১.
আসার আগে ভাবি নি এতোটা ভালোলাগায় ভাসাবে আজকের দীর্ঘশ্বাস মুক্তি দেওয়ার প্লানটি। প্লান-মাফিক গন্তব্যে ইন্টার করলাম। নিজের মতো হাঁটতে শুরু করলাম। সাথে প্রকৃতিপ্রেমী এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এক ওয়ান্ডারফুল পারসন। মূলত এদিকটায় এসেছিলাম অন্য একটি কাজে। আর ওই ভালোলাগায় ভাসার কাজটা ছিলো প্রাসঙ্গিক হিসেবে। অথচ অবশেষে প্রাসঙ্গিকটাই মূল এবং স্মৃতির দেয়ালে লেপ্টে থাকার মতো কিছুর রূপ নিলো।
২.
দীর্ঘ এরিয়াজুড়ে সবুজের সমাবেশ, আকাশচুম্বী হরেকরকম গাছগাছালির মিলনমেলা, চমৎকারভাবে হাঁটার মতো ফুটপাত, পানির দৃষ্টিনন্দন লেক— তাও ইট-পাথরের শহরে; ভাবা যায়! ইন্টার করার পর প্রথমাংশে এগুলোই দিল ছুঁয়ে গেছে। অতঃপর এক টার্নিং পয়েন্ট ক্রস করার পর একদিকে দুনিয়ার সবচে’ ভয়াবহ ফিতনার আবাসস্থল; অপরদিকে আমাদের জন্য ফিতনাহীন — যদিও আমাদের বিপরীতদের জন্য ফিতনার— আবাসস্থল। আমরা দ্বিতীয়টিকেই আমাদের জন্য নিরাপদ হিসেবে বেছে নিলাম, প্রশান্তির মেনে নিলাম; এবং পেলামও।
হাঁটছি মনের সুখে। কখনো বিড়-বিড় করে কন্ঠে সুর তুলছি। হাওয়ায়-হাওয়ায় উড়ছি অজানা কোথাও। বলতে বাধ্য হচ্ছি— মা শা আল্লাহ! আলহামদুলিল্লহ! সুবহানাল্লাহ! একা নয়, যৌথ কন্ঠে। পাশে থাকা ওই মানুষটির কন্ঠে এবং আমার পাপী কন্ঠে। তিনি ফাঁক দিয়ে বন্ধুত্বসূলভ কৃতজ্ঞচিত্তে আমার শুকরিয়াও জ্ঞাপন করে নিয়েছেন এভাবে—‘ তুমি আজ না নিয়ে আসলে এত্তো চমৎকার মূহুর্ত স্মৃতির মালায় গাঁথতে পারতাম না’। আমি আনন্দিত হলাম। তৃপ্তি অনুভূত হলো।
৩.
আজকের চাঁদটাও ভীষণ মায়াময়। হৃদয়ের হাহাকার যেনো কেড়ে নিতে চায় সে। এমনিতেই চাঁদকে নিয়ে আমার কত্তো আবেগ। উপরন্তু আজকের মতো সিচুয়েশনে সে তার মায়া ঢেলে দিচ্ছে। আহা, কি চমৎকার বিষয়! যদিও জানা নেই সাথে থাকা প্রকৃতিপ্রেমী খিয়াল করেছেন কি-না বিষয়টি।
চাঁদের আলো গায়ে মেখে হাঁটছি এথা-ওথা। ভাসছি ভালোলাগার গহীন জলাশয়ে। যেনো যে জলাশয় নাম না জানা শত ফুলে সজ্জিত। কতো কথা বলছি— এলোপাতাড়ি। আবেগে কিংবা বিবেকে। দেখছি মাঝেসাঝে অদ্ভুত কিছু। যেমন— ‘আল্লাহ সি‘স এভরিথিং’ বাক্যটি। যে বাক্যটি ভাবার মতো এবং প্লেস অনুযায়ী পারফেক্ট।
৪.
অতঃপর ইশার সালাত তৃপ্তি নিয়ে আদায় করে, চায়ে আয়েশি চুমুক দিয়ে, আধ্যাত্মিক রাজধানীর নিয়ন বাতির আলো গায়ে মাখতে-মাখতে, শীতল হাওয়ায় দিল জুড়াতে-জুড়াতে ফিরলাম আধ্যাত্মিকতার রাজাদের শুয়ে থাকা মুবারাক প্লেসের পার্শ্ববর্তী শত স্মৃতিস্নাত বিল্ডিংয়ে।
.
এসব স্মৃতি হারিয়ে না যাক। ভালো থাকুক— এমন সব স্মৃতির সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটা অদ্ভুত মানব। যে মানগুলোর মধ্য থেকে কাউকে নিয়ে লিখার সাহস করেছে কলম, আর কাউকে নিয়ে এ যাবৎ করতে পারে নি; জানিও না আর পারবে কি না।