কর্মজীবী মায়েদের জন্য বিশেষত গার্মেন্টস নারী শ্রমিকদের জন্য সন্তান লালন-পালন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। কারণ, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডে কেয়ার সেন্টারের অভাব রয়েছে। এ কারণে কর্মজীবী মায়েরা তাদের সন্তানদের আশপাশের এলাকাগুলোর অপ্রতুল মানের কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসায় রেখে আসতে বাধ্য হন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও হালিশহরের সিইপিজেড ও কেইডিজেড এলাকাগুলোর আশপাশে কয়েকশত মাদ্রাসা ও স্কুল গড়ে উঠেছে। এগুলোর বেশিরভাগই ব্যাঙের ছাতার মতো অগোছালোভাবে গড়ে উঠেছে, যেখানে গুণগত মান বজায় রাখার মতো তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। নেই প্রশিক্ষিত শিক্ষক কিংবা দক্ষ কেয়ারগিভার। অনেক প্রতিষ্ঠান শিশুদের সারাদিন রাখার পাশাপাশি আবাসিক থাকার ব্যবস্থা করলেও সেগুলোতে সঠিক পরিবেশ, স্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক ব্যায়াম, খেলাধুলার সুযোগ, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুপস্থিত।
এসব স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোর মূল লক্ষ্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হলেও, একজন শিশুর শারীরিক, মানসিক, এবং সামাজিক বিকাশের জন্য যে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ প্রয়োজন, সেগুলো প্রায়ই অবহেলিত থেকে যায়। এর ফলে শিশুর প্রাথমিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে, যা তার ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সমস্যা সমাধানের উপায়:
1. পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন: গার্মেন্টস এবং সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোর নিকটেই সুলভ মূল্যে মানসম্পন্ন ডে কেয়ার সেন্টার চালু করা।
2. প্রশিক্ষিত কেয়ারগিভার নিয়োগ: শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষিত কেয়ারগিভার ও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া।
3. গুণগত মানের নিয়ন্ত্রণ: স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে এসব স্কুল ও মাদ্রাসার পরিবেশ ও কার্যক্রম নিয়মিতভাবে তদারকি করা।
4. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: অভিভাবকদের সচেতন করা যে তারা যেন সন্তানদের জন্য সঠিক শিক্ষা ও যত্নের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন।
5. বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ: সরকার ও এনজিওগুলোর সহযোগিতায় কর্মজীবী মায়েদের সন্তানদের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা।
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ, তাই তাদের বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারলে কর্মজীবী মায়েদের সন্তান লালন-পালনের চ্যালেঞ্জ অনেকটাই হ্রাস পাবে এবং শিশুরা একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে।