লেখক: প্রফেসর ড. শরীফ আব্দুল্লাহ হিস সাকি
ভাষা সৈনিক, একাত্তরের রণাঙ্গনের সশস্ত্র যোদ্ধা, সাংবাদিক, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি, সাহিত্যিক ও সোনালী কাবিন খ্যাত কবির নাম আল মাহমুদ। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮) এবং একুশে পদক (১৯৮৬) পেলেও দীর্ঘদিন ধরে কবি ও কবির সৃষ্টিকর্মের প্রতি চলেছে রাষ্ট্রীয় অবহেলা ও বৈষম্য। যে সময়টাতে অধিকাংশ কবি লেখক কবি আল মাহমুদ চর্চা থেকে দূরে থেকেছেন, ঠিক সে সময়টাতে কবি আল মাহমুদের জীবন দর্শন ও সৃষ্টিকর্ম নিয়ে সরব থেকে সাহিত্য সমাজে নিজের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন এমন কবি লেখকের সংখ্যা বেশি নয়। এঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন এস এম শাহনূর। যিনি অনলাইন ও জাতীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় কবির জীবন ও সৃষ্টিকর্মের ওপর বহু আর্টিকেল লিখেছেন, জাতীয় পর্যায়ের নানান অনুষ্ঠানে সাহসের সাথে বাংলা সাহিত্যে আল মাহমুদের অবদানের কথা বলেছেন। কবির জন্ম ও মৃত্যু দিবসে বিশেষ আলোচনার ব্যবস্থা করেছেন। পেয়েছেন অসংখ্য আল মাহমুদ প্রেমী পাঠকের ভালোবাসা। আবার কখনো সখনো তিরস্কৃতও হয়েছেন। কেউ কেউ নিরুৎসাহিতও করেছেন। তবু হাল ছাড়েননি কবি। তিনি কবি আল মাহমুদকে "বাংলা কবিতার ঈশ্বর" বলে আখ্যায়িত করেন। কবি ও গবেষক এস এম শাহনূর ১৯৭৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলাধীন বল্লভপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুল জীবনেই তিনি কবি আল মাহমুদের কবিতার প্রেমে পড়েন। সংগ্রহ করেন যত আল মাহমুদ রচনাবলি। "কবি আল মাহমুদের পূর্বপুরুষের জন্মভিটা নবীনগরের কাইতলার মীরবাড়ি" থেকে আল মাহমুদের সাথে এস এম শাহনূরের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি পরিস্কার বোঝা যায়। ১৯৯৮ সালে কবি আল মাহমুদের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়। তারপর একাধিকবার কবির সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়েছে তাঁর। ২০০৫ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত এস এম শাহনূরের "স্মৃতির মিছিলে" নামক কাব্যগ্রন্থের 'তিতাসের প্রাণ' শিরোনামে কবিতাটি কবি আল মাহমুদকে উৎসর্গ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের এক সন্ধ্যায় কবি ও কবিতার এক ঘরোয়া আলোচনায় এস এম শাহনূরকে আগামীর বিশ্বসাহিত্যে বাংলা সাহিত্যকে তুলে ধরার জন্য কাজ করার কথা বলেন কবি। এস এম শাহনূর বিগত ৬/৭ বছর ধরে আন্তর্জাতিক সাহিত্যে বাংলা সাহিত্য নিয়ে কাজ করছেন। পেয়েছেন খ্যাতি ও স্বীকৃতি। "আওয়ার কণ্ঠ" "আইএনবি নিউজ" জনতার খবর, পূর্বাপর, দেশকণ্ঠ, নীডস নিউজ, দেশদর্শন এ রয়েছে বেশ কিছুসংখ্যক প্রবন্ধ।
২০২৪ সালে প্রকাশিত 'স্বর্গছায়া' কাব্যগ্রন্থে কবি আল মাহমুদ স্মরণে লিখেছেন "অনিবার্য কিংবদন্তি" শিরোনামে চমৎকার একটা দীর্ঘ কবিতা। দৈনিক ঘাঘট, দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা, দৈনিক ঐশী বাংলা, দৈনিক দেশজগৎ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কবি আল মাহমুদ বিষয়ক ছড়া ও কবিতা।
[১ জুলাই ২০২৪]
★তিতাসের কবি★
ইদানিং তিতাসের কবি হওয়ার সাধ জাগে মনে
তীরে বেঁধে বাড়ি জলে ছাড়ে গু হাড়ি সঙ্গোপনে।
অদ্বৈত-কে কয় মালোয়ান, মাহমুদে খোঁজে গন্ধ
হারামজাদা বদ নসিব তোর চোখ থাকিতে অন্ধ।
কত ভিনদেশী সওদাগর মজেছিল তিতাসের প্রেমে,
তার দুগ্ধজলের কথা অহর্নিশ শুনা যেত শহর গ্রামে।
ডিঙার পালে ছিলো জোর, মাঝির কণ্ঠে ছিলো সুর,
বুক ভরা বোয়াল টেংরা, জেলে পাড়ায় ছিলো ভোর।
জাগেনা ঢেউ ভাসেনা ফুল ফোটেনা তিলেক হাসি,
অহংবোধের গভীর ঘুমে তিতাস পাড়ের অধিবাসী।
দেখে দেশ দেখে বিশ্ব জীর্ণ-শীর্ণ তিতাসের ছবি
ভেঙ্গে দু'কূল গড়িছে কুল তিতাসের মেকি কবি!
১ জুলাই, ২০২৪ খ্রিঃ
ঢাকা।
ছবি: তিতাস নদী / প্রতীকী।
[[৯ জুলাই ২০২৪]]
তিতাস নিয়ে কবিদের অন্তহীন উচ্ছ্বাস,
১১ জুলাই তিতাসের কবির জন্মজয়ন্তী
সবাই সরব থাকবেন রাখি মনে বিশ্বাস।
৯ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বাঁশতলা, ঢাকা।
১১ জুলাই কবির জন্মদিন। চলতি বছরের ওই দিন এস এম শাহনূরের উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় 'শব্দকথন'র আয়োজনে ভারচুয়ালি বাংলা সাহিত্যের এক ঝাঁক খ্যাতিমান কবি লেখকের অংশগ্রহণে কবি আল মাহমুদের জন্মদিন উদযাপন করা হয়। ওইদিন কবি তাঁর ফেসবুকের টাইমলাইনে লিখেছেন,
"আজ দক্ষিণ মৌড়াইলের কবরস্থানে ফুল হাতে আসবে তিতাস পাড়ের কত কবি;
যদি না আসে, ধরে নিবো কবিতার শহরে মানুষ নেই আছে শুধু ছবি!
(১১ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ঢাকা।)
এই লেখার পক্ষে বেশকিছু ভালো মন্তব্যের পাশাপাশি কবি আল মাহমুদ বিরোধী কিছু কবি লেখক (বিশেষ করে কবির নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার) আক্রমনাত্মক ও অশোভন মন্তব্য করে। কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয়,
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ঐ মন্তব্যগুলো কোন এক অজ্ঞাত কারণে উধাও!
[[১৩ জুলাই, ২০২৪]]
দালাল কবিদের পক্ষে প্যারোডি
||
কখন কোথা কবি ছিল আল মাহমুদ নামে?
আমি হইছি মহাকবি নালা ডোবা গ্রামে।
ফিসফিসে বলে গেল তিতাস নদীর বক
কীসের মোহে হলে তুমি এমন প্রতারক?
||
কলকলিয়ে বলে গেলো মেঘনার জল
কিলিয়ে পাকানো ফলে কী পাবে বল?
বাগান ভরা পাকা ফলের না করে কদর
মাকাল ফলের ছিন্নমূলে ঢেলেছ আদর!
||
গল্প কথা কাব্য গানে বাঙালির অনুরণনে
গাঙচিলের ডানার মত ছায়া ফেলে মনে;
কবিতার ঈশ্বরের শেষ কথা রাখলেন মাবুদ
তিনি তিতাস পাড়ের কবি আল মাহমুদ।
১৩ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
বাঁশতলা, ঢাকা।
কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক পাচ্ছেন গবেষক এস এম শাহনূর
(পূর্বাপর, ২২ মে, ২০২২)
কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক ঘোষণা
(দূরন্ত খবর, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২)
রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলার সেবামূলক ও সাহিত্য বিষয়ক সংগঠন “অলিকুঁড়ি নবদূত সাহিত্য সিঁড়ি” তাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী-উপলক্ষ্যে কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক ২০২২ ঘোষণা করে। জুরিবোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলা সাহিত্যের সম্ভাবনাময় কলম সৈনিক নিলুফার ইয়াসমিন মিলি (কবিতায়), এস এম শাহনূর ( প্রবন্ধ ও গবেষণায়), ড. মির্জা গোলাম সারোয়ার পিপিএম (গল্পে) এবং আঃ আল-আমিন হোসাইন (উপন্যাসে) -কে কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক ২০২২ প্রদান করে। পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট, সনদপত্র ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।
📞 এস. এম. শাহনূর-কে কবি জয়দুল হোসেন'র শুভেচ্ছা।
(২৮ মে, ২০২২, এস এম শাহনূর এর ফেবু টাইমলাইন)
কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক-২২ এর জন্য মনোনীত হওয়ায় (আমি এস এম শাহনূরকে) সাহিত্য একাডেমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি, প্রধান কবি ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক সর্বজন শ্রদ্ধেয় জয়দুল হোসেন উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমি কবির প্রতি বিনয়চিত্তে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মুঠোফোনে আলাপকালে, দুই বাংলায় অতি জনপ্রিয় তিতাস পাড়ের শক্তিমান কবি আল মাহমুদের সৃষ্টিকর্মকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কবি সাহিত্যিকদের সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান তিনি। কবি আরও বলেন, "কোনো কবি লেখকে তার লেখা দিয়েই মূল্যায়ন করতে হবে, অন্য পরিচয়ে নয়।"
আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য জগতের বটবৃক্ষ, শ্রদ্ধাভাজন কবি জয়দুল হোসেনের শারীরিক মানসিক সুস্থতা ও দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করছি। সেই সাথে বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদানের জাতীয় স্বীকৃতি আশা করছি।
আল মাহমুদ কোনো জেলার কবি নয় বলেই নিজ জেলায় অবহেলিত ⁉️
(২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এস এম শাহনূরের ফেবু টাইমলাইন)
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ। সাহিত্যের বরপুত্র ও বাংলা কবিতার ঈশ্বর তিতাস পাড়ের কবি আল মাহমুদের জন্মজেলা সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সৌভাগ্যক্রমে আমার জন্মটাও ওখানে। দুর্ভাগ্য, দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়, সোনালী কাবিনের কবি আল মাহমুদ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপেক্ষিত! যেখানে জ্ঞানীর কদর নেই, সেখানে ভবিষ্যতের আল মাহমুদরা উপেক্ষিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। এ জেলায় অনেক চুনোপুঁটি কবি/ লেখক /সংস্কৃতি কর্মী রয়েছে যারা নোবেল পুরস্কারের স্বপ্ন দেখে অথচ কবি আল মাহমুদকে অবজ্ঞা অবহেলা করে চলে।
রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলা থেকে কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক-২০২২ ঘোষণা ও প্রদান করা হয়েছে। যে কাজ বহু আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হওয়া উচিত ছিল। কবি আল মাহমুদ সমগ্র বাংলা সাহিত্যের একজন শক্তিমান কবি অথচ আল মাহমুদের নামে নিজ জেলায় কিছুই নেই। এটি মুক্তমনা ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মীদের দৈন্যতা, সংকীর্ণতা ছাড়া বৈকি? ২৫ বছরের লেখালেখি জীবনে দেশ বিদেশ থেকে বহু পুরস্কার/সম্মাননা /পদক/ সংবর্ধনা পেলেও কবি আল মাহমুদ স্মৃতি পদক-২০২২ ছিলো আমার জন্য পরম প্রাপ্তি। নাবিক সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংসদ, ঢাকা কর্তৃক আল মাহমুদ পদক-২০২৪ এর জন্য নির্বাচিত লেখকদের অভিনন্দন। কর্তৃপক্ষের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
কবি আল মাহমুদের প্রতি রাষ্ট্রীয় অবহেলার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার প্রতীকী কর্মসূচি পালন (দৈনিক ঐশী বাংলা, ২২ সেপ্টেম্বর, রোববার, পৃষ্ঠা -৭)
কবি আল মাহমুদকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত রাখার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ-এর উদ্যোগে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহনে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ২১ সেপ্টেম্বর,২০২৪ শনিবার সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার, নিয়াজ মুহম্মদ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠানের আযোজন করা হয়। কবি হিসেবে তাঁর যে জাতীয় স্বীকৃতি প্রাপ্য, বর্তমান সরকারের প্রতি অনতিবিলম্বে তা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা আল মাহমুদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। শ্রদ্ধাঞ্জলির মাধ্যমে তারা আল মাহমুদের প্রতি যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের দাবি তোলেন। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদককে এতদ বিষয়ে আন্তর্জাতিক কবি ও গবেষক ড. এস এম শাহনূর বলেন, "কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এতোদিন আল মাহমুদ চর্চা না হওয়ায় বাংলা সাহিত্য একটু হলেও পিছিয়ে রয়েছে। "
♦️কারা এই তথ্য আহ্বানকারী⁉️
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্যে দালালদের ঠাঁই নাই⁉️
(১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এস এম শাহনূরের ফেবু টাইমলাইন)
জাতীয় সাহিত্যে প্রাতঃ স্মরণীয় কবি আল মাহমুদসহ জেলার বহু জ্ঞানীগুণী কবি লেখকদের অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়নকারী/ বিপথগামী চক্রটি কৌশলে আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। জেলার সাহিত্য ও
শিল্পকলা একাডেমি/জেলা সাহিত্য মেলা/জেলা প্রশাসন কর্তৃক লেখক তালিকা প্রণয়ন/ বাংলা একাডেমি কর্তৃক জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন সাহিত্য প্রকল্পে স্বঘোষিত কবি/সাহিত্যিক নামধারী কিছু পা চাটা/ ব্যক্তি তোষণকারী লেখক ও সুবিধাবাদী জড়িত থাকায় জেলার সত্যিকারের সাহিত্যিকরা ইচ্ছা/অনিচ্ছায় দূরে রয়ে গেছে। এতে জেলাবাসীর পাশাপাশি দেশও বঞ্চিত হয়েছে। এতোদিন যে সকল অ লেখক /চামচাদের জন্য জেলার শিল্প সাহিত্য থেকে গুণী মানুষগুলো দূরে সরেছিল সে সকল চামচাদের একজন জেলার লেখক তালিকায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জেলার লেখক তালিকা প্রণয়নের জন্য তথ্য আহবান করেছে। জেলার নির্দলীয় সাহিত্য সমাজ ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করছে। এদের অতীত কুকর্ম মনে রেখে শিল্প সাহিত্য সম্পৃক্ত সকল কর্মকাণ্ড থেকে এদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা সময়ের দাবি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সুশীল সমাজ-কে এদের বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ রাখছি।
[উল্লেখ্য, মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ নামে কবি আল মাহমুদ বিরোধী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার এক লেখকের পোস্ট "জেলার লেখক তালিকা প্রণয়নের জন্য তথ্য আহবান"
এর প্রতিবাদ স্বরুপ উক্ত বক্তব্য।]
♦️একাত্তর টেলিভিশন এ সম্প্রচারিত বিশেষ সাক্ষাৎকার।
২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কবি আল মাহমুদের মৃত্যু দিবসে কেউ কথা বলেনি। কোথাও কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। কারণ কবি আল মাহমুদ বিষয়ে কথা বলা যেন অঘোষিত নিষিদ্ধ। এস এম শাহনূর একমাত্র কবি যিনি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশে বইমেলায় হাজার হাজার মানুষের মাঝে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাস পাড়ের কবি আল মাহমুদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। একাত্তর টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার প্রদানকালে তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তা ও গর্বের সাথে বলেন,
"বাংলা কবিতার রাজধানীকে কলকাতা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসার একক কৃতিত্ব যাঁর তিনি কবি আল মাহমুদ।"
(১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪; একাত্তর টেলিভিশন এ সম্প্রচারিত বিশেষ সাক্ষাৎকার)
♦️ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক আল মাহমুদ-কবি এস এম শাহনূর
(৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, সময়অসময় ডটকম)
খ্যাতিমান আইন গবেষক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেনারেল সৈয়দা জাহিদা সুলতানা রত্না, এস এম শাহনূরের লেখা স্মৃতির মিছিলে কাব্যগ্রন্থের কাব্যিক মূল্যায়ন করতে গিয়ে বুক-রিভিউয়ের শিরোনামে কবিকে "ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক আল মাহমুদ-কবি এস এম শাহনূর" বলে উল্লেখ করেন।
অনিবার্য কিংবদন্তি
(কবি আল মাহমুদ স্মরণে)
প্রবল এক বর্ষন মুখর বজ্র রাতে বিধাতাক্রান্ত অঙ্গে
কবিতার সোনার চামচ মুখে আবির্ভূত হলেন এ বঙ্গে।
আধুনিককালের ঈশপ জন্ম নিলেন তিতাস নদীর পাড়,
প্রেরণার ঝুলি আব্দুস শুক্কুর আল মাহমুদ নাম তাঁর।
সহসা আঠার বসন্তের এক আত্ম প্রত্যয়ী যুবক
ঢাকার পথে দিলেন পাড়ি মুখে কবিতার স্তবক।
পরনে খদ্দরের পায়জামা, পিরহান গায়ে
দুর্লভ রাবারের স্যান্ডেল ছিল দু’ পায়ে।
বগলের নিচে গোলাপফুল আঁকা ভাঙা সুটকেস
কথার জাদুয় অবাক বিশ্ব বিমোহিত বাংলাদেশ!
পূর্ববঙ্গীয় সত্ত্বাকে মৌলিকত্বে রচিলেন নিজ ভাষায়
বাংলা কবিতার রাজধানী ফের ফিরালেন ঢাকায়।
পিতা মীর আবদুর রবের জীবন হলো ধন্য
মাতা রওশন আরা মীরের জীবন অনন্য
সোনালী কাবিনের কবিকে জন্ম দিবার জন্য।
দেশের আনন্দে তাঁর কবি হৃদয় নেচে উঠেছে সুখে
কখনো বেদনায় দুমড়ে মুষড়ে গেছে স্বদেশের দুখে।
কী প্রেম দ্রোহ, দেশ, সাম্য, একেশ্বরবাদী পাঠ
বাংলা কবিতার রাজ্যে তিনিই একক সম্রাট।
শক্তি সাহস যুগিয়েছেন কবিপত্নী সৈয়দা নাদিরা বেগম
হে মহীয়সী বঙ্গ ললনা তোমাকে অভিবাদন ও স্বাগতম।
কবি মনের সুপ্ত সাধ ঠিকই পূরণ করলেন নিরঞ্জন
শুক্রবার দিন শেষে ফাল্গুনের রাতে ঘটালেন মিলন।
(স্বর্গছায়া কাব্যগ্রন্থ/ প্রকাশকাল-২০২৪)
[ রচনাকাল: হাজী ভবন,খিলবাড়ির টেক, বড়ইতলা বাজার। ঢাকা।
১০ জুলাই, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ।]
♦️মাটি ও মানুষের কবি এস এম শাহনূরের নিজ জেলার প্রতি রয়েছে গভীর টান ও ভালোবাসা। 'তিতাসডাঙা' কবিতায় তিনি লিখেছেন,
জন্ম জেলা বাউনবাইরা
পরাণ আমার থাকে পইড়া
দেশ বিদেশে নাই তুলনা
এমন জেলা কোথায় পাই।।
এই জেলার প্রতি, জেলার মানুষের প্রতি কিছু ক্ষোভ, দুঃখ রয়েছে কবির। এই ক্ষোভ মূলতঃ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। "বদলে গেছে তিতাসের জল!" কবিতায় তিনি লিখেছেন,
প্রিয় শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফেলে দীর্ঘশ্বাস!
হাজার বছরের কতনা অজানা কথাবলা
মসজিদ মন্দির গ্রন্থাগার ঝলসানো লাশ,
বলেকীনা বাঁকা চোখে লেখা হবে ইতিহাস!
অথচ একদিন,পদ্মা মেঘনা যমুনার মত কতো নদী
চেয়ে দেখত অপলকে তিতাসের বয়ে চলা নিরবধি।
এখনো সময় আছে ওরে উদাসী
যদি কেউ তোলে পাল
যদি কেউ ধরে হাল
বাঁচবে তিতাস পাড়ের অধিবাসী।
(তিতাসডাঙা কাব্যগ্রন্থে প্রকাশকাল- ২০২২)
[ রচনাকাল: ৮ এপ্রিল, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ। সো লা ম।]
লেখক: মানবাধিকার কর্মী ও রেজিস্ট্রার ইউনিভার্সিটি অব স্কিল ইনরিচমেন্ট এন্ড টেকনোলজি।