প্রখ্যাত কবি হেলাল হাফিজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হইয়েছিল ৭৬ বছর।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, কবিকে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
তিনি আরও বলেন, কবির মরদেহ বর্তমানে বিএসএমএমইউতে রয়েছে। তার সঙ্গে কোনো আত্মীয়-স্বজন না থাকায় আমি শাহবাগ থানাকে এই বিষয়ে জানিয়েছি। পুলিশ এখন কোনো আইনি সমস্যা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে।
বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হেলাল হাফিজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানী শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে যান। এরপর রক্তক্ষরণের কারণে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দ্রোহ আর প্রেমের এই কবি দীর্ঘদিন ধরেই গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস এবং স্নায়ু জটিলতাসহ একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন।
হেলাল হাফিজ ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতাও করেছেন।
তার প্রথম কবিতার বই 'যে জলে আগুন জ্বলে' ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ২০১২ সালে ২৬ বছর পর তিনি ‘কবিতা ৭১’ নামের দ্বিতীয় কবিতা সংকলন প্রকাশ করেন।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময় তার ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতার ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ পঙক্তিটি মিছিলে, স্লোগানে এবং কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে ছিল।
হেলাল হাফিজ ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। এছাড়াও তিনি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ অন্যান্য সম্মাননাও পেয়েছেন। তার কাজ অমর হয়ে থাকবে, অনুপ্রাণিত করবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কবি ও পাঠকদের।