বৃষ্টির ছোঁয়া ছিল হালকা, কিন্তু বাতাসে ছিল শীতের নিঃশব্দ হুমকি। রাস্তায় মানুষ কম, শহরটা যেন নিজেকেই খুঁজে ফিরছিল নিঃশব্দতায়। আর এই নিঃশব্দতার মাঝেই হাঁটছিল রুপম। তার হাতে ছিল একটি বই, কিন্তু চোখ ছিল রাস্তায়। সে খুঁজছিল, কিন্তু কাকে? নিজেই জানত না।
হঠাৎ তার চোখ আটকে গেল এক মেয়েতে। সে দাঁড়িয়ে ছিল একটি বইয়ের দোকানের সামনে, চোখ বইয়ের শেলফে আটকে। তার চুল ছিল খোলা, বাতাসে উড়ছিল। সাদা শাড়িটা তার সৌন্দর্যকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছিল। রুপমের হৃদয় যেন থেমে গেল। সে যেন সময়কে ভুলে গিয়েছিল, শুধু মেয়েটিকেই দেখছিল।
সাহস করে সে কাছে গেল। "বই খুঁজছেন?" সে জিজ্ঞেস করল, কণ্ঠে একটু নার্ভাসনেস। মেয়েটি হ্যাঁ করে মাথা নেড়ে উত্তর দিল। তার নাম জানতে পেরেছিল রূপশ্রী।
দিন গড়িয়ে গেল, রূপম আর রূপশ্রীর দেখা হতো নিয়মিত। বইয়ের দোকান, কফি শপ, রাস্তায়, সব জায়গায়ই তাদের দেখা হতো। প্রথম দেখার দিনের সেই নীরবতা ক্রমশ কথা বলায়, হাসিতে, আর অবশেষে ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়েছিল।
কিন্তু ভালোবাসা সব সময় সহজ হয় না। রূপশ্রীর পরিবারের সামাজিক রীতিনীতি, তাদের অবস্থান—সবকিছুই ছিল বাধা। তবুও তাদের ভালোবাসা গভীর হয়েছিল।
একদিন, রূপম সাহস করে প্রস্তাব রাখল। রূপশ্রী চুপ করে রইল। তার চোখে ছিল ভালোবাসা, কিন্তু আরও কিছু ছিল—দুঃখ, অসহায়তা।
"আমি পারব না, রুপম। আমরা পারব না," সে বলেছিল, কণ্ঠে ভার।
রুপম কিছু বলতে পারেনি। সে শুধু চলে গিয়েছিল, হৃদয় ভারাক্রান্ত। সেই দিন থেকে, বৃষ্টির দিনগুলো আর আগের মতো ছিল না। সে আর রূপশ্রীকে খুঁজতো না, শুধু নিজের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নকেই খুঁজতো।
এক অসমাপ্ত প্রেমের গল্প, বৃষ্টির দিনগুলোর মতোই অসমাপ্ত, অব্যক্ত।