আজ সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ। আমি প্রাইভেটে যাবো প্রস্তুতি নিচ্ছি। এমন সময় আমার বন্ধু আমার বাসায় আসে এবং আমাকে ডাক দেয়। আমি তার কাছে চাই এবং অনুমান করতে পারি কিছু একটা হয়েছে। কারণ কিছু হলেই সে আমার বাসায় এসে আমায় ডাকে। আর সে অনেক বুদ্ধিমানও। অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করেছে সে। একদিন আমাদের স্কুলে গেট বন্ধ করে দেয়। তাই আমরা কিভাবে বের হবো তা চিন্তা করছিলাম কিন্তু সে একটা পরিকল্পনা বের করে এবং আমাদেরকে খুব সহজেই সেই খান থেকে বের করে আনে। আচ্ছা যাই হোক, ওই সব কথা বাদ দিই। আমার ওই বন্ধুর নাম হল আলয়। সে আমাকে বলে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসতে প্রাইভেটে যাবে বলে এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে এটা বলে সে। আমিও কিছু না বলে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে তার সাথে প্রাইভেটে যাই।
স্যার প্রাইভেট পড়ায় একটা তিন তালা বাসায়। স্যার সেই বাসায় ভাড়া থাকে। স্যার প্রতিদিন আমাদের পড়িয়ে তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। স্যার এখনো আসেননি। তাই আমরা ছাদে চলে যাই এবং গল্প করতে থাকি। আমি এ পর্যায়ে জিজ্ঞাসা করি কি জন্য ডেকেছিলে? কোন সমস্যা হয়েছে নাকি?
সে উত্তর দেয় আমি ভাবছি স্যারের জন্মদিনে একটা সবাই মিলে সারপ্রাইজ দিব। এজন্য স্যারের প্রিয় কালার, ফ্লেভার, এবং জন্মদিনে তারিখসহ ইত্যাদি তথ্য স্যারকে জিজ্ঞাসা করব।
আমিও তার পরিকল্পনায় সাই দেই। এবং স্যারকে বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে থাকি। সকল প্রশ্নেরই উত্তর জানা শেষ। এবার আমরা পরিকল্পনা করি কিভাবে স্যারের জন্মদিনটা উদযাপন করা যায় এবং এই বিষয়টা আমাদের প্রাইভেটের সব ছেলেদের জানাই। পরিকল্পনা শেষ হলে টাকার অনুমান টাও সকলকে বলে দিই। সকলে অনেক উত্তেজিত ছিল এই দিনটার জন্য। আমাদের প্রাইভেটে মেয়েরাও ছিল। তাদেরকে এ কথাটা জানানো হয়নি। আমরা ভাবি, তাদেরকে যদি না বলি তাহলে স্যারকে তারা বলে দিবে আমরা এটা করছি। তাই একদিন আমরা তাদের ডেকে তাদের এ বিষয়ে বিষয়টা জানাই। তারা আমাদের পরিকল্পনা বলতে বলে এবং আমরা আমাদের পরিকল্পনাটা তাদের জানাই। তারা তাদের পরিকল্পনা আগামীকাল বলবে বলে নিচে নেমে যায় এবং স্যারের কক্ষে ঢুকে যায়। পরদিন আমরা আগে চলে যাই এবং গিয়ে দেখি তারা আমাদের জন্য বসে আছে। তাই প্রাইভেট এর আগে যতটুকু সময় ছিল ততটুকু সময় আমরা আলোচনা করি এবং তাদের পরিকল্পনা জানি। তারা বলে স্যারের জন্মদিনে দিন মানে এক জানুয়ারি তাদের মধ্যে অনেকে থাকতে পারবেনা। তাই আমরা তাদের রাজি করানো চেষ্টা করি এবং অনেকক্ষণ পর তারা রাজি হয়। পরদিন টাকার হিসাব দেখানোর কথা। কিন্তু তারা পরদিন বলে জন্মদিনে দিন শুধু গিফট দেওয়া হবে এবং এর আগে ্যাগ ডে উদযাপন করা হবে। তাই আমরা এই কথাটিতে রাজি হয়ে যাই এবং পরদিন এর পরিকল্পনা করে টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে কিছু ছেলে বলে, পরীক্ষার আগে নাকি তারা এতে থাকতে পারবে না এবং আমিও থাকতে পারবো না। কারণ এবারের বছর কারোরই বই ভালোভাবে পড়া হয়নি। তাই ছেলেদের জনসংখ্যা অনেক কমে যায় এবং মেয়েরা এটা মানতে না পেরে বলে জনপ্রতি যত টাকা ছিল ততই থাকবে। কিন্তু ছেলেরা ছিল এর বিপরীত। ছেলেরা মেয়েদের এ ব্যাপারে খুব ভালোভাবে রাজি করায় এবং রেকডের পরিকল্পনা শেষ হয়।
এর মধ্যে আলো একটা প্রতিযোগিতা জিতে একটা ডাইরি পেয়েছিল। এসব পরিকল্পনা করতে করতে সেই ডাইরিটা শেষ হয়ে যায়।
রেক ডের আর মাত্র কিছুদিন বাকি। হঠাৎ এক শনিবারে স্যার আমাদের না জানিয়ে ঢাকা চলে যায়। আমি গিয়ে শুনি প্রাইভেট বন্ধ। কেউ জানতো না সে কথা। একজন ভাড়াটিয়া এসে সে কথা বলে। তাই এই দিন টাকা কোন দিন দিবে তা নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু এই দিনেও ভিন্ন মত দেখা যায়। এবং একপর্যায়ে ছেলেরা এটা করবে না বলে ঠিক করে এবং মেয়েরাও তা মেনে নেয়। আলয় বলে তাহলে স্যারের জন্মদিন উদযাপন করা যাক এক তারিখে।