খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের এক নির্জন বাসস্ট্যান্ড। তখন রাত প্রায় বারোটা ছুঁইছুঁই। নিস্তব্ধতা যেন চারপাশকে গ্রাস করে আছে। সিফাত, একটি সরকারি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বুকের ভেতর উত্তেজনা আর আতঙ্কের এক অদ্ভুত মিশ্রণ, যেন জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটির অপেক্ষায় সে। তার মনে ভেসে উঠছে কেবল একটাই দৃশ্য—ইন্টারভিউয়ের সফলতার পর জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট পেছনে ফেলে নতুন দিগন্তের শুরু। বাসে উঠেই সে কাঁধের ব্যাগটি উপরের বিনে রেখে জানালার পাশে বসল। চারপাশ ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢেকে গেছে। শীতের হিমেল হাওয়ায় পরিবেশটা যেন আরো রহস্যময়। দূরে কোথাও দূরে কোথাও শিয়ালের তীক্ষ্ণ, বিষণ্ণ ডাক ভেসে আসছে, আর বাতাসে শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনি এক অদ্ভুত শূন্যতা তৈরি করছে। এই নিস্তব্ধতার মাঝে, সিফাতের মনে অজানা এক শিহরণ বয়ে গেল।
মনে হলো, পাশের সিটটা ফাঁকাই থাকুক। তবু হৃদয়ের এক গোপন কোণে অদ্ভুত এক আকাঙ্ক্ষা খেলে যায়: যদি পাশের সিটে কোনো মায়াবতী এসে বসত! এ যেন সব যুবকেরই এক চাপা স্বপ্ন। কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। এমন গভীর রাত, তাও আবার ডুমুরিয়ার নির্জন এই ইউনিয়ন স্ট্যান্ড থেকে কোনো অপরূপা নারীর উঠে বসা—এ এক অলীক কল্পনার মতো। বাস্তবতা আর সেই নীরব চাওয়ার অমিলটা মেনে নিয়ে সিফাত এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানালার বাইরে চেয়ে থাকে, যেন অন্ধকারের মাঝে হারিয়ে যেতে চায়।
বাস ধীরে ধীরে চলতে শুরু করল। সরু রাস্তার প্রতিটি পাথর, প্রতিটি গাছ যেন সিফাতের হৃদয়ের কোনো গভীর জায়গায় আঘাত করে তাকে দোলা দিচ্ছিল। রাতের নিস্তব্ধতাকে চিরে ভেসে আসছিল কেবল বাসের ইঞ্জিনের একঘেয়ে গর্জন, আর পথের মাঝে মাঝে ঝলক দিয়ে ওঠা লাল বাতির ক্ষীণ আলোকরেখা। অন্ধকার যেন তাকে ঘিরে ধরেছিল, আর তার মাথায় চিন্তার ঝড়—ইন্টারভিউ, ভবিষ্যৎ, জীবনের অজানা দিগন্ত।
হঠাৎ বাসটি থামল। সিফাতের দৃষ্টি দ্রুত বাসের দরজার দিকে চলে গেল। তার হৃদয় এক অদ্ভুত প্রতীক্ষায় কেঁপে উঠল। ঠিক সেই মুহূর্তে, দরজা দিয়ে একটি মেয়ে বাসে উঠল। মেয়েটি এমন এক আবহ নিয়ে হাজির হলো, যেন রাতের নিস্তব্ধতাও থমকে দাঁড়াল। মেয়েটি এসে সিফাতের পাশের সিটে বসতেই, তার বুকের ভেতর হৃদস্পন্দন যেন দ্বিগুণ হয়ে গেল। এক মুহূর্তের জন্য সিফাত ভাবল, সে কি স্বপ্ন দেখছে?মেয়েটির রূপে এক অমোঘ আকর্ষণ। মুখে কোনো মেকআপের ছাপ নেই, তবু প্রকৃতির তুলিতে আঁকা যেন নিখুঁত এক শৈল্পিক প্রতিচ্ছবি। থুতনির সূক্ষ্ম খাঁজ আর ঢেউ খেলানো চুলগুলো তাকে যেন আরও রহস্যময় করে তুলছিল। তার ত্বকের উজ্জ্বলতা আর গভীর চোখের দৃষ্টি সিফাতের মনে এক স্রোত বইয়ে দিল, যেন সে কোনো অজানা জগতে হারিয়ে যাচ্ছে। এক পলক মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকতে গিয়ে সিফাত হারিয়ে গেল নিজের ভেতর। দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে জানালার দিকে তাকাল, কিন্তু মনে এক অদ্ভুত আবেশ। অবাক করার মতো, মেয়েটির দৃষ্টি তার দিকেই ছিল। তার চোখে চোখ রেখে মেয়েটি এক মুহূর্তের জন্যও দৃষ্টি সরায়নি। সিফাতের বুকের ভেতর হঠাৎ গর্বের একটা ঢেউ এল—এতক্ষণ সে হয়তো কোনো সুন্দর মুহূর্তেই ছিল, যেখানে সে নিজেকে সত্যিই সুদর্শন মনে করতে পারছিল। কিন্তু মনের সে সাহসেও মেয়েটির দিকে দ্বিতীয়বার তাকানোর সাহস হলো না তার। মেয়েটির শরীর থেকে এক মিষ্টি, স্নিগ্ধ সৌরভ ভেসে আসছিল। মনে প্রশ্ন জাগল—সে কি কিছু বলবে? নাকি চুপচাপ থাকবে? অদ্ভুতভাবে মনে হলো, পুরো পরিবেশটি যেন ঠিক এই মূহূর্তের জন্যই অপেক্ষা করছিল।
বাস মফস্বলের সরু রাস্তায় অন্ধকার চিরে ছুটে চলছিল। চারপাশটা এতটাই ঘন কালো, যেন দৃষ্টির শেষ সীমানা কোনো এক অজানা শূন্যতায় মিলিয়ে গেছে। কুয়াশার আস্তরণে ঢাকা রাস্তায় বাসের হেডলাইটের আলোর রেখা আর সাদাকালো জেব্রা দাগ এক রহস্যময় চিত্রকল্প তৈরি করছিল। এই নিস্তব্ধ পরিবেশে শুধু বাসের ইঞ্জিনের মৃদু গর্জন আর চাকার ঘর্ষণের শব্দই জীবন থাকার প্রমাণ দিচ্ছিল।
হঠাৎ এক অদ্ভুত কড়কড়ে শব্দের সাথে বাসটি ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল। সামনের দিকে যাত্রীরা চিৎকার করে উঠল। কিছুক্ষণ নীরবতার পর ড্রাইভার জানাল, বাসের সামনের চাকা ফেটে গেছে। অন্ধকারে কাজ করতে গিয়ে চাকা ঠিক করতে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লাগবে। যাত্রীরা বিরক্তিতে বকবক করতে শুরু করল, কেউ কেউ নেমে গিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করল। সিফাত জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখল, রাস্তার ধারে কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। তাদের অবয়ব কুয়াশার ভেতরে অস্পষ্ট দেখাচ্ছিল, কিন্তু তাদের অদ্ভুত একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা মনোযোগ কেড়ে নিল। তাদের চোখে কোনো আবেগের ছাপ ছিল না, শুধু নিস্তব্ধ দৃষ্টি, যা অন্ধকারের থেকেও ভারী বলে মনে হচ্ছিল। পাশের মেয়েটি নিশ্চুপ। তার মুখে যেন কোনো ভাবনার ইঙ্গিত ছিল না। এসব বিরক্তিকর বা রহস্যময় ঘটনার প্রতি তার যেন বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। তার নিস্তরঙ্গ চেহারার সাথে সিফাতের উথাল-পাথাল হৃদয়ের বৈপরীত্য যেন পরিবেশটাকে আরও কৌতূহলময় করে তুলছিল।
প্রায় এক ঘণ্টা পর চাকা মেরামত হলো। বাস আবার চলতে শুরু করল, এবার রাস্তার ধারে গা ছমছম করা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে। কিছু দূর যেতেই বাস থেমে গেল বিশাল যানজটে। সামনে একটি ট্রাক উল্টে পড়ে আছে, মালামাল রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। চালকরা রাস্তাটি পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে হাঁটাহাঁটি শুরু করল, কিন্তু আশপাশের অন্ধকার এতটাই গা ছমছমে যে কেউ বেশি দূর যেতে সাহস করল না।
যানজট পার হতে বেশ সময় লেগে গেল। বাস আবার চলতে শুরু করল। এবার হঠাৎ বাসের ভেতরে এক অদ্ভুত আওয়াজ শোনা গেল। পেছনের দিকে এক যাত্রী চিৎকার করে উঠল, তার টাকা-পয়সা উধাও। সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। যাত্রীরা নিজেদের ব্যাগ চেক করতে লাগল। বাসের ভেতরে চাপা উত্তেজনা।
রাত আরও গভীর হতে থাকল। ড্রাইভার ঘোষণা দিল সামনে একটি রেস্তোরাঁয় বিরতি দেওয়া হবে। জায়গাটি ছিল অদ্ভুত—চারপাশে ঘন অন্ধকার আর বাতাসে অস্বাভাবিক সুনসান নীরবতা। রেস্তোরাঁয় নামতেই সিফাত খেয়াল করল, পাশের মেয়েটি খাবার নিতে গেল না। এক কোণে চুপচাপ বসে থাকল, তার চোখে কোনো উদ্বেগের ছাপ নেই। মেয়েটির এই নির্বিকার অবস্থান যেন পরিবেশটাকে আরও রহস্যময় করে তুলছিল।
খাবার শেষে বাস আবার চলতে শুরু করল। রাস্তার ধারে পুরোনো গাছগুলোকে আরো বেশি ভৌতিক মনে হচ্ছিল। হঠাৎ বাস থেমে গেল। সামনের রাস্তা কিছু লোক মশাল নিয়ে আটকে রেখেছে। ডাকাত হবে কি না, তা বোঝার আগেই বাসের চালক জানালাগুলো বন্ধ করে ফেলল। বাইরে তাকিয়ে সিফাত দেখতে পেল, মশাল হাতে কিছু মানুষ ধীরে ধীরে বাসের দিকে এগিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের মুখগুলো অস্পষ্ট। যেন ছায়ামূর্তির মতো। ড্রাইভার ভীত কণ্ঠে চিৎকার করল, “সবার জানালা বন্ধ রাখুন! চুপচাপ বসে থাকুন!” তবে সেই ছায়ামূর্তির মতো মানুষগুলো বাসের কাছে কোনো ক্ষতি করল না। তারা একসঙ্গে এমনভাবে তাকিয়ে ছিল, যেন বাসের ভেতরে কাউকে খুঁজছে। যাত্রীরা তাদের দেখে আতঙ্কে গুটিয়ে বসে রইল। পাশে বসা মেয়েটি জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। তার চোখে যেন অদ্ভুত এক শান্তি।
ঢাকার কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই বাসের পেছন থেকে এক বৃদ্ধের আর্তচিৎকার শোনা গেল। যাত্রীরা ছুটে গিয়ে দেখল, বৃদ্ধ অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। তার মুখে তীব্র আতঙ্কের ছাপ, কিন্তু শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারল না। পুরো বাসের ভেতরে চাপা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল।
বাস ঢাকার উপকণ্ঠে পৌঁছালেও রাতের অদ্ভুত আবহ কাটছিল না। সিফাত জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিল। তার চোখে ক্লান্তি বা ঘুম নেই, কিন্তু মনের ভেতর বাসের রাতভর ঘটনাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল। সবকিছু যেন বিভ্রান্তিকর এবং অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। হঠাৎ বাস থেমে গেল। সামনেই দেখা গেল, একটি প্রাইভেট কার উল্টে পড়ে আছে। আশপাশে কোনো মানুষ নেই, শুধু রক্তের দাগ ছড়িয়ে আছে।
কয়েকজন যাত্রী বাস থেকে নেমে পরিস্থিতি দেখতে গেল। চালকও তাড়াহুড়ো করে ইঞ্জিন বন্ধ করে নেমে গেলেন। সিফাত বসে রইল, কিন্তু তার মনের অস্বস্তি আরও গভীর হতে লাগল। জানালার বাইরে তাকিয়ে সে দেখতে পেল, অন্ধকার রাস্তার ধারে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে মেয়েটিকে চিনতে না পারলেও কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারল, এটা সেই মেয়ে, যে পুরো রাত তার পাশে বসেছিল।সে মেয়েটির দিকে ভালো করে তাকানোর চেষ্টা করল। মেয়েটির চেহারা আগের মতোই শান্ত, কিন্তু এবার তার চোখ দুটো গভীর অন্ধকারের মতো দেখাল। মেয়েটি ধীরে ধীরে রাস্তার ওপারে হেঁটে গিয়ে ঝোপের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেল। ঠিক সেই মুহূর্তে বাসের ভেতরের বাতিগুলো নিভে গেল।
সিফাতের মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। সে অনুভব করল, বাসের ভেতরটা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। যাত্রীরা ঝাপসা হয়ে যেতে লাগল, আর চারপাশে কেবল ধোঁয়ার আস্তরণ দেখা গেল হঠাৎ, তার কানে একটি ঠান্ডা নারীকণ্ঠ ভেসে এল, “তুমি কি জানো, তুমি কোথায় যাচ্ছ?” সিফাত চমকে উঠল। কণ্ঠটা তার পাশের মেয়েটির।সে তাকিয়ে দেখল, মেয়েটির চেহারা বদলে গেছে। তার চোখে ছিল গভীর শূন্যতা। মেয়েটি ঠান্ডা স্বরে বলল, “এই রাত, এই বাস—সবকিছু তোমার কল্পনা। তুমি কি সত্যিই মনে কর, তুমি এখান থেকে পালাতে পারবে?”
সিফাত কাঁপা গলায় বলল, “আপনি! আপনি আবার কীভাবে এলেন?”
মেয়েটি ঠান্ডা হাসি দিয়ে বলল, “এই বাস, এই যাত্রা, সবকিছু তোমার মনের এক স্তরে আটকে আছে। তুমি যতই পালানোর চেষ্টা করো, এই চক্র ভাঙতে পারবে না। তোমার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি ভুল—সবকিছুর উত্তর এখানেই লুকিয়ে আছে। যদি সাহস করে সত্যের মুখোমুখি হতে পারো, তবেই মুক্তি পাবে।”
সিফাত আতঙ্কে বলল, “কিন্তু আমি তো ঢাকায় যাচ্ছি! এতো অস্বাভাবিক কিছু নয়। আপনি কে? কেন এভাবে কথা বলছেন?”
মেয়েটি আবারো সেই শীতল হাসি দিয়ে বলল, “তোমার যাত্রা শুধু গন্তব্যে পৌঁছানোর নয়, এটা তোমার জীবনের ভুলগুলোর মুখোমুখি হওয়ার সময়। যদি তুমি নিজের ভুল স্বীকার না করো, তুমি এই চক্রে চিরতরে আটকে যাবে।”
সিফাতের শরীর হিম হয়ে গেল। সে জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখল, সেখানে একটি ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। সে চমকে গেল—ছায়ামূর্তিটি হুবহু তার মতো দেখতে!
“এটা কী?” সিফাত চিৎকার করে উঠল।
মেয়েটি শান্ত কণ্ঠে বলল, “এটা তোমার মনের ছায়া। তোমার ভুল, তোমার ভয়—সবকিছুর প্রতিচ্ছবি। যদি সাহস করে সত্য মেনে নিতে পারো, ছায়াটি মিলিয়ে যাবে। যদি না পারো, তুমি চিরতরে এখানে আটকে থাকবে।”
সিফাত ঘেমে গেল। সে গভীর শ্বাস নিয়ে চোখ বন্ধ করল। তার মনে ভেসে উঠল জীবনের প্রতিটি ভুল, প্রতিটি ব্যর্থতা, সেই মুহূর্তগুলো যেখানে সে পালিয়ে গেছে। সে মনে মনে বলল, “আমি পালাব না। আমি আমার ভুল মেনে নেব।”
চোখ খুলে সিফাত দেখল, সে ডুমুরিয়ার বাসস্ট্যান্ডে বসে আছে। আশপাশে সবকিছু স্বাভাবিক। রাত বারোটা বাজে। তার ব্যাগটি তার পাশে রাখা। বাসের অপেক্ষায় কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।
কিন্তু সিফাতের মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—তাহলে কি পুরো রাতটাই তার কল্পনা ছিল? নাকি সে সত্যিই অন্য কোনো বাস্তবতা থেকে ফিরে এসেছে?
দূরে বাসের ইঞ্জিনের শব্দ শোনা গেল। কিন্তু এবার সিফাত আর বাসে ওঠার সাহস করল না।
===========================================
(সমাপ্ত)