গল্পের শুরু হয় কলকাতার এক ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে। অনিন্দ্য, এক তরুণ কবি, যার জীবন বইপড়া আর কবিতা লেখায় সীমাবদ্ধ। আর মেঘলা, এক তরুণী চিত্রশিল্পী, যার জীবন ক্যানভাস আর রঙের মাঝে বন্দী। তারা দুজনের দেখা হয় এক মেলায়, যেখানে অনিন্দ্য তার কবিতার বই বিক্রি করছিল এবং মেঘলা তার চিত্র প্রদর্শন করছিল।
একদিন অনিন্দ্য মেলার ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, হঠাৎ তার চোখ পড়ে মেঘলার চিত্রকর্মের দিকে। রঙের ব্যবহার আর ছবির গভীরতা দেখে অনিন্দ্য মুগ্ধ হয়ে যায়। মেঘলাও অনিন্দ্যর কবিতার বইগুলো দেখে আগ্রহী হয়ে ওঠে। দুজনের মধ্যে প্রথম আলাপ হয় সেদিনই।
কথা বলতে বলতে তারা বুঝতে পারে, তাদের মধ্যে একটি অদ্ভুত মিল রয়েছে। রঙ আর শব্দের মিশেলে তারা দুজনেই সৃষ্টিশীলতা খুঁজে পায়। অনিন্দ্যর কবিতায় মেঘলা খুঁজে পায় তার চিত্রের রঙ, আর মেঘলার চিত্রে অনিন্দ্য খুঁজে পায় তার কবিতার অনুভূতি।
দুজনের বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে প্রেমে রূপ নেয়। তারা একসাথে সময় কাটাতে শুরু করে, একে অপরের সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা দেয়। মেঘলা অনিন্দ্যর কবিতার লাইনগুলো আঁকতে শুরু করে, আর অনিন্দ্য মেঘলার চিত্রকর্মে কবিতা লিখতে শুরু করে। তাদের প্রেম যেন এক নতুন রূপকথার জন্ম দেয়।
অনিন্দ্য ও মেঘলা বুঝতে পারে, সৃষ্টিশীলতা আর প্রেম একে অপরের পরিপূরক। তারা একসাথে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করতে শুরু করে। একদিন অনিন্দ্য মেঘলাকে নিয়ে যায় গঙ্গার ধারে, যেখানে তারা প্রথম দেখা করেছিল। গঙ্গার পানির মাঝে চাঁদের আলোতে মেঘলা অনিন্দ্যর হাত ধরে বলে, "তুমি আমার কবিতার প্রতিটি লাইনের মতো, যার শেষ নেই।"
অনিন্দ্য মেঘলার চোখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে, "আর তুমি আমার চিত্রের প্রতিটি রঙ, যার মাঝে আমি আমার সমস্ত সত্তা খুঁজে পাই।"
তারা একসাথে গঙ্গার ধারে বসে, আকাশের তারা গুনতে থাকে। তাদের ভালোবাসা যেন এক অপার শূন্যতার মাঝে ভেসে যায়, যেখানে শুধু রঙ আর শব্দের মেলবন্ধন। তাদের প্রেমের গল্প যেন এক অমর কবিতা, যা কখনও শেষ হবে না।