গল্প: "বিষন্ন ভবিষ্যৎ"
২০২৪ সালের বাংলাদেশ। চারদিকে হইচই, নতুন দিনের স্বপ্ন। কিন্তু বাস্তবতায় দেশের অবস্থা দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। রাজনীতির বিভাজন, দুর্নীতি, এবং অর্থনৈতিক টানাপোড়েন মানুষকে হতাশায় ডুবিয়েছে। এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র রাহাত, একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক।
রাহাতের পরিবার ঢাকার একটি ছোট ফ্ল্যাটে থাকে। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী, আর মা গৃহিণী। রাহাত নিজে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। কিন্তু প্রতিদিন তার জীবনে নতুন চ্যালেঞ্জ আসে।
প্রথম দৃশ্য:
এক সকালে রাহাত বাসার টেবিলে বসে খবরের কাগজ পড়ছে। হেডলাইনে বড় অক্ষরে লেখা:
"বিদ্যুতের নতুন সংকট: পুরো দেশে লোডশেডিং দ্বিগুণ হবে"।
রাহাত হতাশভাবে বলে,
"মা, আর কতদিন এমন চলবে? পড়াশোনাও করতে পারছি না। চাকরির বাজারে কী হবে, কে জানে?"
তার মা মৃদু হাসি দিয়ে বলল, "বাবা, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা তো এর চেয়েও খারাপ সময় পার করেছি।"
কিন্তু রাহাত জানে, এই সময়টা আগের চেয়ে ভিন্ন।
দ্বিতীয় দৃশ্য:
এক বিকেলে রাহাত বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার শাহবাগে আড্ডা দিচ্ছিল। সবাই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করছে। রাফি, রাহাতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ক্ষোভ নিয়ে বলে,
"দেখো রে রাহাত, চারদিকে চাকরি নেই, ন্যায্য বেতন নেই। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে কেউ ভাবে না। আমরা যদি দেশের জন্য কিছু করতে চাই, সরকার নিজেই বাধা দেয়।"
রাহাত মাথা নিচু করে চুপ থাকে। সে জানে রাফি সত্যি বলছে।
তৃতীয় দৃশ্য:
কয়েক দিন পর, রাহাত একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দেখল, একদল তরুণ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই প্রতিবাদের ভিডিও দেখার পর রাহাত সিদ্ধান্ত নেয়,
"আমি চুপ থাকতে পারি না। আমাকে কিছু করতে হবে।"
সে তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে শাহবাগে গিয়ে প্রতিবাদে যোগ দেয়। প্রথমে তারা কিছু পোস্টার তৈরি করে। পোস্টারগুলোতে লেখা ছিল:
"আমরা কাজ চাই, অনুদান নয়।"
"স্বচ্ছ প্রশাসন চাই।"
"তরুণদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করো।"
চতুর্থ দৃশ্য:
প্রতিবাদের তৃতীয় দিনে পুলিশ আসে। লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, আর গ্রেফতার। রাহাতকে ধরে নিয়ে যায় থানায়। তার মা-বাবা খবর শুনে কেঁদে ফেলেন। তার বন্ধুরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে।
এক সপ্তাহ পর, রাহাত ছাড়া পেল। কিন্তু তার মধ্যে এক নতুন জেদ জন্ম নিল। সে নিজেকে বলল,
"আমি এভাবেই থেমে যেতে পারি না। আমার প্রজন্মের জন্য আমাকে দাঁড়াতে হবে।"
উপসংহার:
গল্পটি একটি কঠিন বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে রাহাতের মতো তরুণরা তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য লড়াই করছে। এই গল্পের শেষটা খোলা রাখা হলো, কারণ রাহাতদের লড়াই এখনো চলছে।
পাঠকদের জন্য প্রশ্ন:
আপনার মতে, রাহাত কি দেশের ভবিষ্যৎ বদলাতে পারবে? নাকি সেও অন্যদের মতো হতাশায় হারিয়ে যাবে?