আকাশের বয়স ছত্রিশ বছর, জীবনটা শুধু এত বড় করে লাভ কি, একটা দীর্ঘশ্বাসের শব্দ বেড়িয়ে আসে আকাশের মুখ থেকে।
উপরের অর্ডার আছে, কয়েকজনকে অ্যারেস্ট করার জন্য, কি করবে না করবে বুঝেও নিজেকে সঁপে দিয়েছিল আইনের হাতে। অন্তত চাকরিটা তো থাকবে! ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যেয়ে লাভটা কি, অন্যরাই পরিস্থিতি সামাল দিবে। সারাদিন ডিউটি আর ডিউটি। তার নিজের আবার বিয়ে বলে কথা, এদিকেও তো অনেক কাজ করার আছে। কিন্তু এতো দেরিতে কেন সে বিয়ে করছে! বাবা মারা যাওয়ার পর একযুগ কেটে গেছে। বাবার আদর্শ তাকে কখনও নাড়া দেয়নি তা তো নয়। কিন্তু কি হলো প্রিয়দর্শিনী কে দেখার আগে তার বিয়ে নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিল না। শুনে অবাক হচ্ছেন, চলুন জেনে নিই কে সেই প্রিয়দর্শিনী? কে
আবার মেঘলা তারাম্মুম।
"বাবা এখন তো অন্তত বিয়ে করা লাগে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিস, আমি আর কতদিন আছি বল, তোর বাবার মৃত্যুর পর তোর দাদা বাড়িতে তোকে তিল তিল করে মানুষ করেছি, কখনও আমি কিছুই চাইনি তোর কাছে", বলে অন্যদিকে মুখ ফেরালো আকাশের মা। "আমার একজন বান্ধবী আছে, তো ওনার মেয়ের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছি, তুই আর না করিস্ না বাবা।"
হইছে, আর বলা লাগবে না। মায়ের আবদার রাখতে সে মেঘলাকে একদিন দেখতে গিয়েছিল, মেয়েই তো আর তো কিছু না, কি এমন মেয়ে যাকে বিয়ে করার জন্য তার মা আবদার করছে?
বিয়ে হয়নি এখনও, তবে স্বপ্ন দেখা তো অন্য কথা। বাবাই স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিল – দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে। মা বলেছিল ধীরে ধীরে তার বড় হওয়ার গল্প।
যে কাজ গৌরবের, সে কাজে অনীহা করা উচিত নয়। কিন্তু মার্কেট করতে গিয়েই ঘটল সেই অঘটন। সিভিল ড্রেসে তাকে সাধারণ চাকরিজীবী হিসেবে ধরে নেয়া যায় হয়তো। কিন্তু হল কি, মানববন্ধনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এ ছেলেটি। সেদিন বিকেলে আকাশটা মেঘলা ছিল, মৃতদের পরিজন পরে জানতে পারে তাদের হতাহত ও নিহত হওয়ার খবর।