Posts

পোস্ট

ব্রেইন রট

December 9, 2024

সোহেল রানা

31
View

ব্রেইন রট
শুভ ছিল এক গ্রামীণ স্কুলের মেধাবী ছাত্র। তার পড়ালেখা এবং খেলাধুলায় বরাবর ভালো পারফরম্যান্স ছিল। তবে হঠাৎ করেই তার জীবনে এক পরিবর্তন এলো। একদিন শুভর বাবা তাকে একটি স্মার্টফোন উপহার দিলেন, যেন সে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারে।

সেই স্মার্টফোন শুভর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল, তবে খারাপ দিকে। পড়াশোনার পাশাপাশি সে সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও গেম এবং বিনোদনমূলক ভিডিও দেখায় সময় কাটাতে শুরু করল। প্রথম দিকে বিষয়টি তেমন গুরুতর মনে হয়নি। তবে ধীরে ধীরে শুভ লক্ষ্য করল তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে। আগের মত সহজ বিষয়ও আর বুঝতে পারছে না।

স্কুলে তার ফলাফলও খারাপ হতে শুরু করল। বন্ধুরা তাকে লক্ষ্য করল সে আগের মতো আর হাসিখুশি নেই। তার চোখের নিচে কালি পড়েছে এবং ক্লান্তি তার স্বাভাবিক চেহারায় ছাপ ফেলেছে। শুভ বুঝতে পারছিল তার জীবনে কিছু একটা ঠিক নেই। কিন্তু কী সেটা ধরতে পারছিল না সে।

একদিন ক্লাসের শিক্ষক আব্দুল স্যার শুভকে ডেকে তার পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলেন। শুভ প্রথমে লজ্জা পেলেও পরে সব স্বীকার করল—সারাক্ষণ ফোনে সময় কাটানোর কথা। স্যার তার কথাগুলো শুনে বললেন,
“শুভ, তোমার এই সমস্যাটিকে বলা ব্রেইন রট। এটি মস্তিষ্ককে অলস এবং অকার্যকর করে তোলে। তবে তুমি চাইলে এটি থেকে বের হতে পার।”

শুভ জিজ্ঞেস করল, “আমি কীভাবে ভালো হতে পারব স্যার?”


স্যার একটি সহজ পরিকল্পনা দিলেন:

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ফোন ব্যবহার করবে।

বই পড়া, খেলাধুলা এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাবে।

রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাবে।

ধ্যান এবং ব্যায়াম করবে।
 


শুভ স্যারের উপদেশ মেনে চলতে শুরু করল। প্রথম দিকে কঠিন লাগলেও ধীরে ধীরে সে পরিবর্তন অনুভব করতে শুরু করল। তার মনোযোগ বাড়ল, পড়ালেখায় আগ্রহ ফিরে এলো এবং তার বন্ধুরা আগের সেই উচ্ছ্বল শুভকে আবার দেখতে পেল।

কিছুদিন পর শুভ তার পুরোনো অবস্থায় ফিরে গেল। এবার সে আর শুধু নিজের জন্য নয় তার বন্ধুদের মধ্যেও সচেতনতা ছড়িয়ে দিল। সে জানত যে, ব্রেইন রট থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

শিক্ষণীয় বার্তা:

প্রযুক্তি জীবনের অংশ। তবে এর সঠিক ব্যবহার না জানলে এটি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। মস্তিষ্ককে সচল রাখতে বই পড়া, শারীরিক ব্যায়াম এবং সামাজিক যোগাযোগ অপরিহার্য।

Comments

    Please login to post comment. Login