Posts

গল্প

মহোৎসবের ভালোবাসা

November 26, 2024

সাজ্জাদ হোসেন

Original Author সাজ্জাদ হোসেন

57
View

এক শান্তিপূর্ণ গ্রাম ছিল যেখানে প্রতি বছর বিশাল এক মহোৎসব আয়োজন করা হতো। এই উৎসব শুধু আনন্দের জন্য নয়, বরং এটি গ্রামের মানুষের ঐক্য এবং ভালোবাসার প্রতীক ছিল। তবে এবারের মহোৎসবটা অন্য রকম হতে চলেছিল, কারণ সেখানে তৈরি হতে চলেছিল এক অনন্য ভালোবাসার দৃষ্টান্ত।

গ্রামের মৃৎশিল্পী কাশীনাথ ছিলেন তার শিল্পের জন্য বিখ্যাত। তার কুমোরের চাকায় তৈরি করা প্রতিটি মাটির পাত্র, প্রদীপ এবং মূর্তি যেন জীবন্ত হতো। কিন্তু কাশীনাথ একজন নিঃসঙ্গ মানুষ ছিলেন। ছোটবেলায় তার মা-বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ভালোবাসা তার জীবনে কখনো আসেনি।

উৎসবের কয়েক দিন আগে, গ্রামের স্কুলশিক্ষিকা আরতি তার কাছে এলেন। আরতি সুন্দরী এবং বুদ্ধিমতী, কিন্তু তার মন ছিল বিষণ্ন। তিনি কাশীনাথকে বললেন, “উৎসবের জন্য মাটির প্রদীপ বানাও, যা পুরো গ্রাম আলোকিত করবে। তবে একটা বিশেষ প্রদীপ তৈরি করতে হবে, যা ভালোবাসার প্রতীক হবে।”

কাশীনাথ বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কেমন প্রদীপ?”

আরতি মৃদু হেসে বললেন, “একটি প্রদীপ, যা শুধু আলোর জন্য নয়, বরং দু’টি নিঃসঙ্গ হৃদয়কে এক করতে সাহায্য করবে।”

কাশীনাথ সেই প্রদীপ তৈরি করতে শুরু করল। মনের অজান্তেই সে প্রতিটি স্পর্শে নিজের আবেগ ঢেলে দিল। প্রদীপটি শেষ হলে, সেটি ছিল নিখুঁত—মাটি দিয়ে তৈরি হলেও তার শিখা যেন জীবনের শক্তি বহন করছিল।

মহোৎসবের রাতে, আরতি সেই প্রদীপটি কাশীনাথের হাতে তুলে দিলেন এবং বললেন, “তুমি জানো, এ প্রদীপের আলো শুধু উৎসবের জন্য নয়। এটি আমাদের দু’জনের নতুন জীবনের শুরু।”

সেই রাতেই পুরো গ্রাম জানল, ভালোবাসার আলো সবকিছুকে আলোকিত করতে পারে। কাশীনাথ এবং আরতির ভালোবাসার এই দৃষ্টান্ত মহোৎসবকে চিরস্মরণীয় করে তুলল।

Comments

    Please login to post comment. Login