Posts

গল্প

অনেক কষ্টে গল্প পর্ব ১

November 29, 2024

Imran Molla

Original Author Imran Molla

138
View

রিমি:- তোর সাহস কি করে হলো আমাকে টাচ করার..?? একে তো ছোটলোক তার উপরে আবার নোংরা জামা
কাপর। অনেক দিন ধরে দেখতেছি তুই আমার পিছু পরে আছিস। আমি যেখানেই যাই সেখানেই শুধু তোকে
দেখতে পাই। 
শ্রাবণ :-(আমি চুপ করে শুধু শুনে যাচ্ছি)
রিমি:-কিরে কথা বলিস না কেন..??? তোর মতো নির্লজ্জ ছেলে আমি আর দুটো দেখি নাই। আমাদের সারা
ভার্সিটি  তে তোর মতো খ্যাত একটাও নেই। তুই কি করে এখানে ভর্তি হলি…..?? আমাকে একটু বলবি..??
সুমি:-এই আফিয়া চুপ কর। আর কত কথা শোনাবি ছেলেটাকে.?? আর তাছাড়াও..... 
রিমি:-তুই চুপ কর। এদেরকে কিছু না বলতে বলতে এরা মাথায় উঠে গেছে। আর যদি কখনো আমার সামনে
আসিস তাহলে তোর খবর আছে..?? তোকে এমন শিক্ষা দিবো যে আর কাউকে মুখ দেখাতে পারবি না।
আর তোর ভাগ্য ভালো যে তোকে চর দেই নাই। তুই আমার একই ডিপার্টমেন্টের না হলে তোকে আজ চর
মেরে দেখিয়ে দিতাম মেয়েদের টাচ করার ফল। 
এরপর রিমি আর মাহমুদা আমার সামনে দিয়ে হেটে চলে গেল। রিমি এতক্ষণ যে
কথাগুলো বলতেছিল সেগুলো আমাকেই বলেছে। আমি অবশ্য এতে কিছু মনে করি না। আমার
মতো গরীব কিছু মনে করল কি না সেটাতে কারো কিছু আসে যায় না। আর আপনার হয়তো
ভাবতেছেন যে আমি ইচ্ছা করেই রিমির শরীরে টাচ করেছি। যার কারনে রিমি আমাকে
বেশি কথা শুনিয়েছে। আসলে তেমন কিছুই ঘটে নাই। আমি রোজকার মতো কলেজ গেট দিয়ে
কলেজের ভিতরে ঢুকছিলাম তখনই খেয়াল করি যে রিমি মোবাইল টিপতে টিপতে রাস্তা পার
হচ্ছিল আর তখনই একটা গাড়ি রিমির দিকে এগিয়ে আসতেছিল। আফিয়ার সেদিকে কোন
খেয়াল ছিল না। তাই আমি বাধ্য হয়ে দৌড়ে গিয়ে রিমিকে টেনে রাস্তার পাশে নিয়ে আসি।
আর তখনই রিমির বন্ধবি সুমি চলে আসে। আর রিমি আমাকে উপরে কথা গুলো শুনিয়ে দেয়। 
আমি মুখ বুজে সব কথা শুনতে লাগি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি আপনাদেরকে
এই কথা গুলো বলতেছিলাম। তাই আর সেখানে না দাঁড়িয়ে মুখে একটা হাসি দিয়ে কলেজের
ভিতরে গেলাম। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ক্লাসের সময় হয়ে গেছে। তাই আর দেড়ি না করে
নিজের ক্লাসের দিকে হাটা দিলাম। আসুন এর মধ্যে আপনাদেরকে আমার পরিচয়টা দিয়ে দেই।
আমি শ্রাবন আহমেদ ইমন। পরিবার বলতে কিছু নেই। মানে এক কথায় এতিম ছেলে। দশম শ্রেনিতে
বসে আমার আব্বু এবং আমার আম্মু একটা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এর পর থেকে আমি একা। এখন
আমি সবেমাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি কয়েক মাস। আমি আর আমার একটা বন্ধু ঢাকা শহরের ছোট
একটা বাসায় ভাড়া থাকি। কোন মতে আমার দিন চলে যায়। আপাতত এইটুকু আর বাকিটুকু গল্প
পড়তে পড়তে জেনে যাবেন।কথা বলতে বলতে আমি ক্লাস রুমে চলে এলাম। এসে দেখি সবাই ক্লাসে
বসে আছে। আমি রোজকার মতো আমার সিটে গিয়ে বসে পরলাম। এই সিটে শুধু আমি আর আমার বন্ধু
রাফি বসে। আর কেউ বসে না। কারনটা আবশ্য আমার জানা। কারন আমি ছোট লোক। আর
ছোটলোকের কাছে বসতে সকলেরই একটু মানসম্মানে লাগে। আর আজকে রাফি ভার্সিটি আসে নাই ।
তাই আমি একা একা বসে আছি। ঠিক তখনই একটা অচেনা মেয়ে এসে আমার পাশে বসে পড়ল। আমি
এক পলক মেয়েটার দিকে চেয়েছিলাম। আগে কখনো দেখি নাই। তবে দেখতে অনেক সুন্দর। আমি
অনেক অবাক হলাম। অবাক হওয়ার অনেক গুলো কারন রয়েছে। তার প্রধান কারন হচ্ছে ক্লাসে আরো
অনেক সিট ফাকা আছে। সেই সব সিটে না বসে কেন এই মেয়েটা আমার পাশে এসে বসল। আর কে
এই মেয়ে.?? আগে তো কোন দিন আমি দেখি নাই। তাই অনেক অবাক হলাম। কিন্তু তারপরেও
মেয়েটার দিকে তাকাতে সাহস পাচ্ছি না। আশে পাশে তাকিয়ে দেখি অনেকে আমার দিকে অবাক চোখে
তাকিয়ে আছে। এটার কারন হয়তো এই মেয়েটা।
এইগুলো ভাবতেছিলাম তখনই স্যার ক্লাসে আসলেন। আমি আর কিছু না ভেবে ক্লাসে মন
দিলাম।ক্লাসে এসেই স্যার বললেন,,,--- আদিবা তুমি দাড়াও। (আমার পাশের মেয়েটির
দিকে চেয়ে স্যার বললেন)আর সাথে সাথে আমার পাশের সিটে বসা মেয়েয়েটি দাঁড়িয়ে গেল।
বুজলাম মেয়েটার নাম আদিবা। এখনো আমি মেয়েটির দিকে ভালো করে চেয়ে দেখি নাই ।
স্টুডেন্ট এই হচ্ছে আদিবা তোমাদের নতুন ফ্রেন্ড আজকেই ভর্তি হয়েছে। এখন থেকে
তোমাদের সাথেই পড়াশোনা করবে। (স্যার)এরপর স্যার নিজের লেকচার দিতে শুরু
করলেন। বুজলাম মেয়েটা নতুন তাই হয়তো না জেনে শুনে আমার পাশে বসেছে। জানলে
হয়তো কোন দিন আমার পাশে বসতো না। আমি মন দিয়ে স্যারের ক্লাস করতে লাগলাম।
এইভাবে প্রথম ক্লাস শেষ হয়ে গেল। আমি ক্লাসের বাইরে যাবো তখনই আদিবা আমাকে
বলল,,--
আদিবা:- হ্যালো,,,আমি আদিবা। (আমার দিকে হাত বারিয়ে বলল)--
শ্রাবণ:- আমি শ্রাবন আহমেদ।
(হাত না মিলিয়ে)-
আদিবা:- আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি..?? 
শ্রাবণ:- হাহাহাহাহাহা,,, (আমি হেসে
দিলাম)--
আদিবা:- একি তুমি হাসতেছো কেন..?? 
শ্রাবণ :- আপনি নতুন তাই আমাকে ঠিক ভাবে
চিনেন না। আর কয়েকটা দিন ক্লাস করুন সব জেনে জাবেন। আর আমাকে ফ্রেন্ড বানানোর
কথাও বলবেন না। 
আদিবা:- প্রথম কথা আমরা একই ইয়ায়ে পড়ি,,সো আপনি করে নয় তুমি করে বলতে হবে। আর দ্বিতীয়ত
তুমি আমাকে ফ্রেন্ড বানাবে। 
আদিবা:- সেটা সম্ভব নয়। আমি এখন আসি,,,(এই বলে আমি
বাইরে চলে এলাম। আর মেয়েটাও আমার সাথে সাথে এলো।)ভাবতেছি আজকে বাসায় চলে
যাবো। কারন রাফি আসে নাই। তাই খুব একা একা লাগতেছে। একা থাকাটা যে কতো কষ্টের
সেটা আমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না। এগুলো ভাবতেছিলাম ক্যাম্পাসের একটা গাছের
নিচে বসে। হটাৎ করেই কোথা থেকে যেনো আদিবা আমার সামনে এসে বলল,,,--
আদিবা:- কেন সম্ভব নয়..??? তোমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করা। শ্রবণ:- অনেক কারন আছে। 
আদিবা:- কি কারন আমি সেটা শুনতে চাই।
শ্রাবণ:- আপনার পোশাক দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে আপনি অনেক বড় ঘরের মেয়ে। আর আমি খুবই সামান্য একটা ছেলে। যাকে এক কথায় বলে গরিব ছেলে।
আদিবা:- এটাই কি একমাত্র কারন..???
শ্রাবণ:-হুম,,
,আদিবা:-- তাহলে মন দিয়ে শুনো,,,
"সস্তা কাপড় পড়ার মানে এটা নয় যে আপনি গরিব। মনে রাখবেন; আপনার একটা পরিবার
রয়েছে। পরিবারের সদস্যের দায়িত্ব আপনার উপরে। সমাজকে দেখিয়ে বেড়ানো আপনার কাজ
নয়। "এটা আমার আব্বুর কথা। এইটা থেকে কি বুঝলে আমাকে বলো। আদিবা:-কিছু বুঝি আর না বুঝি এইটা ঠিকই বুজেছি যে আপনার আব্বু একজন মহৎ মানুষ। 
তাহলে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে অসুবিধা কোথায়.???
শ্রবণ:-আরো কারন আছে। 
আদিবা:- কি কারন..??
---
শ্রবণ:-আমাকে কলেজের সবাই খ্যাত বলে। একজন খ্যাতের সাথে বন্ধুত্ব করলে আপনার অসম্মান হবে। 
আদিবা:-সেটা আমি বুঝব। এখন থেকে আমরা ফ্রেন্ড এটাই শেষ কথা। 
---
শ্রাবণ:- আচ্ছা।
আমি অনেকটা বাধ্য হয়ে আদিবার সাথে বন্ধুত্ব করলাম। আজ পর্যন্ত কেউ আমার সাথে যেচে
এসে বন্ধুত্ব করতে চায় নি। শুধু মাত্র আদিবা আজকে এসে আমার সাথে যেচে বন্ধুত্ব করল।।
আদিবা:-চলো ক্লাসে যাই। স্যার চলে এসেছেন মনে হয়। 
---
এরপর আমি আর আদিবা সোজা ক্লাসে চলে এলাম। ক্লাসের সবাই আমাদের দিকে চেয়ে
আছে। হয়তো আমরা দুজন একসাথে ক্লাসে ঢোকার কারনে। আমি সেই দিকে খেয়াল না করে
নিজের সিটে গিয়ে বসলাম।
এইভাবে দেখতে দেখতে আজকের দিনটা কেটে গেল। মানে আজকের মতো ভার্সিটি ছুটি।
ভেবেছিলাম দুই ক্লাস করে বাসায় চলে যাবো। কিন্তু আদিবার সাথে গল্প করতে করতে বাসায়
যেতে ইচ্ছে করছিল না। তাই যাই নি। পুরো ক্লাস করেছি। আদিবা মেয়েটা অনেক ভালো। অনেক
খোলা মনের মানুষ। এই টুকু সময়েই যেনো আমার অনেকটা জায়গা জুরে বসেছে।
আমার বাসা আর আদিবার বাসা বিপরীত দিকে। তাই দুজন দুজনকে বিদায় জানিয়ে বাসার দিকে
রওনা দিলাম। আজকে আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন গুলোর মধ্যে একটা দিন ছিল। তার
কারন রাফি বাদে আজকে দ্বিতীয় কেউ আমার সাথে এমন ভালো ব্যবহার করেছে। তাই আমি সারা
রাস্তা আদিবার কথা ভাবতে ভাবতে বাসায় হেটে চলে এলাম। বাসায় এসে কলিং বেল বাজানোর
পরে রাফি এসে দরজা খুলে দিল,,,--
রাফি:- কিরে আজকে এতো দেড়ি হলো যে..???? 
শ্রাবণ:-আগে ফ্রেশ হয়ে নেই,, তারপর সব বলতেছি। 
---
রাফি:-আচ্ছা,,,ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়,
---
শ্রাবণ:-হুম,,,তুই খেয়েছিস..??
রাফি:-না,,তোকে ছাড়া আমি খেয়েছি কখনো.??? 
শ্রাবণ:-হুম,,,আমাত তো মনেই ছিল না।।।

এরপর আমি ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে বসলাম,,--

- রাফি:- এইবার বল কি হয়েছে ???
শ্রাবণ:-জানিস বন্ধু,,আজকে একটা মেয়েকে সাহায্য করতে গিয়ে নিজেই অপমানিত
হয়েছি। 
রাফি:- কিহ.??? আর কোন মেয়েকে.??
শ্রাবণ :- আফিয়া... . 
রাফি:-কোন রিমি.???? আমাদের ব্যাচের..?? 
শ্রাবণ:-- হুম,,,,,
রাফি:--- বন্ধু মন খারাপ করিস না,,,বড়লোকের ছেলে মেয়ে গুলো
এমনই হয়ে থাকে। ওদের চোখ থাকতেও অন্ধ। (
শ্রাবণ :- হুম,,,বাদ দে এই সব।
রাফি:-হুম,,। 
শ্রাবণ :-- আর আজকে আরো একটা অবাক বিষয় হয়েছে আমার সাথে।
রফি:- হয়েছে.??? সবটা খুলে বললাম (আদিবার কথা )
রাফি:- দেখিস.. এদের কিন্তু বিশ্বাস নেই। 
শ্রাবণ:-- হুম,,এরপর আমি আর রাফি বাসার বাইরে বের হলাম দুজনে একসাথে। এই সময়ে বাসার
বাইরে বের হওয়ার একটাই কারন। আর সেটা হলো টিউশনি।
আমি আর রাফি দুজনেই টিউশনি করাই। আর এভাবেই আমাদের জীবন চলছিল।।।।
রোজকার মতো আজকেও ঠিক সময়ে টিউশনি করাতে গেলাম। আমি যাদের বাসায়
টিউশন করাই তারা অনেক ভালো মানুষ। ভালো মানুষ না হলে কোন দিন আমার মতো
একটা অপরিচিত ছেলেকে তাদের বাসায় টিউশনি করাতে রাখত না। সময় মতো টিউশনি
করিয়ে রাস্তায় বের হলাম। মোবাইলে তাকিয়ে দেখি রাত ৮ টা বেজে গেছে।
আমি রাফিকে ফোন দিলাম,,-
শ্রাবণ:-- হ্যালো,,তোর টিউশনি শেষ হলো..??
রাফি:-হুম এইমাত্র রাস্তায় বের হলাম। তোর কি খবর..??
---
---
শ্রাবণ:-হুম আমিও এইমাত্র টিউশনির বাসা থেকে বের হলাম।
রাফি:-ওহহ,,, শরীরটা খুব ক্লান্ত লাগতেছে আজকে। 
---
শ্রাবণ:-ওকে,,তাহলে চল আজকে বাসার ছাদে বসে একটু আড্ডা দেই। রাতের ঠান্ডা বাতাসে
শরীর ও মন দুটাই ভালো হয়ে যাবে।
--
রাফি:-হুম,,এটা তুই একদম ঠিক বলেছিস। কিন্তু... 
---
শ্রাবণ:-আবার কিসের কিন্তু.... (আমি)
রাফি:-আরে,,বাড়িওয়ালা আছে না,,ওনি তো রাগারাগি করবে আমাদের এই সময়
ছাদে দেখলে। 
শ্রাবণ:-হুম সেটা ঠিক,,কিন্তু তোর চিন্তা করতে হবে না। আমি সামলে নিব। 
রাফি:-ওকে,,,তাহলে তাড়াতাড়ি বাসায় চল।
শ্রাবণ:-হুম,,আর শোন, আসার সময় ঠান্ডা কোক নিয়ে আসিস এক লিটার। 
রাফি:-এইটা তুই কোন কথা বললি ??? 
---
শ্রাবণ:-কেন..?
রাফি:-আমি আবার রাতের আড্ডার জন্য কোক আনতে ভুলে যাবো..??
শ্রাবণ:-হাহাহাহাহা ওকে তুই তাড়াতাড়ি আয়।
ওক্কে৷৷৷
এরপর ফোন রেখে দিয়ে আমি বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাসা এখান থেকে বেশি দূরে নয়
তাই হেটে হেটেই যাচ্ছি। প্রায় বাসায় চলে এসেছি। গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতে যাবো তখনই খুব
পরিচিত একটা নাম্বার থেকে ফোন আসল,,আমি চারিপাশে তাকিয়ে দেখলাম। আমার পাশে
দাড়োয়ান ছাড়া আর কেউ নেই তাই ফোনটা রিসিভ করলাম,,--
করিম:-- হ্যালো স্যার,, কেমন আছেন...??
শ্রাবণ :- হুম ভালোই,, আপনি.??? রহিম:--- জি, ভালো আছি। 
শ্রাবণ:-হুম,,ফোন করেছেন কেন তাড়াতাড়ি বলুন.??
রহিম:- স্যার কয়েকটা কাগজে আপনার সাইন
লাগবে। 
শ্রাবণ:- ওকে,,আপনি কালকে কলেজ ছুটির পরে দেখা করুন। -- ওকে
করিম:- স্যার আর একটা কথা..
শ্রাবণ:--- কি কথা..??
করিম:-- স্যার এইভাবে আর কতদিন
চলবে.???প্রায় ৫ বছর হতে চলল আপনি কেন এইভাবে ঘুরে 
শ্রাবণ:-তুমি চুপ করো সময় হলে আমি ঠিকই আসব।
আর আপনি তো আছেন। 
রহিম:- স্যার আমি আছি, কথা সেটা নয়। আপনি না থাকলে কিভাবে
হয়। প্লিজ স্যার নিজেকে এইভাবে কষ্ট দিবেন না।  শ্রাবণ:-এগুলো আমাকে বলে কোন লাভ
নেই আপনি সেটা ভালো করেই জানেন। আমার সময় হলে আমি ঠিকই আসব।
---
রহিম:-ওকে স্যার ভালো থাকবেন। আর কোন সমস্যা হলে আমাকে কল দিয়েন। -- ওকে।।।।।
এরপর ফোন কেটে দিলাম।।।আপনারা অনেকেই হয়তো কিছুই বুজতে পারতেছেন না,,
যে কে এই লোকটা যে আমার সাথে ফোনে এইমাত্র কথা বলল। আবার অনেকে হয়তো
অবাক হচ্ছেন যে আমার মতো একটা এতিম ছেলেকে আবার কে স্যার বলে ডাকতেছে।
কিছু কিছু কথা না জানাই ভালো। তাই এই লোকটার কথা এখন আপনাদেরকে কিছু বলব
না। সময় হলে গল্পে বলে দিব।
বাসার ভিতরে যাবো ঠিক তখনই কে জেনো আমার কাধে হাত রাখল। তাই আমি পিছনে
ফিরে তাকালাম,,
পিছনে ফিরে দেখি রাফি।
রাফি:-কিরে একা একা দাঁড়িয়ে কি ভাবতেছিস..?? 
শ্রাবণ:-কিছু না,,এমনি 
---
রাফি:-চল ভিতরে চল। ছাদে গিয়ে আড্ডা দেই। 
হুম চল।।ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি রাত ৯ টা বেজে গেছে। রুমে গিয়ে দেখি বুয়া এসে
খাবার রান্না করে রেখে চলে গেছে। খাবার খাওয়ার মুড নেই তাই আমি আর রাফি সোজা
ছাদে চলে এলাম।এরপর দুজনে ছাদের এক পাশে বসে পরলাম।।
রাফি:-বুজলি শ্রাবন জীবনটা না অনেক কঠিন। শ্রাবণ:-আজকে হটাৎ এই কথা বললি..?
রাফি:-বাবা কৃষক দিন আনে দিন খায়, আম্মু অসুস্থ ছোট বোনটার আবার হাজারো আবদার। এর
মাঝে আমি একটা মানুষ যে কিনা এতো বড় হয়েও আব্বুর কোন কাজে আসি না।
শ্রাবণ:-এইটা তুই কোন কথা বললি.?? দেখবি তুই একটা চাকরি পেলে আংকেলের সব কষ্ট দূর হয়ে
যাবে। 
রাফি:- সেই আশায় বেচে আছি রে দোস্ত। 
শ্রাবণ:- তোর তো তবুও বাচার একটা
উদ্দেশ্য আছে। আর আমি..?? কার জন্য বাঁচব..? কি আমার জীবনের উদ্দেশ্য..?? আমি তো
একটা এতিম।।
রাফি:-তোকে কতবার বলতে হবে.?? এই রাফি যতোদিন বেঁচে আছে
ততদিনে তুই এতিম না। তুই আমার নিজের ভাইয়ের চেয়ে অনেক বড় কিছু। 
শ্রাবণ:- ভাই জীবনে অনেক বড় ভুল করেছি যার জন্য আজ আমার এই অবস্থা। এখন বুজতেছি যার মাথার উপরে বাবা নামক বট গাছটা নেই। তার জীবন কতটা কষ্টের।
রাফি:- হুম এটা তুই ঠিক
বলেছিস। তবে,,, 
শ্রাবণ:---- তবে কি..??
রাফি:-- তোর অতীতের কোন কিছুই তো আমি
জানি না। তাই আমি কি করে বলব যে তুই কি ভুল করেছিস..??
শ্রাবণ:-- সময় হলে সব জানতে পারবি। 
রাফি:- সেই চার বছর ধরে এই একই কথা শুনে আসতেছি। তবে আমি তোর অতীত দেখে বন্ধুত্ব করি নাই। আমি তোর বন্ধু ছিলাম, আছি, আর সারাজীবন থাকব।
I
শ্রাবণ:-আমি জানি তো। তাই তো তোকে আমি এতো ভালোবাসি। 
রাফি:-- আর পাম দিতে হবে না। চল নিচে যাই। খুদা লাগছে। 
শ্রাবণ:-- হুম চল।। এরপর আমি আর রাফি দুজনে নিচে চলে এলাম। নিচে এসে রাতের খাবার খেতে লাগলাম।
আসুন খাবার খেতে খেতে আপনাদেরকে এই বাসার বিবরনটা একটু দিয়ে দেই
এই বাসা মানে আমরা যে বাসায় ভাড়া থাকি। এই বাসার মালিক একজন
প্রাইভেট কোম্পানির বসের। তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। যার কারনে আমি
আর রাফি ব্যাচেলর হয়েও এই বাসায় ভাড়া থাকতে পারতেছি। আংকেলের একটা
মাত্র মেয়ে। আমি কোন দিনও মেয়েটাকে এখনো দেখি নাই। শুধু মাত্র
শুনেছিলাম। বাসাটা মোট দশ তালার। যার ৪ তালা বাদে সব রুম ভাড়া দেওয়া।
চার তালায় নাকি আংকেল থাকে। আমি কোন দিনও সেদিকে যাই নি। তাই তেমন
একটা কিছু জানি না। আমি আর রাফি ৫ তালার একটা রুম ভাড়া নিয়ে থাকি।
পড়ার সময় আমি আর রাফি দুজনেই খুব সিরিয়াস থাকি। তাই পড়ার সময় কেউ কোন কথা
বলি না। প্রায় তিন ঘন্টা পরে পড়ার টেবিল থেকে উঠলাম। মোবাইলে তাকিয়ে দেখি রাত ১ টা
বেজে গেছে। ঠিক তখনই রাফি বলল,,
রাফি:-ভাই আজকে অনেক কিছু কমপ্লিট করে ফেলেছি। এইবার এক্সামে ভালো একটা রেজাল্ট
করতেই হবে। 
শ্রাবণ:- হুম ভালো রেজাল্ট হবে ইনশাআল্লাহ। রাফি:- তুই বস,,আমি দুই কাপ কফি বানিয়ে
নিয়ে আসি। 
শ্রাবণ:- এখন কফি.???
রাফি:--- আরে কিছু হবে না। খেতে ইচ্ছে করতেছে। 
শ্রাবণ:-তুই আসলে একটা পাগল,,- হাহাহাহাহা,,,এরপর রাফি কিচেনে চলে গেল। আমি বিছানায়
বসে মোবাইলটা অন করলাম। রাতে পড়ার পরে আমাদের দুজনের একটাই কাজ মোবাইলে
ফেসবুক ঘাটা। আমিও প্রতি রাতের মতো ফেসবুকে ঢুকলাম। ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট চেক করতে গিয়ে
একটা আইডিতে চোখ আটকে গেল। আইডিটা আর কারো না। আইডিটা ছিল আদিবার আমি
অনেক অবাক হলাম। এক দিনের ফ্রেন্ডশিপেই সরাসরি ফেসবুকে রিকুয়েষ্ট পাঠিয়ে দিয়েছে।
আমি কিছু না ভেবেই রিকুয়েষ্ট গ্রহণ করে নিলাম ।

এর মধ্যেই রাফি কফি নিয়ে চলে এসেছে।
আমাকে এক কাপ দিলো। আমি খেতে লাগলাম।--- রাফি:-কেমন হয়েছে.???
শ্রাবণ:- প্রতিদিনের মতোই আজকেও তোকে একটা উপদেশ দিতে চাই। 
রাফ:-কি উপদেশ.??? (অবাক হয়ে)
---
শ্রাবণ:-পড়াশোনা ছেড়ে দে। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একটা টং দোকান ভাড়া নিয়ে চা, কফি বানা।
রাফি:-হাহাহাহাহাহা,,,তুই আসলে,,, কোথায় একটু ধন্যবাদ দিবি তা নয়,, 
শ্রাবণ:-আরে আমি তো তোর প্রশংসা করলাম। 
---
রাফি:- হুম জানি।।।
আমি আর রাফি কফি খেতে খেতে গল্প করতেছিলাম তখনই ফোনে একটা মেসেজ এলো।
আমি মেসেজটা দেখে অনেক অবাক হলাম।
কারন মেসেজটা ছিলো আদিবার।অনেক অবাক হলাম,, কারন রাত ২ টার বেশি বাজে। আর এই মেয়ে এখনো ফেসবুকে
আদিবা:-কি করে.?? 
আবার ভাবলাম যে, বড়লোকের মেয়ে কোন কাজ করতে হয় না সারা দিন
রাত এই সব মোবাইল ল্যাপটপ ইত্যাদি নিয়ে পরে থাকে।
এর মধ্যে আবার একটা মেসেজ এলো,,,-
আদিবা:-- হ্যালো...ওই কথা বলো না কেন..?? 
শ্রাবণ:-হুম বলেন..
আদিবা:- কি করো..?
শ্রাবণ:-শুয়ে আছি। আপনি...?
আদিবা:-আমি মুভি দেখি আর তোমার সাথে চ্যাট করি। 
শ্রাবণ:-ওহ আচ্ছা।।। 
আদিবা:- তুমি এতো রাতে ফেসবুকে কি করো হুম..?? 
শ্রাবণ:-তেমন কিছু না। এইমাত্র বই পড়ে উঠলাম। ঘুম আসতেছিলো না তাই একটু ফেসবুকে আসলাম।
এইভাবে কিছু সময় টুকটাক কথা হলো। এর মাঝে আদিবা হটাৎ করে
আমার মোবাইল নাম্বার চেয়ে বসে। আমি অনেক অবাক হই। কিন্তু তারপরেও ফ্রেন্ড ভেবে
দিয়ে দিলাম।আদিবার সাথে কথা বলা শেষ করে মোবাইলের দিকে চেয়ে দেখি রাত ৩ টা বেজে গেছে। কি এতো কথা বললাম যে এত
রাত হয়ে গেলো। আজকে খুব ভালো লাগতেছে যে রাফির মতো আরো একটা বন্ধু আছে আমার জীবনে। পাশে তাকিয়ে
দেখি রাফি চোখ বুজে ঘুমাচ্ছে। তাই আমিও আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে গেলাম ।
---
সকাল বেলা ঘুম ভাংল রাফির ডাকে,,
রাফি:-কিরে শ্রাবন... তোর শরীর খারাপ নাকি..?? 
---
শ্রাবণ:-না তো কেন..? (আমি শুয়ে শুয়ে বললাম)
রাফি:- ঘড়িতে চেয়ে দেখ কয়টা বাজে..
অনেক অবাক হলাম সকাক ৮ টা বেজে গেছে। তখনই রাতের কথা মনে পরে গেল।
শ্রাবণ:-- আরে ভাই বলিস না, কালকে রাতে ঘুমাতে একটু লেট হয়ে গেছিলো।।
--রাফি:- হুম,,এই নে কফি। খেয়ে নে। 
শ্রাবণ:-তুই টেবিলে রাখ,, আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি। 
রাফি:- হুম,,।।।
এরপর ফ্রেশ হয়ে এসে কফি খেতে লাগলাম।।
শ্রাবণ:-বুজলি বন্ধু আদিবা মেয়েটা অনেক ভালো৷৷ 
রাফি:-এ আমি কার মুখে কি শুনতেছি..??
শ্রাবণ:-মজা করিস না। আমি সত্যি বলতেছি। 
রাফি:-কি করে বুজলি যে খুব ভালো..???
শ্রাবণ:-কথাবার্তা দিয়ে যা বুজলাম আরকি। 
রাফি:- কয়দিনের পরিচয়.?? 

শ্রাবণ:- দুইদিন 
রাফি:-ওরে ভাই আমারে তুই মাইরা ফেলা। 
---
ধুর,,,,
এরপর আমি আর রাফি সকালের খাবার খেয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম।
আর আপনাদের তো একটা কথাই বলতে মনে নেই। আমি আর রাফি আমাদের নিজেদের খাবার
নিজেরাই রান্না করে খাই। শুধু শুধু টাকা নষ্ট করার কোন মানে নেই। তবে প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হলেও
এখন আর কষ্ট হয় না।
আমি আর রাফি কথা বলতে বলতে কলেজ গেট দিয়ে ঢুকতে যাচ্ছিলাম তখনই আদিবা
আমার নাম ধরে ডাক দিলো। পিছনে ফিরে দেখি আদিবা রাস্তার অপর প্রান্ত থেকে রিকশা
থেকে নেমে আমার দিকে আসতেছে। ঠিক তখনই রাফি আমাকে বলল,,--
রাফি:-- কে এই মেয়ে ভাই...? তোকে চেনে কিভাবে. শ্রাবণ:- আরে তোকে রাতে বলেছিলাম মনে নেই ।
রাফি:-ওও এই তাহলে সেই আদিবা। 
---
শ্রাবণ:-হুম,,তুই এখন চুপ কর। 
---
রাফি:-ওকে।।।
এর মধ্যে আদিবা আমাদের কাছে চলে এসেছে।
আদিবা:-তোমকে সেই কখন থেকে রিকশায় বসে ডাকতেছি। তুমি ডাক শুনো নাই কেন..?
শ্রাবণ:- শুনতে পাই নাই হয়তো৷ 
আদিবা:-হুম,,চলো ওইদিকে গিয়ে বসে গল্প করি।
শ্রাবণ:- হুম। চলো,,আদিবার দিকে চেয়ে দেখি আদিবা রাফির দিকে কেমন করে যেনো তাকাচ্ছে৷ ইশ আমার
তো রাফিকে পরিচয় করিয়ে দিতেই মনে নেই। তাই আমি আদিবাকে বললাম,,
শ্রাবণ:- আদিবা এই হচ্ছে রাফি। আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। 
আদিবা:- ওহ,,,হ্যালো আমি আদিবা। কালকেই নতুন ভর্তি হয়েছি। (আদিবা রাফির উদ্দেশ্যে কথাটা বলল)

রাফি:-ওহ,,আমি রাফি। 
।।এরপর আমরা তিনজনে একটা গাছের নিচে গিয়ে বসলাম।
সকলে মিলে টুকটাক কিছু কথা বলতেছিলাম। কিছুসময় পরে রাফির ফোনে একটা কল
আসলো। তাই রাফি কথা বলার জন্য অন্যদিকে চলে গেল।
রাফি:-- শ্রাবন,,আমি ওইদিকে যাচ্ছি। ফোনে কথা বলে আসি৷ 
শ্রাবণ:- ওকে,,
আদিবা:--- আচ্ছা শ্রাবন তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব.??
শ্রাবণ:-হুম করো। এতে আবার শোনার কি আছে। 
আদিবা:-তোমার পরিবারে কে কে আছে.???

পরিবারের কথা শুনে মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। আমার তো পরিবার বলতে কিছুই নেই। তাই মন খারাপ
হবারই কথা৷ আদিবা হয়তো বিষয়টা বুজতে পারছে। তাই আদিবা আবার জিজ্ঞেস করল।।
আদিবা:-আমি কি খারাপ কিছু বলে ফেলেছি৷ সরি সরি। 
শ্রাবণ:- না,,,তুমি খারাপ কিছু বলো নাই। আসলে আমার পরিবার বলে কিছু নেই। আমি একটা এতিম ছেলে।?
আদিবা:-সরি সরি,,আমি আসলে বুজতে পারি নাই। 
শ্রাবণ:-না,,তোমার সরি বলতে হবে না। আমি জানি এবার তুমিও সকলের মতো আমার সাথে কথা বলা কমিয়ে দিবে। আর আস্তে আস্তে ফ্রেন্ডশিপও নষ্ট করে দিবে। সমস্যা নেই। এটা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। আমি জানি আমি
একটা এতিম ছেলে। (আমি এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে দিলাম)
আদিবা:- ঠাসসসসসস করে আদিবা আমাকে একটা চর মেরে দিলো। এরপর বলতে শুরু করল,,
আদিবা:- তোমার কি মনে হয় আমি আর পাচটা মানুষের মতো। আমি কি তোমার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে ফ্রেন্ডশিপ করেছিলাম। যদি সেটা ভেবে থাকো তাহলে সেটা তোমার ভুল ধারনা। আর যদি কখনো তোমার মুখ থেকে 
এইগুলো শুনি তাহলে তোমার খবর আছে বলে দিলাম। (আদিবা খুব রেগে কথা গুলো বলল)

আদিবা:- আর তুমি শেষ লাইনটা কি বললা.???
শ্রাবণ:- কি ববলেছি..??? (ভয়ে ভয়ে)---
আদিবা:- কেন...?? মনে নেই,,একটু আগে যে বললা,,তুমি এতিম। আর যদি কখনো এই সব আজেবাজে কথা তোমার মুখ থেকে শুনেছি তাহলে তোমার খবর আছে। আর মনে রাখবে যতদিন এই আদিবা বেচে আছে ততোদিন তুমি এতিম না। 
শ্রাবণ:- আমি মনে মনে খুব খুশি হলাম। কারন রাফির পরে এই প্রথম কেউ আমাকে এই কথাটা বলল। নিজেকে আজ বড় লাকি মনে হচ্ছে। আর আদিবাকে যতো দেখতেছি ততই অবাক হচ্ছি। কারন আমার সাথে পরিচয় হয়েছে আজকে মাত্র দুইদিন আর তাতেই এতো আপন করে নিয়েছে। মনে মনে আরো অনেক কিছু ভাবতেছিলাম। তখনই আদিবা বলল
আদিবা:-- কি ভাবতেছো.???
শ্রাবণ:-- ক.কই কিছু না তো.।
আদিবা:- এইমাত্র কি বললাম মনে থাকবে তো.??
শ্রাবণ:-থাকবে। 
আদিবা:- এইতো গুড বয়। - ওহ শিট।।। আমি সরি। তোমাকে রাগের মাথায় চর মেরে ফেলেছি।
শ্রাবণ:-- সরি বলতে হবে না ।সমস্যা নেই। 
আদিবা:- আমি- আসলে আমার রাগ উঠলে না আমি কি করি সেটা আমি নিজেও জানি না।
শ্রাবণ :- হুম। সেইটা তো দেখতেই পেলাম। (আমি মজা করে)-
আদিবা:- সরি বললাম তো। (আদিবা মন
খারাপ করে)-
শ্রাবণ:- বন্ধুতের মধ্যে নো সরি, নো ঠ্যাংস্--- হয়েছে। আর নেকামি করতে হবে না ।
আদিবা:-হুম।।।। - ভালো কথা,,রাফি সেই গেলো আর তো এলো না। আমি আর আদিবা যখন দুজনে ক্লাসে প্রবেশ করলাম তখন সবাই আমাদের দিকে হা করে চেয়ে আছে৷ আমার অবশ্য এটা অভ্যাস হয়ে গেছে। কিন্তু আদিবা কিভাবে নিবে এই বিষয়টা৷ আমার সব ধারণা ভুল প্রমান করে কোন দিকে না তকিয়ে আমার সাথে গিয়ে হাসতে হাসতে বসে পরল। কিন্তু এখানে কোথাও রাফিকে দেখতে পেলাম না। মনে হয় ফোন আসার পরে বাসায় চলে গেছে। কিছুই বুজতে পারতেছি না। তখনই আদিবা বলল--
আদিবা:-রাফিকে তো কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। (চারিদিকে তাকিয়ে)

শ্রাবণ:- মনে হয় বাসায় চলে গেছে। 
---
আদিবা:-ওহহ হতে পারে।
শ্রাবণ :- হুম। 
আদিবা:-আর তোমাকে তো আমার পরিবারে কথা বলতেই মনে নেই। 
শ্রাবণ:-এইবার বলে দাও তাহলে 
আদিবা:- হুম,,আমার পরিবার বলতে আমি আব্বু আর আম্মু। 
শ্রাবণ:-ওহহহ,,,ভালো। 
আদিবা:-হুম।।এইবার চুপ করো। স্যার এসে গেছে ক্লাসে। 
শ্রাবণ:- হুম,,,এরপর আমি আর আদিবা মন দিয়ে ক্লাস করতে লাগলাম। ক্লাসের ফাকে ফাকে টুকটাক কিছু কথা
বলেছি আমরা দুজনে। এইভাবে দেখতে দেখতে সবগুলো ক্লাস শেষ হয়ে গেল। আজকে যেহেতু
হাফ ক্লাস তাই বেশি সময় লাগে নাই। ক্লাস শেষ করে আমি আর আদিবা একসাথে কলেজ থেকে
বের হলাম। এরপর আদিবা বিদায় দিয়ে আমিও বাসার দিকে রওনা দিলাম। আজকের দিনটা
অনেক ভালো ভাবে কেটেছে আমার। তবে রাফির জন্য চিন্তাও হচ্ছে৷ কেন কিছু না বলে রাফি এইভাবে কলেজ থেকে চলে গেল?? কোথায় গেলো..?? বাসায় গেছে মনে হয়। তাই জোরে বাসার দিকে হাটতে লাগলাম। বাসায় এসে দেখি রাফি বাসায় আছে। আমি ওকে দেখে বুজতে পারতেছি যে ও কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করতেছে। তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম,,
শ্রাবণ :- কিরে তুই আমাকে কিছু না বলে বাসায় চলে এলি কেন.?? জানিস কি চিন্তায় ছিলাম।
রাফি:- এমনি ভালো লাগতেছিল না।
শ্রাবণ :- আমার দিকে তাকা। আমায় বল কি হয়েছে.???
রাফি:-- তুই তো জানিস। আব্বুর শরীরের অবস্থা বেশি ভালো ছিল না। তার উপরে আব্বু ক্ষেতে কাজ করে। আম্মু ফোন দিছিলো তখন। 
শ্রাবণ:--- কি বলেছে আন্টি..??
রাফি:- আব্বু কালকে দুপুরে হটাৎ করে খুব অসুস্থ হয়ে
পরে। আম্মু আমাকে আজকে বলেছে কারন আমি চিন্তা করব তাই।এর আগে আমি কখনো রাফিকে কান্না করতে দেখি নাই। আমি জানি রাফি ওর বাবা-মাকে খুব ভালোবাসে।
তাই আমি ওকে বলার মতো কোন কিছু খুজে পাচ্ছিলাম না। তখনই পাশে খেয়াল করে দেখি রাফির ব্যাগ গুছানো। তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম,.,.,.
শ্রাবণ :-. বাসায় যাবি..????
রাফি:--- হুম,,,
শ্রাবণ:-বাসায় যাবি ভালো কথা৷ এতো বড় ব্যাগ নেওয়ার কি আছে। কলেজ ব্যাগে করে কয়েকটা জামাকাপড় নিয়ে যা। (আমি স্বাভাবিক ভাবে বললাম)--- 
রাফি:-আমি আর ফিরে আসবো না। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছি। 
শ্রাবণ:- মানে ??? কি বলতে চাচ্ছিস তুই..?? (আমি অবাক হয়ে) 
রাফি:- মানে আমি আর লেখাপড়া করবো না। বাসায় গিয়ে আব্বুর সাথে কাজ করবো। আব্বুকে আর আমি কাজ করতে দিবো না।
শ্রাবণ:-- লেখাপড়া করবি না মানে কি..???(আমি অবাক হয়ে)--
রাফি:-- হাহাহাহা,,,,
শ্রাবণ:-তুই হাসতেছিস কেন..???
রাফি:-- আমাদের পড়া শেষ হতে এখনো কয়বছর বাকি বলতো..?? 
শ্রাবণ :-- চার বছর মনে হয়। 
রাফি:- তাহলে এই চার বছর পরে বাড়িতে গিয়ে আমি হয়তো আমার আব্বুকে আর দেখতে পাবো না। 
শ্রাবণ:-এরকম কিছুই হবে না। 
রাফি:-- আর পড়াশোনা শেষ হবার পরেই যে চাকরি হয়ে যাবে এমন কোন কথা নেই। তাই আমি চাচ্ছি না যে আব্বুর টাকা গুলো এইভাবে নষ্ট হোক। (রাফি কেদে দিয়ে)-
শ্রাবণ :-- মনেকর তুই এখন একটা চাকরি পেয়ে গেলি। তাহলে কি করবি..??
রাফি:-- হাহাহাহা,,,বন্ধু শোন, আমি জানি সেটা সম্ভব নয়। তারপরেও বলি,, আমি একটা চাকরি পেলে প্রথমে বাড়িতে যাবো৷ যাবার পথে আমার আব্বু, আম্মু এবং আমার পিচ্চি বোনটার জন্য অনেক কেনাকাটা করব। এরপর গ্রাম ছেড়ে সকলকে নিয়ে শহরে চলে আসব। আমি চাই
না আমার বোনও আমার মতো কষ্ট পাক তাই ওকে ভালো স্কুলে ভর্তি করে দিবো। ব্যাস এটুকুই।
শ্রাবণ:-বন্ধু মনে কর তোর স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। 
রাফি:- মানে..?? তুই এই সময়েও মজা করিস ?? 
শ্রাবণ:-আমি রাফিকে কিছু না বলে,,,আমার পড়ার টেবিলে চলে গেলাম। সেখান থেকে ড্রয়ার থেকে একটা চিঠি বের করে রাফিকে দিলাম।--
রাফি:-- কি এটা.???(রাফি অবাক হয়ে)
শ্রাবণ:-তোর চাকরির জয়েনিং লেটার। 
রাফি:-মানে..?? (রাফি খুব অবাক হয়ে
শ্রাবণ :- তুই আগে এটা খুলে দেখ। 
এরপর রাফি কিছু না বলে চিঠিটা পড়ে দেখতে লাগল।।। কিছুসময় পড়ে,,,, এটা তো সিলেটের সবচেয়ে বড় কোম্পানি AB Group Present এর জয়েনিং লেটার। এটা তুই পেলি কোথায়.???? (রাফি অবাক হয়ে)
শ্রাবণ:- এই বাসার মালিকের মতো সিলেটে আমার এক অপরিচিত আংকেল ছিলো। তিনি দিয়েছিলেন ১ বছর আগে। কিন্তু আমি যাই নি।
রাফি :- যাস নি তো কি হয়েছে। এখন যাবি। শ্রাবণ:-না রাফি। আমি এখানেই ভালো আছি একইভাবে আমি আমার লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরি ঠিকই খুজে নিবো। 
রাফি:-- না বন্ধু,,,এটাতে আমার কোন অধিকার নেই। তুই যা। আমি ঠিকিই ম্যানেজ করে নিবো। 
শ্রাবণ:-তোকে কি এখন চর দিতে হবে। আমার ভাই আর আমি দুইজনের মধ্যে একজন গেলেই হলো। আর আমি এই মুহুর্তে ঢাকা থেকে কোথাও যেতে চাচ্ছি না। আর তোর এখন এই চাকরিটা খুব প্রয়োজন৷ 
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রাফি খুব জোরে আমাকে বুকের সাথে জরিয়ে ধরল। আর কেদে কেদে বলল,,
রাফি:-জানিনা জীবনে কি ভালো কাজ করেছিলাম যার জন্য তোর মতো একটা ভাই পেয়েছিলাম। 
শ্রাবণ:-ওই হয়েছে,,আর ইমশোনাল হতে হবে না। অবশেষে তোর চাকরি তো হয়েই গেলো। এখন ট্রিট দিবি চল।।

রাফি:-হাহাহা,,তুই একটুও পাল্টাবি না। সিরিয়াস মুহুর্তেও,,,,, 
শ্রাবণ:-· হুম,,চোখ মুখে পানি দিয়ে আয়। একদম মেয়ে মানুষের মতো কেদে ভাসিয়ে দিয়েছিস।
এরপর দুজনে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলাম। সময় তখন বিকাল ৩ টা হবে বোধহয়।
এরপর আমিভার রাফি ছোটখাটো একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।
যেহেতু আজকেই রাফির সাথে আমার শেষ দিন। মানে আমি চাচ্ছি যে আজকে রাতেই
রাফিকে সিলেটে পাঠিয়ে দিবো। যেহেতু আংকেলের শরীর খারাপ, তাই যতো তারাতাড়ি
রাফি অফিস জয়েন করবে তাতেই আংকেলের জন্য ভালো। 
শ্রাবণ:-রাফি চল, বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে তোর জন্য টিকিট কেটে আসি। 
রাফি:-আজকে থাক। কালকে কাটলে হবেনে।
শ্রাবণ:-- না,,কালকে না। এখন কেটে রাতের মধ্যেই তুই সিলেট যাবি। এবং কাল সকালে অফিস জয়েন করবি। রাফি:-- কি বলিস.?? এতো তাড়াতাড়ি.?? (রাফি-
শ্রাবণ :- হুম। 
রাফি:-আমি--কিন্তু রাতে আমি গিয়ে থাকবো কোথায়.???তারচেয়ে বরং কাল সকালে যাই। একটা কোনব্যবস্থা করা যাবে। 
শ্রাবণ :- সেটা নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না। আমি সব ব্যবস্থা করেদিবো। 
রাফি :--- তুই কিভাবে এত কিছুর ব্যবস্থা করবি.???
শ্রাবণ  :-- তুই আমাকেবিশ্বাস করিস না.??
রাফি :- আমি সেইটা বলি নাই।-- ওকে তাহলে চল।-
এরপর আমি আর রাফি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে একটা টিকিট কেটে নিলাম। কিন্তু রাফির দিকে চেয়ে দেখি ওর মুখটা কালো। তাই আমি জিজ্ঞেস করলাম,,
শ্রাবণ:- কিরে মুখ কালো করে রেখেছিস কেন.???
রাফি:- যেতে ইচ্ছে করতেছে না। তোর সাথে দীর্ঘ ৪ বছরের পরিচয়। একসাথে থাকা,খাওয়া,আনন্দ মজা
করা, একসাথে বই পড়া। কিভাবে ভুলব এই গুলো.???আর সবচেয়ে বড় কথা তোকে আমি কিভাবে
একা ফেলে চলে যাই। তোকে দেখে রাখবে কে.??? না না,, আমি তোকেও আমার সাথে নিয়ে যাবো।
ওখনে একটা কলেজে ভর্তি করে দিবো তোকে। 
শ্রাবণ:-আরে পাগল,,তোকে আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আমি ঠিকই মানিয়ে নিবো। আমার অভ্যাস আছে। 
রাফি:---- না আমি যাবো না।
শ্রাবণ:- তোকে কিন্তু আবার মারবো। 
রাফি:- ভাই কেন যানি খুব কষ্ট হচ্ছে। 
শ্রাবণ:-· আরে পাগল। আমি ভালো থাকবো। তোকে চিন্তা করতে হবে না, আজকে যেহেতু এটা আমাদের শেষ বিকাল। তাই চল তোকে আজকে আমি চা খাওয়াবো। 
রাফি:- ওকে চল।।

এরপর রাফিকে আবার বাসে উঠিয়ে দিলাম। বাস ছেড়ে দিলো। এবং আমিও বাসার দিকে হাটা
শুরু করলাম। আর ভাবতে লাগলাম,,, কেন জানিনা খুব কষ্ট হচ্ছে আজকে। কেন জানি মনে হচ্ছে
খুব কাছের কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। আজকে আবারো আমি একা হয়ে গেলাম এই ব্যস্ত শহরে। আমি
বেচে আছি না মরে গেছি কেউ হয়তো খোজ নিয়েও দেখবে না। আমি জানি রাফি আমাকে নিজের ভাইয়ের মতো ভালোবাসে আমিও ঠিক তেমনি। কিন্তু রাফি তো আর আমার কাছে নেই। রোজ সকালে তো আর কেউ কফি বানিয়ে বলবে না,,"ভাই এই নে কফি। আর খেয়ে বল কেমন
হয়েছে..??" কেউ আর পাগলামি করে রাতের পর রাত মুভি দেখার বায়না করবে না। আর কেউ
আমার সাথে বসে এক টেবিলে বই পড়বে না। হটাৎ করে চোখের দুই পাতা ঝাপসা হয়ে আসল।
আমি পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখের পানি মুছে নিলাম। কে জানে.?? এটাই হয়তো ভাইয়ের
প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা। এইগুলোও ভেবে আর লাভ নেই৷ মোবাইলে তাকিয়ে দেখি রাত ৮ টার
বেশি বাজে। আর আজকে টিউশনিও ছিলো না। তাই আর কোন চিন্তা না করে বাসায় চলে গেলাম।
যখন গেট দিয়ে ঢুকতে যাব তখনই দারোয়ান চাচা বললেন,,--
চাচা:- বাবা কোথায় গিয়েছিলে.??? 
শ্রাবণ :-,,আমার ওই যে বন্ধু আছে না। রাফি।
চাচা:- হুম,,রাফি কোথায় গেলো ব্যাগ নিয়ে.?? শ্রাবণ:-চাচা ওর চাকরি হয়েছে সিলেটে। তাই ওকে এগিয়ে দিয়ে এলাম বাসস্ট্যান্ডে। 
চাচা:-ওহ,,ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখলাম তাই আরকি জিজ্ঞেস করলাম। বাবা কিছু মনে করো না আবার। 
শ্রাবণ:-আরে চাচা আপনি যে কি বলেন। আমি কিছু মনে করি নাই। তাছাড়া আপনকে আমি সেই শুরু থেকে দেখে আসতেছি৷ আপনারও জানার অধিকার আছে কে কোথায় যায়৷ 
চাচা:-তা বাবা,,তুমিও কি চলে যাবে..? নাকি একা একা থাকবে.??
শ্রাবণ :- না চাচা,,একাই থাকবো।
---
চাচা:-ওহহ,,আচ্ছা বাবা কোন কিছুর দরকার হলে আমাকে বলো কেমন.??
শ্রাবণ:-আচ্ছা চাচা আসি।
এরপর আমি সোজা সিরি বেয়ে আমার রুমে চলে এলাম।রুমে এসে প্রথমেই একটা নাম্বারে কল
করলাম,,
করিম:-হ্যালো স্যার,,কেমন আছেন..? 
শ্রাবণ:-হুম ভালো। শুনুন আমি আপনাকে একটা বিশেষ কারনে ফোন করেছি৷ 
করিম:-- কি কারন স্যার.???
শ্রাবণ :-এখনি ছোট খাটো একটা ঘর ব্যবস্থা করুন। মোটামুটি ৩/৪ জন থাকা যাবে এমন একটা বাসা।
করিম:-স্যার আপনি কি তাহলে চলে আসবেন এখানে। আপনি আমাকে একটু সময় দিন আমি আপনার জন্য বাসার ব্যবস্থা ক
শ্রাবণ :- আপনি এতো বেশি বুজেন কেন.?? আমি কি বলেছি যে আমি আসব..? (আমি রেগে)
করিম:-সরি স্যার।.. ঠিক আছে। আমি যেটা বললাম সেই কাজ করে আমাকে ফোন করুন। ৩০
মিনিটের মধ্যে যেন কাজটি হয়ে যায়। 
করিম:-হুম ওকে স্যার।।।
এরপর আমি ফোন কেটে দিলাম। এই লোকটার সাথে কথা বলতে আমার মাথা
খারাপ হয়ে যায়। বাবার বয়সী লোক তাই কিছু বলতেও পারি না। আর আমি জানি সে আমাকে অনেক
স্নেহ করে। সেই কারনেও আমি কিছু বলি না। যাই হোক এই প্রসঙ্গে আর না যাওয়াই ভালো।
মনটা একটু খারাপ হয়ে আছে। সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটা আজকে আমাকে একা রেখে চলে গেল।
তাতে তো কষ্ট হবারই কথা৷ জানি না কি করলে মনটা ভালো হয়ে যাবে। ঠিক তখনই ভাবলাম
ছাদে গেলে মনটা ভালো হতে পারে। তাই সিরি বেয়ে ছাদে যেতে লাগলাম। আমি আমার মনে
হেটে ছাদে যাচ্ছিলাম তখনই আংকেলের সাথে দেখা। মানে বাসার মালিক। আংকেলকে দেখলে
আমার কেমন জানি ভয় ভয় লাগে। চোখ মুখে কেমন একটা গম্ভির ভাব। তাই আমি যতটা
পারি এরিয়ে চলি তাকে। যাই হোক এখন আর কোন উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে কথা বললাম,
শ্রাবণ:-আসসালামু আলাইকুম, আংকেল কেমন আছেন..?
---
---
আংকেল:-ওয়ালাইকুম আসসালাম, ভালো আছি। তুমি কেমন আছো.??
শ্রাবণ:- আলহামদুলিল্লাহ ভালো। 
আংকেল:-- তা তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে.??
শ্রাবণ:-জী, আংকেল মোটামুটি ভালোই।
আংকেল:-এই আসময়ে আবার উপরের দিকে কোথায় যাচ্ছো...?
শ্রাবণ:-আসলে আংকেল মনটা ভালো নেই। তাই ভাবলাম ছাদ থেকে একটু ঘুরে আসি।
ওহ আচ্ছা। যাবে ভালো কথা। কিন্তু বেশি সময় থেকো না। জানোই তো আমি ছাদে কাউকে
যেতে দেই না। আর তোমাকে কেউ দেখলে সেও যেতে চাইবে।

Comments

    Please login to post comment. Login