সব কিছুই জুঁই কে বলতো জয়ের সাথে দেখা করার সময়ও যদি থাকতো কখন কখন তাদের মধ্যে এই সম্পর্কটা হয়ে গিয়েছিল জুই নিজেও জানতে পারিনি। আর না বলেছে কখনো জয়,ওই কথায় আছে না কাছের মানুষই পিছন থেকে আঘাত করে। ঐ রকম একটি অবস্থা আছ জুঁই জুঁইয়ের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে । শুধু  তাকিয়ে তাকিয়ে  তাদেরকে দেখছে। সে যে কি ভাষায় কথা বলবে সে বুঝতেও পারছে না । আজ আরোহী যেই জায়গায় বসে আছে এই জায়গায় বসে থাকার কথা ছিল জুঁইয়ের । হঠাৎ করে আরোহীর নজর পড়লো জুয়ের দিকে জুঁইকে দেখে আরোহী  একটা মুচকি হাসি দিল। বলল আরে দোস্ত তুই আসছিস, আমি তোকে আমার বিয়েতে দাওয়াত দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু জয় বলেছে কোন দরকার নেই এর জন্য দেইনি তোকে আমি দাওয়াত দিয়ে নাই তুই কিছু মনে করিস নি তো। জুঁই একটা নিশ্বাস নিয়ে বলল, না কিছু মনে করিনি তো তোদের রিলেশনটা কতদিনের এর মধ্যে জয় সে উত্তর দিল আমাদের রিলেশনটা ছয় মাসের এই কথা শুনে জঁই  বলল তাহলে আমি কি ছিলাম আমার সাথে এমন করলে কেন আমাকে কেন ঠকালে আমাকে কেন মিথ্যে স্বপ্ন দেখালে। জয় বললো, দেখো জুই ওটা ছোটবেলার ভালোবাসা ছিল  তোমাকে ওই সময় ভালো লাগতো । তাই তোমাকে ভালোবাসি বলেছিলাম কিন্তু এখন তো বুঝি সব কিছু ,এখন আর তোমাকে ভালো লাগে না এখন আমার আরোহী কে ভালো লাগে তাই আমি আরোহীকে বিয়ে করছি আর তাছাড়া আমি আরোহী কে ভালবাসি তোমাকে নয়। তুমি এখান থেকে চলে যাও জুঁই। জয়ের কথা শুনে নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে জুঁই এর । জুই চোখ ভরা পানি নিয়ে তাদেরকে সুখী জীবনের জন্য দোয়া করে সে ওখান থেকে চলে আসে তা নিজের বাসায়। সে রাতে এসে ভাত না খেয়ে ঘরে যেয়ে ঘুমিয়ে পরে। জুঁইয়ের মা তাকে অনেক জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে ভাত কেন খাবি না । তোর কে দেখে মনে হচ্ছে তুই অনেক কান্না করেছিস আরো অনেক প্রশ্ন করল কিন্তু জুঁই একটা উত্তর না দিয়ে তার ঘরে চলে যায়। তার মাকে বলে আমার ঘুম পাচ্ছে মা । জুঁই এর মা মনে করে হয়তোবা কারো সাথে ঝগড়া হয়েছে যার জন্য তার মন খারাপ তাই মাও তাকে বেশি কিছু বলে না কিন্তু এটা কি কেউ জানত যে সেই রাতে জুঁই ঘুমাবে আর কখনো সে উঠবে না । পরের দিন সকালে জয়কে অনেক ডাকাডাকি করার পরও যখন জুঁই ঘুম থেকে না উঠে তখন তার বাবা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে জুঁই মারা গিয়েছে । সে কাল রাতে বিষ খেয়েছিল এবং ওখানেই তার মৃত্যুবরণ হয়। হ্যাঁ জুঁই আর নেই জুঁই চলে গেছে এই নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে। যেখানে সে একটু ভালোবাসা চেয়েছিল সেখান থেকেই সে আঘাত পেয়েছে,  তার বিশ্বাসের যোগ্য বেস্ট ফ্রেন্ড যাকে সবকিছু শেয়ার করত সেই তাকে ঠকিয়েছে । আর একটা কথা কি জানেন  মানুষ তিন বেলা ভাত না খেয়ে থাকতে পারে কিন্তু তার ভালোবাসা আর ভাগ মানুষ তার জীবন দিয়ে দিতেও রাজি তবুও কাউকে সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে দিতে রাজি নয়। 

 

আমি জানি আমার এই গল্পটি ফানি না বা ভৌতিক কোন গল্প এর জন্য আমার এই গল্পটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে না। এটি একটি বাস্তব জীবনের সত্যি ঘটনা। এই গল্পটি শেয়ার করার কারণটি হল বর্তমান যুগে এটা প্রতি নিহত হচ্ছে আমাদের আশেপাশে প্রতি নিহত আমরা দেখা যাচ্ছে । তাই আমি গল্পটি শেয়ার করলাম এটা একটি বাস্তব ঘটনা ।

 

যদি গল্পটি ভালো লাগে তাহলে সাপোর্ট করুন