ঢাকার জীবন যেন দমবন্ধ করা। দিন রাত ট্রাফিক, অফিসের কাজ, আর কনক্রিটের জঙ্গলে হাঁসফাঁস করে অর্ণব। প্রতিদিন সকালে তার ঘুম ভাঙে রিংটোনের শব্দে। একটা কাজ শেষ হলে আরেকটা শুরু। এমনই এক ক্লান্তির রাতে, এক বন্ধুর কথায় সে ঠিক করল কয়েকদিন গ্রামে কাটাবে।
পরের দিন ভোরবেলায় রওনা দিল নড়াইলের এক ছোট্ট গ্রামে, যেখানে তার দাদাবাড়ি। যাত্রাপথেই তার মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি আসতে শুরু করল—সবুজ ধানক্ষেত, পাখির ডাক আর গ্রামের বাতাস যেন তাকে আলাদা জগতে নিয়ে গেল।
গ্রামে প্রথম দিন:
গ্রামে গিয়ে সে দেখল, ছোট্ট শিশুরা খেলছে এক মাঠে। তারা বৃষ্টির পানিতে ভিজছে, দৌড়াচ্ছে, হাসছে। অর্ণব সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে খেলতে শুরু করল। সেই খেলার আনন্দে সে ভুলেই গেল, সে একজন করপোরেট কর্মচারী।
দ্বিতীয় দিন:
পরের দিন সকালে এক বৃদ্ধা এসে তাকে বলল,
"বাবা, তোমার দাদার মতো একটা গাছ লাগিয়ে যাও। এখানে তো কত স্মৃতি আছে।"
অর্ণব মুগ্ধ হয়ে সেই বৃদ্ধার কথায় একটা আমগাছের চারা রোপণ করল। তার মনে হলো, জীবনের ছোট কাজগুলোও কত শান্তি দিতে পারে।
তৃতীয় দিন:
গ্রামে কাটানোর তৃতীয় দিনে, সে স্থানীয় একটি স্কুলে গেল। সেখানে কিছু ছোট্ট ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করছিল। অর্ণব তাদের নিয়ে গল্প করল, তাদের স্বপ্ন জানতে চাইল। তাদের সরল কথা, হাসি আর চোখের উজ্জ্বলতা অর্ণবের মন ছুঁয়ে গেল।
গ্রাম থেকে শহরে ফেরার দিন, অর্ণবের মন যেন খালি হয়ে গেল। কিন্তু তার মনে একটাই কথা ছিল, "আমি সুখ খুঁজতে গ্রামে এসেছিলাম, আর এখানে এসে বুঝলাম, সুখ আসলে ছোট ছোট মুহূর্তের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে।"
উপসংহার:
ঢাকায় ফিরে অর্ণব সিদ্ধান্ত নিল, এবার সে ব্যস্ত জীবনেও সময় বের করবে তার নিজের জন্য। ছোট ছোট মুহূর্ত উপভোগ করবে, এবং নিজে হাসবে, অন্যদেরও হাসাবে