অবশেষে জাতীয় কবি হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাকে এই স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আতাউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (৫ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
এর আগে ২০২২ সালের ২২ জুন কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছিল।
তাকে জাতীয় কবির ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালককে ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।
এই বিষয়ে সংস্কৃতি সচিব আতাউর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই হাইকোর্টে জবাব দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, এটা করা উচিত। তবে হাইকোর্টে বিষয়টির এখনও কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। হাইকোর্টের নিষ্পত্তির পর এই বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
এদিকে জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলের নাম দ্রুত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছেন নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমানে সংবিধান সংশোধনের কাজ চলছে। কাজটি এখনই করা উচিত। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে তার চেতনা প্রাসঙ্গিক ছিল। সুতরাং আমরা মনে করি, এইবারই আমাদের সরকারের আমলেই কবি নজরুলকে আমরা বাংলাদেশের সংবিধানে গেজেট আকারে অন্তর্ভুক্ত করব।
কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, আমরা অনেক দিন ধরেই এ বিষয়ে দাবি জানিয়ে এসেছি। নজরুল ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে সরকারকে তা বলাও হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকে আমাদের জানিয়েছিলেন, এটা দ্রুত করা হবে। অবশেষে এটা হচ্ছে জেনে ভালো লাগছে।
উল্লেখ্য, কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে দুখু মিয়া নামে পরিচিত এই কবি সব বাধা অতিক্রম করে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ একজন লেখক হয়ে ওঠেন। তিনি বিদ্রোহী কবি নামেও পরিচিত। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) ঢাকায় মারা যান তিনি। বাংলা পঞ্জিকার তারিখ মেনে বাংলাদেশে তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করা হয়।